শেয়ালকে ‘গৃহপালিত’ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন সাইবেরিয়ার বিজ্ঞানীরা
logo
ঢাকা, শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেয়ালকে ‘গৃহপালিত’ করার চেষ্টা চালাচ্ছেন সাইবেরিয়ার বিজ্ঞানীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | দৈনিক বিবর্তন
অক্টোবর ২১, ২০২০ ৮:০৬ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বন্য জীব-জন্তু কিভাবে গৃহপালিত হয়ে ওঠে তা জানতে কয়েক যুগ ধরে গবেষণা করে যাচ্ছেন সাইবেরিয়ার বিজ্ঞানীরা। সে উদ্দেশ্যেই তারা শেয়ালের ব্রিডিং (প্রজনন) ঘটানোর মধ্য দিয়ে প্রাণীটিকে গৃহপালিত করে তোলার চেষ্টা করছেন।

১৯৬৯ সালে সোভিয়েত জিনতত্ত্ববিদ দিমিত্রি বেলায়েভ ও লুদমিলা ত্রুত রাশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম নগরী নভোসিবির্স্কের কাছে আকাদেমগোরোদভ সাইন্টিফিক রিসার্চ সেন্টারে পরীক্ষামূলক এই কর্মসূচির সূচনা করেন। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শেয়ালকে গৃহপালিতকরণের মধ্য দিয়ে কিভাবে ‘ডোমেস্টিকেশন সিন্ড্রোম’ কাজ করে এবং কিভাবে প্রাণীটি মানুষের বিশ্বস্ত গৃহপালিত কুকুরে পরিণত হয়ে থাকতে পারে তার অনুসন্ধান করা।

প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ১০০০টি শেয়াল রয়েছে এবং সেখানে ১৫ জন বিজ্ঞানী কর্মরত রয়েছেন। তাদের একজন উরি গার্বেক বলেন, “আমরা দেখতে চাইছি কোন জিন এক্ষেত্রে বদলে যায় এবং কিভাবে তা ঘটে থাকে।’

নভোসিবির্সকে বসবাসকারী বায়োলজিস্ট তাতিয়ানা আব্রামোভা দম্পতি ইতিমধ্যে তাদের বাড়িতে একটি শেয়াল পুষতে শুরু করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় একটি শেয়াল পুষতে চেয়েছিলাম। আমার পোষা শেয়ালটি বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করে সেকথা বলা যায়, কিন্তু সে খুব একটা বাধ্য নয়। শেয়ালটি লাফ দিয়ে টেবিলের ওপর উঠে যায়, কখনো ফ্রিজের ভেতর ঢুকে যায়, এটা-ওটা চুরি করে এবং লুকিয়ে রাখে।’

তার স্বামী আব্রামোভ জানিয়েছেন, শেয়ালটি এরই মধ্যে বেশ কয়েকবার তাদের মুরগী চুরির চেষ্টাও করেছে। তিনি বলেন, ‘লেস লাগানো অবস্থায় মালিকের সাথে হাঁটতে শেয়ালটি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, তবে বারবার মুরগির খাঁচার দিকে টানতে থাকে। এ থেকে বোঝা যায়, তার বন্য স্বভাব এখনো সম্পূর্ণ দূর হয়নি।’

বেলায়েভ ১৯৮৫ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর পর ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙ্গন ও পরবর্তী সময়ের অর্থনৈতিক মন্দার ফলে অর্থাভাবে প্রতিষ্ঠানটি কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে শেয়ালের জিনগত অধ্যয়নের জন্য ‘ডিএনএ সিকোয়েন্সিং’ পদ্ধতি উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে সক্ষম হয়। তথ্যসূত্র: আলজাজিরা

দৈনিক বিবর্তন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।