পাকা ঘরের স্বপ্ন পূরণ হলো কামালের
logo
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পাকা ঘরের স্বপ্ন পূরণ হলো কামালের

মোঃ মাহমুদুল হাসান, বরগুনা প্রতিনিধি
মার্চ ২৩, ২০২১ ৮:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

কামাল হোসেন (৪০) কখনও স্কুলে যাননি। বড় হয়ে অভাব অনাটনের ভেতর দিয়ে কাটছিল তার সংসার। কিন্তু কামালের একটি পাকা ঘরের স্বপ্ন ছিল। তবে বাবার পরিবারও কখনও সুখের মুখ দেখতে পারেনি। কামাল মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ঘরে বসে থাকতেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সেমি পাকা ঘর পেয়েছেন কামাল। এই স্বপ্ন পূরণ হওয়াতে তিনি বেশ খুশি।

জানা গেছে, এক সময় কামাল জীবিকার সন্ধানে দেশের বিভিন্ন প্রন্তে ছুটে বেড়াতেন। হঠাৎ ভারসাম্য হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেও টাকার অভাবে এখন চিকিৎসায় নিতে পারছেন না । এদিকে পরিবারের ৪ সদস্যসহ থাকতেন মাটির ঘরে। বর্ষায় ঘরের চালের ছিদ্র দিয়ে আসা বৃষ্টির পানিতে পরিবারের সদস্যদের কষ্ট হতো। বর্তমানে তার সংসারে একমাত্র উপার্জন সক্ষম ব্যক্তি ছেলে সজিব (২২)। তার উপরই সংসারের দায়িত্ব।

আরও জানা গেছে, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বরগুনার তালতলী উপজেলায় এক কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যায়ে ১০০ পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় দুই কক্ষবিশিষ্ট সেমি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে জমি, ঘর পেয়ে বেশ খুশি তারা। এসব ঘরের কাজের মান অনেক সুন্দর হয়েছে বলেও জানান ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

তবে ভিন্ন আশায় বুক বাধলেন মানসিক প্রতিবন্ধী কামাল। তার এটাই স্বপ্ন ছিল জীবনের শেষ বয়সে একটি পাকা ঘর তুলবেন। সংসারের অভাব-অনাটন ও শারীরিক সক্ষমতার কারণে পাকা ঘরের স্বপ্ন শেষ হয় কামালের। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর উপহারের তালিকায় তার নাম থাকবে এটা তিনি জানতেনই না। বাড়িতে ইট, বালু, সিমেন্ট আসতে দেখলে অবাক হয়ে যান তিনি। পরে কাজ শুরু হওয়ার পরে তাকে জানানো হয় আপনি প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে পাকা ঘর পেয়েছেন। তখন তিনি খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েন। স্বপ্ন পূরণ হলো তার। ঘরের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পরে বসবাস শুরু করেন তিনি। এ উপজেলায় এমন অনেকই আছেন ছোট ঝুপড়ি ছেড়ে পাকা ঘরের বসবাস করছেন এখন। ফলে বদলে গেছে সেই ঝুপড়ি ঘরে থাকা মানুষ গুলোর জীবনমানও।

সোমবার (২২মার্চ) সকালে উপজেলার কয়েকটি ঘর ঘুরে দেখা যায় অধিকাংশ পরিবারই বসবাস শুরু করেছেন। ঘরের কাজের মান অনেক ভালো হওয়াতে খুশি তারা।

কামালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তিনি ঘরের সামনেই বসে ছিলেন। এ সময় তিনি জানান- প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া পাকা ঘরে অনেক ভালো আছি আল্লাহ্ রহমতে। এভাবেই প্রতিটি পরিবার সন্তোষ প্রকাশ করেন।

কালামের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী আগে ভালোই ছিলেন। তিন বছর আগে তিনি মানসিক ভারসম্য হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু তার স্বপ্ন ছিল শেষ বয়সে একটি পাকা ঘর করে ভালোভাবে বসবাস করবেন। তার সেই আশা কখনও পূরণ হবে এটা কল্পনাও করিনি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাই সেই স্বপ্ন পূরণ করে দিয়েছেন।

উজেলার নিবার্হী অফিসারের নিয়োগ করা ঠিকাদার মো. ফয়সাল হোসেন নয়ন বলেন ‘প্রধানমন্ত্রী আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে কাজ শুরু করার প্রথম দিকে স্থানীয়ভাবে কিছুটা সমস্যা হয়। তবুও ঘরের গুণগত মান ঠিক রেখে প্রতিটি ঘর নিমার্ণ করা হয়েছে। অধিকাংশ ঘরই হস্তান্তর করা হয়েছে।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘরগুলো ভূমিহীন ও গৃহহীনদের একটি স্বপ্নের নীড়। তাদের এই স্বপ্নে নীড় বাস্তবায়নের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। শত প্রতিকূলতার মধ্যেদিয়েও ঘরগুলো নির্মাণে সফল হয়েছে। ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষ যাতে ঘরগুলো ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারে সেটা নিশ্চিত করা হবে।

দৈনিক বিবর্তন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।