রাজধানীর নিউমার্কেটে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় বিভিন্ন সিসিটিভির ফুটেজ পুলিশের কাছে রয়েছে। এছাড়া সাংবাদিকদের কাছেও ফুটেজ রয়েছে। সেগুলো দেখে অপরাধীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ।
শুক্রবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে রাজারবাগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পুলিশপ্রধান এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি বাংলাদেশ পুলিশ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে পুলিশের বার্ষিক আজান, কেরাত ও রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
পুলিশপ্রধান জানান, অনেক ক্লুলেস ঘটনার রহস্য পুলিশ উন্মোচন করে। আর নিউমার্কেটের ঘটনা ঘটেছে জনসম্মুখে। সুতরাং এর সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে বেগ পেতে হবে না বলে মনে করেন তিনি।
সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের কাছে শুধু সিসিটিভি ফুটেজ নয়, প্রত্যেক সাংবাদিকের ক্যামেরায়ও ফুটেজ আছে। একটু ধৈর্য ধারণ করুন, পুলিশ তদন্ত করছে, নিশ্চয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বেনজীর আহমেদ বলেন, ‘এই সংঘর্ষে দুর্ঘটনা ঘটেছে, আইন লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এসব বিষয়ে পুলিশের যেসব আইনগত ব্যবস্থা সেগুলো আমরা অবশ্যই দেখবো।’
ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে পুলিশপ্রধান বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা সবারই পরিহার করা উচিত। এ ধরনের কাজ দেশ পরিপন্থী। দেশ ও দেশের বাইরে জাতি হিসেবে এ ধরনের ঘটনা যথাযথভাবে রেপুটেড করে না।’
এ সময় আইজিপি জানান, নিউমার্কেটের ঘটনায় যেসব সাংবাদিক হামলা ও অন্যায়ের শিকার হয়েছেন তাদের জন্য যা যা করার সবই করবে পুলিশ।
দুই দোকানের কর্মীর বিরোধের জেরে গত সোমবার রাতে সংঘর্ষে জড়ায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। সংঘর্ষ রাত আড়াইটা পর্যন্ত গড়ায়। এর জেরে পরদিন মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনভর দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হন। আহতদের মধ্যে নাহিদ ও মোরসালিন নামে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে আছেন আরও কয়েকজন।
কোরআনের আদর্শ অনুসরণ করা: আইজিপি
এদিকে অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে আইজিপি বলেন, পবিত্র কোরআন একটি সম্পূর্ণ জীবনব্যবস্থা। একজন ভালো মুসলমানের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কোরআনের আদর্শ অনুসরণ করা জরুরি।
পুলিশপ্রধান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, যে যেই ধর্মেরই হোক না কেন, ধর্ম প্রতিপালনের মাধ্যমে মানুষের নৈতিক মনোবল সুদৃঢ় হয়। কারণ সকল ধর্মেই ভালো কাজ করার উপদেশ দেওয়া হয়, অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।
বেনজীর আহমেদ বলেন, আমাদের বাহিনীর প্রত্যেক সদস্য, যারা যে ধর্মের আছেন তারা তাদের ধর্মের যে বিধানাবলি আছে, বিশেষ করে যারা মুসলমান আছেন তারা পবিত্র কোরআনে যে বিধানাবলি আছে, হাদিসে যে পরামর্শগুলো আছে তা তাদের প্রাত্যহিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিপালনের চেষ্টা করেন তাহলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।
তিনি বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর মধ্যে ধর্মীয় চর্চার ক্ষেত্রে আজান ও কেরাত প্রতিযোগিতার গুরুত্ব রয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন অতিরিক্ত আইজি মো. মাজহারুল ইসলাম। এ সময় অতিরিক্ত আইজিগণ, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা, বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য এবং মুসল্লি উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ বেলাল রিজভী
ই-মেইলঃ news.dailybibartan@gmail.com
ফোনঃ +8801611572441