স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন জুঁই!
logo
ঢাকা, বুধবার, ১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন জুঁই!

জেলা প্রতিনিধি | দৈনিক বিবর্তন
ডিসেম্বর ৪, ২০২০ ৬:২৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!

জুঁই আক্তার ছোটবেলা থেকেই ছিলেন শান্তশিষ্ট একটা মেয়ে। পরিবারের লক্ষী মেয়েটি স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন। মেয়েকে নিয়ে তাই জুঁইয়ের বাবা-মা অনেকটা বিপাকে ছিলেন। কলেজে যাওয়ার আসার সময়ও তাকে এলাকার বখাটেরা উত্ত্যেক্ত করতো। এরই মাঝে সাইফুল্লাহ নামে এক ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ট ছিলেন জুঁই। বিষয়টি তিনি জুঁইয়ের পরিবার জানলেও কোন কাজ হয়নি। এক পর্যায়ে প্রেমের ফাঁদে পড়ে যান জুঁই। ভুলিয়ে ভালিয়ে, ফুসলিয়ে নানা প্রলোভনে সাইফুল্লাহ জুঁইয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এটাই তার জীবনে কাল হল। প্রেমের পরিণতি হয়েছে মৃত্যুর মাধ্যমে। মেয়েকে হারিয়ে জুঁইয়ের পরিবারের সদস্যদের শোক এখনও কাটেনি।

জুঁইয়ের মা আসমা আক্তার বলেন, আমার মেয়ে অনেক ভদ্র ছিল। এলাকার বখাটেদের অত্যাচারে অতিষ্ট ছিলাম আমরা। এরই মাঝে কি থেকে কি হয়ে গেল। মেয়ের মৃত্যুর পর তার আত্মহত্যার প্ররোচনায় মামলা করেছিলাম। ওই মামলার আসামিরা জামিনে এসে আমাদের হুমকি-ধমকি দিয়েছেন। এনিয়ে তিনি থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছি।
জানা গেছে, প্রথমে যৌন হয়রানি ও পরে প্রেমের ফাঁদে পড়ে নির্যাতনের শিকার হন কলেজছাত্রী জুঁই। অপমান নির্যাতন সইতে না পেরে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন কেন্দুয়া সরকারি কলেজছাত্রী জুঁই। ৩ মাস আগে এনিয়ে মামলা হলেও আসামিরা রয়েছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। ওই মামলায় প্রতারক পুলিশ সদস্য সাইফুল্লাহ তারেকসহ অন্য আসামিরা জামিনে বেরিয়ে গেছেন। জামিনে এসে এখন মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন বলে জুঁইয়ের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ। এনিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরিও করেছেন। এ অবস্থায় অনেকটা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন জুঁইয়ের পরিবারের সদস্যরা। যদিও ঘটনার পর পুলিশ সদস্য সাইফুল্লাহকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তবে ওই ঘটনার ৩ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। এ অবস্থায় প্ররোচনাকারীদের শাস্তি নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন জুঁইয়ের পরিবার।

জানা যায়, নেত্রকোনার কেন্দুয়ার গড়াডোবা ইউনিয়নের গাড়াদিয়াকান্দা গ্রামের রতন আহমদের কলেজপড়ুয়া মেয়ে জুঁই আক্তারকে স্কুলে পড়াশোনার সময় থেকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল একই ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের আবুল কালামের ছেলে সাইফুল্লাহ তারেক। এক পর্যায়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে জুঁইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন সাইফুল্লাহ। তবে পুলিশে চাকরির পর থেকে তার চেহারা পাল্টে যায়। বিয়ের জন্য চাপ দেয়ায় জুঁইকে তিনি মারধর ও নির্যাতন করেন। প্রতারণা ও নির্যাতন সইতে না পেরে ১৯ আগস্ট আত্মহত্যা করেন জুঁই। পরে মা আসমা আক্তার বাদী হয়ে পুলিশ সদস্য সাইফুল্লাহ তারেকসহ ৫ জনের নামে ২৮ আগস্ট কেন্দুয়া থানায় মামলা করেন।

কেন্দুয়া থানার ওসি (তদন্ত) হাবিবুল্লাহ খান জানান, মামলার খুঁটিনাটি বিষয়ে তদন্ত চলছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষায় আছি আমরা। রিপোর্ট পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

দৈনিক বিবর্তন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।