কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা তীরবর্তী পরিবারগুলো পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৯৫ সেন্টিমিটার। যা স্বাভাবিকের থেকে ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণ করতে ৪৪টি গেট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন র্বোড।
জানা গেছে, ভারী বর্ষণের কারণে ভারত গজল ডোবা ব্যারেজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়। এতে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। তিস্তার পানিতে পাটগ্রামের বহুল আলোচিত বিলুপ্ত ছিটমহল আঙ্গোরপোতা-দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সির্ন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের চর, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার রাজপুর, খুনিয়াগাছ, গোকুন্ডা ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলের প্রায় তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া তিস্তার সঙ্গে ছোট নদ-নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। কিছু কিছু স্থানে দেখা দিয়েছে নদীভাঙন। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বালুর বস্তা দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা চলছে। নতুন করে ভাঙন আতঙ্কে অনেকে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিরাপদ দূরত্বে আশ্রয় নিচ্ছেন।
হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ ও আদিতমারীর পানিবন্দি মানুষরা জানান, বন্যার পানি নামতে না নামতেই চতুর্থবার আবার পানিতে বন্দি হয়ে পড়েছেন তারা। তাই দ্রুত তিস্তার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি করেন তারা।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে তিস্তা ও ছোট নদ-নদীতে পানি বেড়েছে। তবে তিস্তার পানি বিকেল থেকে কমে যেতে পারে।
এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ১০ ইউনিয়নের প্রায় দশ হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, চার দিন আগে ভেন্ডাবাড়ি চরের দুই নম্বর স্পার বাঁধটি দেড়’শ মিটার ভেঙে গেছে। এর ফলে প্রায় দুইশ পরিবারের ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধটি রক্ষা করা না গেলে কপাল পুড়বে এলাকার মানুষদের।
ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, হঠাৎ করে আবারও পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তা নদী বেষ্টিত এক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদৌলা জানান, উজানের ঢলে তিস্তায় পানি বেড়েছে। বন্যা কবলিত এলাকাগুলো পর্যবেক্ষণে রেখেছি আমরা। কয়েক দফায় পানি বৃদ্ধির ফলে যেসব বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছিল, সেগুলো মেরামত করা হচ্ছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ বেলাল রিজভী
ই-মেইলঃ news.dailybibartan@gmail.com
ফোনঃ +8801611572441