কার্বোহাইড্রেট বলতে সাধারণভাবে ভাত, রুটি, আলুজাতীয় খাবারের কথাই মনে আসে। ওজন নিয়ন্ত্রণে ‘লো কার্ব ফুড’ বা কার্বোহাইড্রেট বাদ দেওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে বেশ কিছুদিন থেকে। এতে আসলে ‘শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট-জাতীয় খাবার কী’, সেটা নিয়েই জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
আমাদের খাদ্যতালিকায় বিভিন্ন ধরনের শর্করাজাতীয় খাবার থাকে।
চিনিজাতীয় খাবার
কোমল পানীয়, এনার্জি ড্রিংকস, মিষ্টি, মিষ্টি বিস্কুট, চকলেট, কেক, প্যাকেটজাত মিষ্টি খাদ্য ইত্যাদি।
মল্টজ, অর্থাৎ শর্করা (স্টার্চ) জাতীয় খাদ্য
ভাত, রুটি, পাউরুটি, চাল, আলু, ভুট্টাযুক্ত বিভিন্ন ধরনের খাদ্য, পাস্তা, নুডলস, পিৎজা, বার্গার ইত্যাদি রিফাইন বা প্রস্তুতকৃত খাদ্য।
সেলুলোজ বা আঁশবহুল খাদ্য
লাল চাল, লাল গম, মিষ্টি আলু, খোসাযুক্ত নতুন আলু, কচুর মোটা সাদা অংশ, ওটস, কাউন, বার্লি ইত্যাদি। এ ছাড়া শাকসবজি, ফলমূল যেগুলোয় আঁশ থাকে, অর্থাৎ চিবিয়ে খেলে ছোবড়া পাওয়া যায়; তাতেও ফাইবার তথা সেলুলোজ থাকে।শর্করা আমাদের শরীরে শক্তির উৎস। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ধরনের শর্করা না খেলে শরীর তার অভাবে প্রোটিন বা চর্বিকে শক্তির উৎস হিসেবে বেছে নেয়। এটি পরে শরীরে স্যাচুরেটেড চর্বির পরিমাণ বাড়িয়ে রক্তে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি করে এবং হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
আপাতদৃষ্টিতে এজাতীয় খাবার বাদ দিয়ে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও মৃগী রোগীরা কিছুটা সুফল পান। তবে টাইপ-১ ডায়াবেটিস থাকলে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে এ ডায়েট স্বাস্থ্যকর নয়। এর চেয়ে কম ক্যালরিযুক্ত খাবার ও আঁশযুক্ত শর্করা গ্রহণ বুদ্ধিমানের কাজ।
১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা দেয় ৪ ক্যালরি, ১ গ্রাম প্রোটিন দেয় ৪ ক্যালরি ও ১ গ্রাম চর্বি দেয় ৯ ক্যালরি। তাই শর্করা বাদ দিয়ে প্রোটিন আর চর্বিজাতীয় খাবার খেলেও শরীরে ক্যালরির পরিমাণ বাড়তে পারে। সে ক্যালরি শারীরিক পরিশ্রমে খরচ না হলে ওজন বাড়বে।
সুতরাং কার্বোহাইড্রেট বাদ না দিয়ে বরং পরিমাণমতো লাল গম, লাল চাল, নতুন খোসাযুক্ত আলু, কাউন, বার্লি, ওটসের মতো আঁশযুক্ত শর্করা, আঁশযুক্ত শাকসবজি, ফলমূল প্রতিদিন খাবার টেবিলে রাখুন। এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণে পানি পানের অভ্যাস করুন।
লেখক: পুষ্টিবিদ ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ বেলাল রিজভী
ই-মেইলঃ news.dailybibartan@gmail.com
ফোনঃ +8801611572441