নারীদের এক জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা পলিসিস্ট ওভারি সিনড্রোম (PCOS)। এটি প্রজননের প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। খুব স্বাভাবিকভাবেই পিসিওএস’র সমস্যা থাকলে পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দেয়। এই রোগ হলে পিরিয়ড অনিয়মিত হয়ে পড়ে।
কিন্তু জানেন কি, অনেকসময় নিয়মিত পিরিয়ড হলেও পিসিওএস সমস্যা হতে পারে? এমন সমস্যা হলে করণীয় কী? চলুন জেনে নিই-
পলিসিস্ট ওভারি সিনড্রোম কী?
প্রথমেই জানতে হবে পলিসিস্ট ওভারি সিনড্রোম কী? এটি এমন একটি শারীরিক সমস্যা যার ফলে নারীদের ডিম্বাশয়ে অস্বাভাবিক পরিমাণে অ্যান্ড্রোজেন তৈরি হয়। পলিসিস্ট শব্দটি দ্বারা আল্ট্রাসাউন্ডে ডিম্বাশয়ের উপস্থিতি বোঝায়। এই স্বাস্থ্য সমস্যায় ডিম্বাশয়ে ছোট ছোট অপরিণত ফলিকল তৈরি হয় যাকে পিসিওএস বলে। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ৮ থেকে ১৩ শতাংশ নারী এই রোগে আক্রান্ত।
কেন পলিটিস্ট ওভারি সিনড্রোম হয়?
হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: নারীদের শরীরে যখন অ্যান্ড্রোজেনের মাত্রা বেশি হয়ে যায়, তখন ডিম্বাশয়ের স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপে সমস্যা দেখা দেয়। এতে অনিয়মিত ডিম্বস্ফোটন বা অ্যানোভুলেশন হতে পারে।
জেনেটিক্স: পরিবারে মা, বোন কিংবা অন্য কোনো নারীর যদি এই সমস্যা থাকে তাহলে একই শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে আপনার শরীরেও। অর্থাৎ জেনেটিক কারণে পিসিওএস হতে পারে।
ইনসুলিন: শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা বেড়ে গেলে অ্যান্ট্রোজেনের উৎপাদন বেড়ে যায়। যা থেকে পিসিওএস হতে পারে।
নিয়মিত পিরিয়ড হলেও কি পিসিওএস হতে পারে?
বেশিরভাগ নারীদের ক্ষেত্রে পিসিওএস হলে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে ফার্টিলিটি অ্যান্ড স্টেরিলিটি জার্নালে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় জানা গেছে, প্রায় ৭৪ শতাংশ নারীর শরীরে পলিসিস্ট ওভারি সিনড্রোম থাকা সত্ত্বেও পিরিয়ডের কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি।
৩০ বছর বা তার বেশি বয়সী নারীদের শরীরে এই সমস্যা থাকা সত্ত্বেও তাদের নিয়মিত মাসিক চক্র চলতে থাকে।
কীভাবে পিসিওএস নিয়ন্ত্রণে আনবেন?
রোজকার জীবনযাপনে সহজ কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে পিসিওএস নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
জীবনধারা পরিবর্তন: পলিসিস্ট ওভারি সিনড্রোম নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুস্থ স্বাভাবিক জীবন জরুরি। রোজকার ডায়েটে রাখুন চর্বিহীন প্রোটিন, শাকসবজি, ফলমূল এবং স্বাস্থ্যকর খাবার। তাহলে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
ওষুধ: প্রথমেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। নিয়মিত ওষুধ খেলে সমস্যাটি নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল খেলে মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রিত থাকবে এবং অ্যান্ট্রোজেনের মাত্রা থাকবেন নিয়ন্ত্রণে।
নিয়মিত মনিটরিং: নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর চিকিৎসকের কাছে গিয়ে শরীর পরীক্ষা করান। হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখা উচিত। তাহলে দ্রুত রোগ ধরা পড়ে।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ বেলাল রিজভী
ই-মেইলঃ news.dailybibartan@gmail.com
ফোনঃ +8801611572441