বরগুনার তালতলী করোনা ভাইরাসের টিকাদান কর্মসুচির দায়িত্ব পালনের এক পর্যায় যুব রেডক্রিসেন্টের সদস্য স্বেচ্ছাসেবক ইমরানুল হক তুহিনের উপর পুলিশ সদস্য আবু সাইদ হামলা ও মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রবিবার(১৮জুলাই) দুপুরের দিকে তালতলী হাসপাতালে এ হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তালতলী উপজলার সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নিন্দা জানিয়ে পুলিশ সদস্যর বিচার দাবী করে।
জানা যায়, তালতলী ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে করোনার টিকা নিতে আসেন অসংখ্য মানুষ । এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় সামাজিক দুরত্ব ও সিরিয়াল ঠিক রাখার দায়িত্ব পুলিশ সদস্যরা ও যুব রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা যৌথভাবে দায়িত্ব পালনের এক পর্যায় টিকা নিতে আসা এক ব্যক্তি সিরিয়াল ঠিক রেখে টিকা রেজিস্ট্রেশন ও এনআইডি কার্ডের ফটোকপি করতে দোকানে যায়। দোকান থেকে সেই ব্যক্তি ফটোকপি নিয়ে ফের হাসপাতালে প্রবেশ করলে বাধা দেন পুলিশ সদস্য আবু সাইদ। এবিষয়ে যুব রেডক্রিসেন্টের সদস্য ইমরানুল হক তুহিন বলেন এই লোক সিরিয়াল ঠিক রেখে বাহিরে গেছিলো ফটোকপি করতে। তাকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেন। সাথে সাথে পুলিশ সদস্য আবু সাইদ চড়াও হয়ে তুহিনকে বলেন তুই বের হয়ে যা হাসপাতাল থেকে। এনিয়ে কথার কাটাকাটির এক পর্যায় পুলিশ সদস্য ইমরানুল হক তুহিনকে লাথি দিয়ে দেয়ালের সাথে ঠেকিয়ে ফেলেন ও মারধর করেন। এতে তুহিনের হাতের একটি আঙ্গুল ভেঙ্গে যায়। মুহূর্তে খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। পরে তুহিনকে উদ্ধার করে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এদিকে যুব রেডক্রিসেন্টের সদস্য ইমরানুল হক তুহিনের টিকা নিতে আসা মা হাসপাতালে আসেন এবং ছেলেকে মারধরের ঘটনা প্রত্যক্ষ করেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমে এ হামলার ঘটনায় বিচার চেয়ে তার সহকর্মীরা বিভিন্ন পোস্ট দেয় যা সাথে সাথে ভাইরাল হয়।
ইমরানুল হক তুহিন উপজেলা যুব রেডক্রিসেন্ট সদস্য ছাড়াও তালতলী বিডিক্লিনের উপজেলা সমন্বয়ক, সূর্যশিখা ব্লার্ড ডোনার্স ক্লাবের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
সূর্য শিখা সোশ্যাল অর্গানাইজেশনের সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশের এমন হামলা খুবই দুঃখজনক। হামলাকারী পুলিশ সদস্যর বিচার দাবি করছি।
উপজেলা যুব রেডক্রিসেন্টের দলনেতা জিয়া উদ্দিন মান্না বলেন, আমাদের সহকর্মী ওপর এমন হামলার প্রতিবাদ জানাই। পুলিশের হাতে এমন হামলা হলে আমার সেচ্ছায় কিভাবে সেবা দিবো। এই হামলার সাথে সেই পুলিশ সদস্যর বিচার দাবি করছি।
তালতলী ব্লাড ডোনার্স ক্লাবের সভাপতি মোঃ ইমরান তাহির বলেন,একজন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে সমাজকর্মী তুহিনের উপর তার মায়ের সমানে বসে এরকম হামলার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই হামলায় পর অন্তত তালতলীর আর কোন মা চাইবে না তার ছেলে মানবসেবা করুক। একই সাথে এই হামলার সুষ্ঠু বিচারের দাবী করছি।
এ বিষয় তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, পুলিশ সদস্য যদি এমন কোনো কাজ করেন তাহলে তার বিরুদ্ধে ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বরগুনা পুলিশ সুপার মুহম্মদ জাহাঙ্গীর মল্লিক বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ বেলাল রিজভী
ই-মেইলঃ news.dailybibartan@gmail.com
ফোনঃ +8801611572441