ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের লড়াই চলছে। গত শনিবার ভোরের দিকে গাজার ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠী হামাস আচমকা ইসরায়েলে রকেট হামলা শুরু করে। রকেট হামলার পাশাপাশি হামাসের যোদ্ধারা জল-স্থল ও আকাশপথে ইসরায়েলে ঢুকে বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালায়। হামাসের হামলায় এখন পর্যন্ত ৯ শতাধিক ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সেখানকার সংবাদমাধ্যম। নিহতদের মধ্যে বহু সেনাসদস্য, নারী ও শিশু রয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও প্রায় ২৫০০ ইসরায়েলি।

এমন অবস্থায় যুদ্ধবিধ্বস্ত ইসরায়েলে আটকা পড়নে বলিউড অভিনেত্রী নুসরাত ভারুচা। প্রায় ৩৬ ঘণ্টা সেখানে কাটানোর পর রোববার সকালে ভারত সরকারের তৎপরতায় দেশে ফেরেন তিনি। এসময় তার চোখেমুখে আতঙ্ক স্পষ্ট ছিল। দেশে ফিরে বিমানবন্দরে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন এই অভিনেত্রী। এর বেশি কিছু বলার মতো অবস্থায় তখন ছিলেন না তিনি।

গত ৩ অক্টোবর হাইফা চলচ্চিত্র উৎসবে নিজের ছবি ‘অকেলি’-এর জন্য ইসরায়েলে গিয়েছিলেন নুসরত। সেখানে নুসরতের সঙ্গে ছিলেন তার সিনেমার দুই অভিনেতা। ইসরায়েলে পৌঁছানোর পর সেখানকার নানা ঐতিহাসিক জায়গা ঘুরে দেখেন তিনি। শুক্রবার রাতে সিনেমার কলাকুশলীদের সঙ্গে নৈশভোজও করেন। এরপর শনিবার সকালে অভিনেত্রীর ঘুম ভাঙে বোমার আওয়াজে।

দেশে ফেরার একদিন পর ইসরায়েলে কাটানো সেই সময়ের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে মুখ খুলেছেন নুসরাত। এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আগের দিন রাতেই আমরা সকলে যে আনন্দ করেছিলাম, শনিবার সকালে সব যেন ধুয়ে মুছে গেল। খালি ঘন ঘন বোম ও সাইরেনের আওয়াজ। অনেক পরে বুঝলাম যুদ্ধ লেগেছে। ভীষণ বিচলিত হয়ে পড়ি। আগে একটা আশ্রয় নেওয়া চেষ্টা করলাম। হোটেলের নীচে বেসমেন্ট অনেকক্ষণ অপেক্ষা করি। আসলে এমন একটা ঘটনার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।’

সুরক্ষিত ভাবে দেশে ফিরতে পেরে অভিনেত্রী কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন ভারত সরকারকে। সেইসঙ্গে এটাও বললেন, ‘ওই ৩৬ ঘণ্টা আমার সারা জীবন মনে থেকে যাবে। এটা আমার জীবনের এমন এক অভিজ্ঞতা যা কখনোই ভুলতে পারব না।’

এদিকে মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক কার্যালয় বলেছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে এই উপত্যকার প্রায় এক দশমাংশ অর্থাৎ ২ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছেন। ইসরায়েল সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করায় সেখানে পানি, বিদ্যুৎ ও খাবারের তীব্র ঘাটতি দেখা দিয়েছে।