বাগেরহাটে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টি ও বাতাস কমে গেলেও উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যদিয়ে কেটেছে উপকূলবাসীর রাত। শক্তি হারিয়ে সিত্রাং এখন স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে খুলনা বিভাগের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
বয়স আশি বছর পার হয়েছে তরু রাণি পাল। বিমর্ষ চিত্তে বসে আছেন শরণখোলা আরকেডিএস মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় সাইক্লোন শেল্টারে। কথায় কথায় বলেন, ২০০৭ সালে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরে ঘরবাড়ি সব হারিয়েছি। শুনলাম আবারও সিডরের মতো বড় ঝড় আসছে। জানিনা ভাগ্যে কী আছে।
একই বয়সী সুফিয়া বেগম। সোমবার দুপুরের দিকে প্রবল বৃষ্টি ও বাতাস শুরু হলে দ্রুত আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসেন। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন একটি চাদর ও পোষা শালিক পাখি। ভয়ে আছেন সকালে ফিরে মাথা গোঁজার ঠাঁই ঘরটুকু দেখতে পাবেন কী না।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আতঙ্কে বাগেরহাটের কয়েকটি উপজেলার মানুষ সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থান নিয়েছে রাতে। সোমবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার মোংলা, শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ আশ্রয়ন কেন্দ্রে অবস্থান নেন।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহনের কাজ। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় মোংলা বন্দরে জারি করা হয়েছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সতর্কতা ‘অ্যালার্ট-৩’। তবে ভোর নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় তা নামিয়ে ফেলা হয়েছে।
এদিকে বৃষ্টি ও বাতাসের বেগ বৃদ্ধি পাওয়ায় নিরাপত্তা নিশ্চিতে মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলার রায়েন্দা ফেরি বন্ধ করে দেয় সড়ক বিভাগ।
টানা বর্ষণে বাগেরহাট জেলার পাঁচ শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রাতে কী হবে তাই নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় ছিল এসব এলাকার মানুষ। অপরদিকে বিকেল থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে পুরো বাগেরহাট জেলা।
ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার অনেক মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। ঝড়ে বাগেরহাটে খুব বেশি ক্ষতি হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ বেলাল রিজভী
ই-মেইলঃ news.dailybibartan@gmail.com
ফোনঃ +8801611572441