‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’— শহিদ নূর হোসেন দিবস আজ
logo
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩রা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’— শহিদ নূর হোসেন দিবস আজ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | দৈনিক বিবর্তন.কম
নভেম্বর ১০, ২০২০ ৭:১৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

ঢাকা: নূর হোসেন। ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে হাজারও প্রতিবাদী মানুষের সঙ্গে জীবন্ত পোস্টার হয়ে রাজপথে নেমে এসেছিলেন। বুকে-পিঠে উৎকীর্ণ ছিল জ্বলন্ত স্লোগান ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’। অগ্নিঝরা সে স্লোগান দ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছিল মানুষের মনে। একইসঙ্গে জিঘাংসার দাবানল ছড়িয়ে দিয়েছিল স্বৈরাচারি সরকারের মাঝেও।

স্বৈরাচার পতনের দাবিতে তাই যখন মানুষের আন্দোলন বেগবান, গণতন্ত্রকামী সে আন্দোলন দমন করতে রক্তাক্ত পথ বেছে নেয় স্বৈরাচারি সরকার। তাদের লেলিয়ে দেওয়া বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালালে গণতন্ত্রের স্লোগান লেখা বুক-পিঠ ঝাঁঝরা করে দেয় নূর হোসেনের বুক। সেই থেকে শহিদ নূর হোসেন একটি নাম, একটি ইতিহাস। সেই থেকে আজকের এই ১০ নভেম্বর শহিদ নূর হোসেন দিবস।

গণতন্ত্রের দাবিতে উত্তাল সেই আশির দশকে তখন রাষ্ট্রক্ষমতায় সেনাশাসক লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে তিনি ক্ষমতায়। তাকে হঠানোর সেই আন্দোলনে শরিক হয়েই শহিদ হতে হয়েছিল নূর হোসেনকে। সেদিনের মিছিলে চালানো গুলিতে আরও শহিদ হন যুবলীগ নেতা নুরুল হুদা বাবুল ও কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের ক্ষেতমজুর নেতা আমিনুল হুদা টিটো।

এই আন্দোলনের জোয়ারে নব্বইয়ের শেষ দিকে ভেসে যায় এরশাদ স্বৈরাচারের তক্ততাউস। শহিদ নূর হোসেনের রক্তদানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন তীব্রতর হয়। অব্যাহত লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের পতন ঘটে।

নূর হোসেন পেশায় ছিলেন মোটরশ্রমিক। গণতন্ত্রের আাকাঙ্ক্ষায় যখন আপামর জনতা উদ্বেল, তাদের সঙ্গে মিশে গিয়েছিলেন তিনি। স্বৈরাচার পতনে তার সেই রক্তদান বৃথা যায়নি বলেই আজও তাকে জাতি স্মরণ করে শ্রদ্ধাভরে। জিরো পয়েন্ট, যেখানে সেদিন নূর হোসেন নিহত হয়েছিলেন, সেই জায়গার নাম রাখা হয় নূর হোসেন চত্বর।

এই দিনটিকে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করে থাকে। একইভাবে আজ মঙ্গলবারও সকালে নূর হোসেন চত্বরে পুষ্পাঞ্জলিতে সিক্ত হবেন শহিদ নূর হোসেন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও সকাল সাড়ে ৯টায় নূর হোসেন চত্বরে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হবে এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া আওয়ামী লীগের সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোও দিবসটিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ইতিহাসে স্মরণীয় সাহসী পুরুষ শহিদ নূর হোসেন দিবস যথাযথ মর্যাদায় স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে পালনের জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

দৈনিক বিবর্তন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।