নোয়াখালীতে জাল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের মাধ্যমে বিদেশগামী সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে চাটখিল থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত মো. আব্দুল কাদের সৌরভ (৩০) চাটখিল পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের লামচর গ্রামের সর্দার বাড়ির মো. গোলাম মাওলার ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে নূর মোহাম্মদ বেগমগঞ্জের গাবুয়া এলাকায় কম্পিউটার দোকানে বিদেশ যাওয়ার উদ্দেশ্যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে গেলে তার বন্ধু মহরম আলীর সঙ্গে দেখা হয়। কথাবার্তার একপর্যায়ে আসামি সৌরভ নূর মোহাম্মদকে ৩ (তিন) দিনের ভেতরে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সংগ্রহ করে দিতে পারবে বলে জানায়। নূর মোহাম্মদ সরল বিশ্বাসে তার নিজের, ভাতিজা মো. ইলিয়াছ ও এলাকার মসজিদের ইমাম আনোয়ার হোসেনের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স বাবদ সৌরভকে নগদ ছয় হাজার আটশ টাকা দেন। ২/৩ দিন পরে উক্ত আসামি পুলিশ ক্লিয়ারেন্সের কপি সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পাঠায়। পরবর্তীতে নূর মোহাম্মদসহ তার ভাতিজা ও এলাকার ইমাম পুলিশ ক্লিয়ারেন্সটি ভিসা প্রসেসিংয়ের জন্য ট্রাভেলস এজেন্সিতে জমা দেয়।
ওই পুলিশ ক্লিয়ারেন্সে বেগমগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে মো. মুজাহিদুল ইসলাম এবং পুলিশ সুপার নোয়াখালী হিসেবে রামকৃষ্ণ সরকার এর নাম, সিল ও স্বাক্ষর সম্বলিত ছিল। কিছুদিন পর গত ৩ অক্টোবর ট্রাভেলস্ এজেন্সি থেকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্সগুলো নকল বলে জানায়।
ভুক্তভোগী নূর মোহাস্মদ উক্ত পুলিশ ক্লিয়ারেন্সগুলো ডিএসবি অফিস, নোয়াখালীতে নিয়ে যাচাই করতে গেলে বিষয়টি পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলামের নজরে আসে। পরে শুক্রবার (৬ অক্টোবর) রাতে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে চাটখিল থানা এলাকা থেকে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত বলেন, আসামি দীর্ঘদিন থেকে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের সহায়তায় ঢাকায় একটি ট্রাভেলস এজেন্সির মাধ্যমে বিভিন্ন থানা ও জেলার অফিসার ইনচার্জ, পুলিশ সুপার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তিত নাম ও সিল তৈরি করে জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরি করে আসছেন। প্রতারক চক্র নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরির কাজটি এতটাই নিঁখুতভাবে করে সহজে নকল চেনা যায় না।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, বিদেশ গমন কিংবা দেশের মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরির ক্ষেত্রে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয়। জাল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নিয়ে বিদেশে গেলে মহাবিপদে পড়ার আশঙ্কা থাকে। এমনকি পেশাদার বা চিহ্নিত অপরাধীরাও জাল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশে যেতে পারে। এ জন্য বিদেশ যাওয়ার আগে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সঠিক কি না তা যাচাই করে নিতে হবে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ বেলাল রিজভী
ই-মেইলঃ news.dailybibartan@gmail.com
ফোনঃ +8801611572441