রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের হোসেনডাঙ্গা গ্রামের বলাই বিশ্বাসের বাড়ির সামনে ৩০শে মে রাত ৯ টার সময় পাংশা পাইলট উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান মুকু (৪৭) দুর্বৃত্তের ছোড়া গুলিতে নিহত হয়। চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলায় পাংশা থানা পুলিশের শ্বাসরুদ্ধকর অভিজানে আগ্নেয়াস্ত্রসহ পাঁচ আসামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, বনগ্রাম এলাকার কলম শেখের ছেলে শফিকুল হাসান(১৬), আনন্দ সরকারের ছেলে আকাশ সরকার(১৯), ইন্দ্রজিৎ সরকারের ছেলে রাম প্রসাদ সরকার, অভিজিৎ সরকারের ছেলে বিজয় সরকার (১৮), অরবিন্দ সরকারের ছেলে বাদল সরকার (১৮)। গ্রেফতারের সময় আটককৃতদের হেফাজতে থাকা ১ টি দেশীয় একনলা বন্দুক ও দুই পিস তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
৫ই মে-২৩ শুক্রবার সকাল ১০ টায় রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে আগ্নেয়াস্ত্রসহ আসামীদেরকে গ্রেফতারের বিষয়ে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল করিম, সহকারী পুলিশ সুপার পাংশা সার্কেল সুমন কুমার সাহা, পাংশা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমানসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সাংবাদিকবৃন্দ প্রমুখ।
পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান জানান, গত ৩০শে এপ্রিল রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার কলিমহর ইউনিয়নের হোসেনডাঙ্গা বাজারের নিকটবর্তী বলাই বিশ্বাসের বাড়ির পাশে আনুমানিক রাত ৯ টার সময় শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান মুকু ছিনতাইকারীদের গুলিতে নিহত হন।
তিনি আরো বলেন, নিহত শিক্ষক ঘটনার দিন রাত ৯ টার দিকে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের হালখাতা শেষে মোটরসাইকেল যোগে বাড়ি উদ্দেশে রওয়ানা দিলে পথিমধ্যে বলাই বিশ্বাসের বাড়ির সামনে ভাংগা রাস্তায় মোটরসাইকেলের গতি রোধ করে ছিনতাইকারীরা। আগে থেকেই ওঁত পেতে থাকা আনুমানিক ৮/১০ জন ছিনতাকারী হালখাতায় উত্তোললিত নগদ অর্থ ছিনিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে তার গতি রোধ করে। তার নিকট টাকা না পেয়ে ছিনতাইকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আগ্নেয়াস্ত্রসহ দিয়ে তার মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। শিক্ষক মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলেই নিহত হন। গুলির শব্দে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। মাটিতে রক্তাক্ত অবস্থায় নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পাংশা থানা পুলিশকে অবগত করেন। সংবাদ পেয়ে পাংশা থানার রাত্রিকালীন টহল পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং অনুসন্ধান শুরু করে। এই হত্যা সংক্রান্তে নিহতের স্ত্রী শাহানারা বেগম পাংশা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হত্যা মামলা প্রাপ্ত হয়ে রাজবাড়ী জেলার পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান এর সার্বিক দিকনির্দেশনায় ও পাংশা সার্কেল সুমন কুমার সাহার তত্ত্বাবধানে পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান এবং এস আই দীপঙ্কর কুণ্ড বিভিন্ন জায়গায় শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান চালিয়ে আসামিদেরকে আটক করা হয়।
তিনি আরো জানান, আটকৃত ব্যক্তিরা সবাই উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এ হত্যায় জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার ও আলামত উদ্ধারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।