বরগুনার তালতলীর ফকিরহাটের অন্যতম মৎস্য বন্দরে বরফ সংকটে ঘাটে শতাধিক ট্রলার নোঙ্গর করে আছে। ফলে এ বরফ সংকটে সমুদ্রে ইলিশ শিকারে যেতে পারছে না জেলেরা। ঘাটে বসে অলস সময় পার করছে শতাধিক মাছ ধরা ট্রলারের শ্রমিকরা। আইসমিল মালিকরা বলছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও ভোল্টেজ কম থাকার কারণে বরফ উৎপাদন বিগ্ন হচ্ছে। এদিকে চড়া দামেও বিক্রি হচ্ছে বরফ।
২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ৪ নভেম্বর রাত ১২ টার পর থেকে ইলিশ শিকারের জন্য গভীর সাগরে যেতে শুরু করে বরগুনার উপকূলের প্রায় ৩৬ হাজার জেলে। তবে বরগুনার তালতলীতে নিষেধাজ্ঞার ২ দিন পার হলেও সাগরে যেতে পারছে না এখানকার প্রায় শতাধিক জেলেরা। সরকারী নিষেধাজ্ঞার সময় ইলিশ শিকার না করে দীর্ঘ ২২ দিন অলস সময় কাটিয়েছিলো জেলেরা। এই সময়কালে মাত্র ২০ কেজি চাল দিয়ে চলছিলো তাদের সংসার। পল্লী গুলোতে জেলেদের পরিবারগুলো এই ২২ দিন অভাব-অনাটনের মধ্যে দিন কেটেছিলো।
বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) বিকাল ৬টা দিকে ফকিরহাটে বরগুনার অন্যতম মৎস্য বন্দরে বরফ সংকটে ঘাটে শতাধিক ট্রলার নোঙ্গর করা রয়েছে। এর কারণ হিসেবে দেখছেন ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও ভোল্টেজ কম থাকায় বরফ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বরফ সংকটে সমুদ্রে যেতে পারছে না জেলেরা। ঘাটে বসে অলস সময় পার করছে শতাধিক মাছ ধরা ট্রলারগুলো। বিদ্যুৎতের ভোল্টেজ কম ও বিভ্রাটের কারণে বরফ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান এখানের ইলিশের আড়ত ও সমুদ্রগামী মাছধরা ট্রলারের জেলে এবং বরফকল মালিকরা। চড়া দামেও বিক্রি হচ্ছে বরফ। প্রতিটি ক্যান বিক্রি হচ্ছে ৪ থেকে ৫শত টাকা। এমনেতেই সবসময় প্রতিটি ক্যান বিক্রি হয় মাত্র ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। চড়া দামেও বরফ না পেয়ে হতাশ জেলেরা।
স্থানীয় জেলে কালাম তালুকদার, শামিম,হাসেম আলীসহ একাধিক জেলের সাথে কথা বলে জানা যায়,কোনরকম জাল নিয়ে সাগরে যাওয়ার জন্য ট্রলার প্রস্তুত রেখেছি। কিন্তু বরফ নিতে না পারায় ২দিনেও সাগরে যাওয়া যাচ্ছে না। ঘাটে অসংখ্য মাছধরা ট্রলার বসে আছে। এই দুইদিনেও বরফ পাইনি তবে আজ যদি না পাই তাহলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে আমাদের। এমনেতেই ২২ দিন অনেক কষ্ট কওে পরিবার নিয়ে ছিলাম। এখন বরফ না থাকায় ইলিশের ভরা মৌসুমেও সাগওে যেতে পারছিনা। বরফ মিল মালিকরা বলছে বিদ্যুৎ যায় আর আসে তাই ঠিকমত বরফ তৈরি করতে পারছিনা এজন্যই আপনাদের বরফ দিতে পারছিনা। তবে এখন চড়া দামে বরফ বিক্রি করছে মিল মালিকরা। তবে আইস মিল মালিকরা বলছে আজ রাতে বা আগামীকাল বরফ কিছুটা হলেও দেওয়া যাবে।
ফকিরহাটের হাওলাদার আইসপ্লানের মালিক আল আমিন বলেন,বিদ্যুৎ যায় কয়বার তা বলা যাবে না, বরং থাকে কতটুকুন সময় সেটি বলা যায়। বিশেষ করে বরফ তৈরির সঠিক সময়েই বিদ্যুৎ বিভ্রাট বেশি হয়। ভোল্টেজ অনেক কম।এর কারণে বরফ উৎপাদন বিগ্ন হচ্ছে। তাই বরফ দিতে পারছি না। চড়া দামের বিষয়ে বলেন এই মৌসুমে রফবের চাহিদা থাকে তাই একটু বেশি দামে বিক্রী করি। তিনি আরও বলেন এখানে মাত্র দুইট আইসমিল রয়েছে । এই ফকিরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে বরফের চাহিদার তুলনায় এখানে সে পরিমান বরফ উৎপাদন করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে কলাপাড়া জোনের ডিজিএম শহিদুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কোনো সুযোগ নেই। তালতলীতে আগে ভোল্টেজ কম ছিলো। তার জন্য আমরা বোল্টেজ বেশি পাওয়ার জন্য তিনটি ভোল্টেজ মেশিন বসিয়েছি। এটা বরফমিল মালিকদের মন ঘড়া কথা। তবুও আমি আগামীকাল ঘটনাস্থালে যাবো বিষয়টি কি ভোল্টেজ কম কেন।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ বেলাল রিজভী
ই-মেইলঃ news.dailybibartan@gmail.com
ফোনঃ +8801611572441