খুলনার খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী গ্রামে নির্বিচারে গুলি করে তিনজনকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ জাকারিয়া, তার ভাই মিল্টন ও আরেক আসামি রাজুর ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শনিবার দুপুরে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক মো. এনামুল হক। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মো. শহিদুল ইসলাম পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
পরিদর্শক এনামুল হক জানান, গত ১৬ জুলাই নগরীর খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী এলাকায় তিনজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর শেখ জাকারিয়া, তার ভাই মিল্টন ও আরেক আসামি রাজু আত্মগোপন করে। শুক্রবার সকালে রাজধানীর মিরপুর এলাকার ১৮ তলা একটি ভবন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে খুলনা মহানগর ডিবি পুলিশ। তাদের হত্যাকাণ্ডের কারণ এবং কারা কারা জড়িত ছিল সেসব বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল। আদালত প্রত্যেককে ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিবি) বিএম নুরুজ্জামান জানান, পুলিশ সার্বক্ষণিক এসব আসামিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছিল। তবে বার বার অবস্থান পরিবর্তনের কারণে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। সর্বশেষ সোর্সের মাধ্যেমে ঢাকার ওই বাড়িতে দুইজনের অবস্থানের কথা জানা যায়। পুলিশ তাদের ঘিরে ফেললে শেষ মুহূর্তে আরও এক আসামি তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসে। ফলে পুলিশ একই সঙ্গে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
তিনি আরও বলেন, হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ২২ আসামির মধ্যে পুলিশ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে ছয়জন হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
জানা যায়, ১৬ জুলাই রাতে নগরীর মশিয়ারীতে প্রভাবশালী মিল্টন ও জাকারিয়াদের গুলিতে গ্রামের নজরুল ইসলাম, গোলাম রসুল ও সাইফুল ইসলাম নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হন আরও ১০ জন। পরে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী জাকারিয়ার আত্মীয় জিহাদ নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করে এবং তাদের বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া জাকারকে দল থেকে বহিষ্কার করে খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগ। ১৮ জুলাই নিহত মো. সাইফুল ইসলামের পিতা মো. শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে খানজাহান আলী থানায় মামলায় খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সহ-প্রচার সম্পাদক শেখ জাকারিয়া হোসেন জাকার, তার ভাই মহানগর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি শেখ জাফরিন, অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামি মিল্টনসহ ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ১৫-১৬ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
এই মামলার এজাহারভুক্ত ২২ জন আসামির মধ্যে এ পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।