ঠাকুরগাঁও শহর জুড়ে নেই তেমন কোনো বিনোদন কেন্দ্র। শিশুদের জন্যেও গড়ে উঠেনি কোন খেলার পার্ক। এতে করে জেলা পরিষদের শিশুপার্ক বানানোর ঘোষণার পর থেকেই উচ্ছ্বাসিত ছিলো শহরবাসী। তবে ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও আলোর মুখ দেখেনি পার্কটি।
জানা যায়, শিশুদের বিনোদনের জন্যে ২০১০-১১ অর্থ বছরে শহরের টাঙ্গন নদীর ধারে একটি শিশুপার্ক নির্মাণের কাজ শুরু করে জেলাপরিষদ। সেসময় ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে মাটি ভরাট, প্রাচীর নির্মাণ, প্রবেশ গেট ও টিকিট কাউন্টার নির্মাণ করা হয়। কিন্তু এরপর অজানা কারনেই থেমে যায় সেই পার্ক নির্মাণের কাজ।
সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘ ১০ বছরেও পার্কটিতে রাইডার বা খেলার সরঞ্জাম স্থাপন করা হয়নি। পার্কের ভিতরটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে আছে। পাশের নির্মাণাধীন একটি ব্রিজের কিছু সরঞ্জাম পার্কের একপ্রান্তে রাখা।
ঠাকুরগাঁও শহরে শিশুদের জন্যে কোন প্রকার বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় শহরের বাসিন্দারা এখনও স্বপ্ন দেখে এই পার্কটি নিয়ে।
পার্কের পাশেই সদ্য নির্মিত টাঙ্গন সেতুতে সন্তান নিয়ে ঘুরতে এসেছিল কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, বাচ্চাদের সবসময় বাসায় বন্দী করে রাখাতো ঠিক না। একটু বাহিরে ঘুরতে নিয়ে এসেছি। খুবই দুঃখজনক বিষয় যে, আমাদের শহরে কোনো প্রকার শিশু বিনোদন কেন্দ্র নেই। তাদের খেলার জন্যে নির্দিষ্ট কোনো মাঠও নেই। শিশু পার্কটি হলে একটু ভালো হয়।
প্রতিদিন বিকেলে শহরের জেলা স্কুল বড় মাঠে গেলেই অনুমান করা যায় শহরের চিত্র। মাঠের অর্ধেকে খেলা চলছে। বাকি অর্ধেকে শহরবাসীর ভীড়, সাথে তাদের শিশু সন্তান। বিনোদন কেন্দ্রের অভাবে এই খোলা মাঠে একটু মুক্ত বাতাস নিতেই ছুটে আসেন তারা । তবে সেখানেও মুক্ত বাতাস নেই। রয়েছে মানুষের ভীড়।
সমাজকর্মী সূর্বন বলেন, ২০১০ সালে যখন জানতে পারি ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদ একটি শিশুপার্ক করছে। তখন এটা দেখে বেশ ভালো লেগেছিল। আমাদের শহরে শিশুদের বিনোদনের জন্যে একটি পার্ক প্রয়োজন। কিন্তু এই ১০ বছরেও ওটা আর সম্পন্ন হলো না। যদি সম্ভব হয়, দ্রুতই এই শিশুপার্কটির কাজ শেষ করে শিশুদের জন্যে উন্মুক্ত করা উচিত। না হলে নতুন প্রজন্মের স্বাভাবিক বিকাশ নিয়ে শঙ্কায় থাকতে হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জাবেদ আলী বলেন, “শিশুদের বিনোদনের মধ্যে প্রধান হলো খেলার মাঠ। খোলা জায়গায় সহপাঠী এবং বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে খেলাধুলা করা। শিশুদের যদি ঘরে আবদ্ধ রেখে শুধু টিভি, অনলাইন বা কম্পিউটার বিনোদনের মধ্যে রাখা হয় তাহলে সে বিচ্ছিন্ন জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে ৷”
ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সাদেক কুরাইশী জানান, জেলা পরিষদের পক্ষে অর্থায়ন সম্ভব না হওয়ায় ব্যক্তি উদ্যাগে শিশু পার্ক করার জন্য উক্ত জমিটি লিজ দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই ব্যক্তি উদ্যাগে শিশু পার্কের কাজ শুরু হবে।