বরগুনার তালতলীতে বিয়ের প্রলোভনে এক নারীকে ৩ বছর ধরে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও ভুক্তভোগির দেড় লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন মো. মিলন নামের এক যুবক। এ ব্যাপারে কারও কাছে বিচার চাইলে অভিযুক্ত মিলন তাকে গুম করার হুমকি দেয় বলে জানান ওই নারী। তবে বিচারের আশায় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের দ্বারে দ্বারে ঘুরলেও বিচার পাননি তিনি।
মঙ্গলবার (০৪ জানুয়ারী) বেলা ১০টায় তালতলী প্রেসক্লাবের সংবাদ সম্মেলনে এসে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগি নারী।
অভিযোগে জানা যায়, প্রায় ১৫ বছর আগে বনিবনা না হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয় ৩২ বছরের ওই নারীর। তিনি দুই সন্তানের জননী। ঢাকার একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ফিজিওথেরাপির কাজ করতেন। সেখানে কাজ করার সুবাদে পরিচয় হয় উপজেলার করমজাপাড়া এলাকার মৃত গোলাম মস্তফার ছেলে মো. মিলনের (৩০) সঙ্গে। পরে তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে গভীর প্রেমের সম্পর্ক। প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে ওই নারীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ঢাকায় একটি বাসা ভাড়া করে তার সঙ্গে ২০১৯ সালে থেকে ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রায় ৩ বছর যাবৎ সংসার ও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে মিলন। ঐ নারীর টাকায় মিলন ঢাকায় লেখাপড়া করেন বলেও জানান। পরে ভুক্তভোগি নারীর থেকে মিলন তার নিজ বাড়িতে নতুন ঘর তৈরি করে বিয়ের কথা বলে এককালীন দেড় লাখ টাকা নেয়। ঘর তৈরি করে মিলন ফের ঢাকা গিয়ে ঐ নারীর কাছে থাকেন। মিনারা (ছদ্মনাম) মিলনকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে মা ও বোন পরিচয়ে দুই মহিলাকে গ্রাম থেকে ঢাকা নিয়ে আসেন। পরে ঢাকার রামপুরা বাজারে লামিয়া ট্রাভেলস্ এর অফিসে মিলনের সাথে দেখা করতে গেলে ঐ দুই মহিলাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। পরে তারাও বিয়ের কথা বলে আমাকে সান্ত্বনা দেয়। এর পরে মিলন ডাক্তার দেখানোর কথা বলে চলে যায় ও আর কোনো যোগাযোগ করেনি। এর পরে মোবাইল ফোনে শুরু হয় মিলনের মানসিক নির্যাতন ও বিয়ের কথা বললেই শুরু হয় মিলনের নানা তালবাহানা। এ ঘটনায় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সামনে মিলনকে মুখোমুখি করা হলে তিনি বলেন আমাকে তিনি বিবাহ করিতে পারিবে না। আমার কাছ থেকে বিগত দিনে যে টাকা-পয়সা নিয়েছে তা অস্বীকার করেন এবং তারই বন্ধু মিজানুর রহমান সবুজ আমাকে ডেকে নিয়ে কিছু টাকা নিয়ে মিমাংসা হয়ে যেতে বলেন। আমি তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে বিভিন্ন ভাবে ভয় ভীতি ও জীবন নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। পরে অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও নির্যাতিতা ওই নারী বিচার পায়নি। এ ব্যাপারে বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে গত বছরের মে মাসের ৯ তারিখ একটি মামলা দায়ের করেন কিন্তু ঐ মামলায় আইনজীবি নিয়োগ করা হয় হাসিবুর রহমান। তারই সহযোগি মহরী মো. খোকনের বন্ধু মিলন ও বাড়ি একই গ্রামে। এজন্য ঐ আইনজীবিকে দিয়ে যে মামলা দায়ের করিয়াছে সেটায় তেমন কোনো ধারা উল্লেখ করেনি। এছাড়াও আমাকে যে মিলন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বছরের পর বছর স্ত্রী হিসেবে ব্যবহার করেছে সেটাও মামলায় তেমন উল্লেখ করেনি। এজন্য আদালত মামলাটি খারিজ করে দিছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মিলনের ফোনে কল দিলে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ভুক্তভোগির নারীর বিষয়ে জানতে চাইলে ফোনটি কেটে দেয়। এর পরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
বিষয়ে অ্যাডভোকেট হাসিবুর রহমান বলেন, ভুক্তোভোগির নারীর ঐ ঘটনা সম্পূর্ন সত্যি ছিলো। তবে আদালত মনে করছে মামলাটি মিথ্যা এজন্য হয়তোবা খারিজ করেছে। এর বেশি আদালতের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না। মামলাটির ধারা ও তার মহরী খোকনের বন্ধু মিলন হওয়াতে মামলা লেখায় তেমন কোনো ধারা উল্লেখ করা হয়নি এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে ফোন কেটে দেন।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, ঐ নারী থানায় আসছিলো। তখন তিনি বলছেন আদালতে মামলা হয়েছে। পরে মামলার কাগজপত্র নিয়ে তিনি আর আসেননি।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ বেলাল রিজভী
ই-মেইলঃ news.dailybibartan@gmail.com
ফোনঃ +8801611572441