২০০৭ সালে পাকিস্তান বধের পর থেকে বিশ্বকাপ মঞ্চে বড় দলকে হারানো যেন আয়ারল্যান্ডের কাছে রীতিমত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আইসিসির বড় আসরে আইরিশ নিজেদেরকে জায়ান্ট কিলার হিসেবে প্রমাণ করেছে। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে বিশ্ব ক্রিকেটকে বার্তা দিয়েছিল পল স্টার্লিংরা। এবারের আসরে ও কি বড় দলকে চমকে দিতে পারবে আইরিশরা?
২০০৯ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম বারের মতো অংশগ্রহণ করে আয়ারল্যান্ড। ২০০৭ সালের পাকিস্তানকে হারিয়ে আলোচনায় আসে উইলিয়াম পোটারফিল্ডরা। ১৯৯৩ সালে আইসিসির সহযোগি সদস্য হিসেবে বিশ্ব ক্রিকেটে আইরিশদের পথচলা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২০০৯ সালে বাংলাদেশকে হারিয়ে নিজেদের শক্তির জানান দেয় ইউরোপের উত্তর-পশ্চিমের এই দেশটি।
যেভাবে ক্রিকেটের পথচলা শুরু ..
১৮৩০ সালের দিকে ক্রিকেট ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে ইউরোপের উত্তর-পশ্চিমের রাষ্ট্রটিতে। পরবর্তী ৩০ বছরে প্রতিষ্ঠিত অনেক ক্লাব আজও বিদ্যমান। প্রথম আইরিশ জাতীয় দল ১৮৫৫ সালে ডাবলিনে দ্য জেন্টলম্যান অফ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিল। ১৮৫০ -এর দশকে ইংরেজ চার্লস লরেন্স তার কোচিংয়ের মাধ্যমে আয়ারল্যান্ডে খেলাটি বিকাশের জন্য দায়ী ছিলেন।
আয়ারল্যান্ড ১৯৯৪ সালে প্রথমবারের মতো আইসিসি ট্রফিতে খেলতে পারে এবং টুর্নামেন্টে তারা সপ্তম স্থানে থাকে। তিন বছর পর তারা প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে উন্নীত হয় কিন্তু স্কটল্যান্ডের সাথে প্লে-অফের তৃতীয় স্থান হারায়। ২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ডের ওয়ানডে অভিষেক হয়। তার পর থেকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি আইরিশদের। একের পর এক সফলতা বিশ্বকাপের মতো বড় মঞ্চে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, পাকিস্তান, ইংল্যান্ডদের হারিয়ে নিজেদের ক্রিকেটকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরে।
ক্রিকেটে পথচলাটা এতোটা মসৃণ ছিল না আইরিশদের। ১৯৯৪ সালের পর থেকে ক্রিকেটের বিশ্ব মঞ্চে নিজেদের তুলে ধরতে সময় লেগেছে অনেক দিন। রায়ান জন্সটন, এড জয়েস ,উইলিয়াম পোটারফিল্ড, নেইল ওব্রেইন , কেভিন ওব্রেইন এর মতো তারকাদের হাত ধরে ২০০৭ বিশ্বকাপে ক্যারবিয় দ্বীপে ইতিহাস রচনা করেছিল ইউরোপের এই দেশটি।
বিশ্বকাপে যাদের উপর নজর থাকবে..
২০১৬ সালের সর্ব শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম পর্ব খেলে বিদায় নিয়েছিল আইরিশরা। কিন্তু এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অভিজ্ঞ ও তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে দারুণ এক দল গঠন করেছে আয়ারল্যান্ড। এবারের বিশ্বকাপে প্রথম পর্বে শ্রীলঙ্কা , নেদারল্যান্ড ও নামিবিয়ার বিপক্ষে খেলবে পল স্টারলিংরা।
ওপেনিং ব্যাটার অ্যান্ড্রু বালবর্নিকে অধিনায়ক করে দল ঘোষণা করেছে আইরিশরা। কাউন্টি ক্রিকেট দাপিয়ে বেড়ানো অনেক ক্রিকেটার রয়েছে আইরিশ দলে যাদের উপর নির্ভর করবে অনেক কিছু। সকল দেশে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলে বেড়ানো পল স্টার্লিংয়ের উপর থাকবে বাড়তি আশা। সেই সঙ্গে ২০১১ বিশ্বকাপে দ্রুততম শতক হাঁকানোর রেকর্ডের মালিক কেভিন ও ব্রায়ানের উপর থাকবে ব্যাটিংয়ের গুরু দায়িত্ব।
জর্জ ডকরেল, অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইন এই দুই অভিজ্ঞ স্পিনারের সঙ্গে অলরাউন্ডার সিমি সিং নিয়ে দারুণ এক স্পিন বোলিং অ্যাটাক তৈরি করেছে আইরিশরা। কেভিন ওব্রেইন, পল স্টারলিং সহ অল রাউন্ডার জর্জ ডকরেলের উপরই থাকবে আইরিশদের বিশ্বকাপে গুরু দায়িত্ব।
আয়ারল্যান্ডের বিশ্বকাপ দল-
অ্যান্ড্রু বালবর্নি, মার্ক অ্যাডায়ার, কার্টিস ক্যাম্ফার, গ্যারেথ ডেলানি, জর্জ ডকরেল, জোশ লিটল, অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইন, কেভিন ও’ব্রায়েন, নিল রক, সিমি সিং, পল স্টার্লিং, হ্যারি টেক্টর, লরকান টাকার, বেন হোয়াইট, ক্রেগ ইয়াং।
গ্রুপ পর্বে আয়ারল্যান্ডের সূচি
ম্যাচ | বাংলাদেশ সময় | তারিখ | ভেন্যু |
আয়ারল্যান্ড-নেদারল্যান্ডস | বিকেল ৪টায় | ১৮ অক্টোবর | আবুধাবি |
আয়ারল্যান্ড- শ্রীলঙ্কা | রাত ৮ টায় | ২০ অক্টোবর | আবুধাবি |
আয়ারল্যান্ড- নামিবিয়া | বিকেল ৪ টায় | ২২ অক্টোবর | শারজা |