রাস্তা ছাড়াই পনেরো বছর দাঁড়িয়ে আছে চার সেতু
logo
ঢাকা, শনিবার, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাস্তা ছাড়াই পনেরো বছর দাঁড়িয়ে আছে চার সেতু

জেলা প্রতিনিধি | দৈনিক বিবর্তন
নভেম্বর ২৪, ২০২০ ৯:১৪ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বিশাল বিলের মাঝখানে চার চারটি সেতু। দাঁড়িয়ে আছে পনেরো বছর ধরে। সেতুগুলোর নেই কোনও সংযোগ সড়ক। তাই এগুলো কোন কাজেই আসছে না এলাকার মানুষের।

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের নড়াইল ইউনিয়নের শিবধরা বিল ও ধলিকুড়ি বিলের মাঝখান বরাবর ২০০৪-২০০৫ অর্থবছরে ইউএসএআইডি ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের অর্থায়নে নির্মান করা হয় এসব সেতু। এগুলোর একটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৬৩ ফুট। বাকি তিনটির প্রতিটিই ৪৫ ফুট করে।

স্থানীয়রা জানায়, নড়াইল ইউনিয়নের পূর্ব নড়াইল থেকে কাওয়ালিজান গ্রাম ও আশপাশের ৫/৬ গ্রামের মানুষের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করতে সেতুগুলো তৈরি করা হয়। কিন্তু গেলো পনেরো বছর ধরে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে এগুলো।

ওয়ার্ল্ড ভিশন সেতুগুলো নির্মাণ করলেও এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও রাস্তা নির্মাণ করার কথা ছিল ইউনিয়ন পরিষদের। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদ তা করেনি। পূর্ব নড়াইল গ্রামের বাসিন্দা শামসু মিয়া বলেন, ব্রিজ আছে রাস্তা নাই। এতে কার কোন দিক থেকে লাভ হয়েছে তা আমরা বুঝি। বর্ষার সময় পানির নিচে থাকে, শুকনো মৌসুমে মই ব্যবহার করতে হয়। বিপাকে পড়তে হয় যখন কোন অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা নুর আলম বলেন, আমার ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি চারটা ব্রিজ বিলের মাঝখানে এভাবে দাঁড়িয়ে আছে। প্রথমে আমরা মজা করতাম। এখন রাগ হয়। এত টাকা খরচ করে কেন ব্রিজগুলো বানিয়েছে তা আমাদের বোধে আসে না।

সেলিম মুরাদ নামে আরেকজন বলেন, দেড় থেকে দুই কিলোমিটার রাস্তার জন্য চারটি সেতু। তাও আবার ব্যবহার করবার জো নেই। চেয়ারম্যান মেম্বররাও যদি ১৫ বছরে একটু ব্যবস্থা নিত তাহলে এতদিনে রাস্তাটি সচল হয়ে যেত।

হালুয়াঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক সায়েম প্রকল্প পরিকল্পনায় গাফিলতির কথা স্বীকার করে বলেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন সেতুগুলো নির্মাণে নিয়ম ও ওয়াটার লেভেল মানেনি। যে কারণে ব্রিজগুলো বন্যার সময় তলিয়ে যায়। অনেকবার রাস্তা বড় করতে মাটি দিয়েছেন। কিন্তু বন্যার সময় আবার তা ভেঙে যায়। হাওর অঞ্চলে যেভাবে সাবমার্সিবল রাস্তা তৈরি করা হয়, সেভাবে এগুলো তৈরি করলেই এই রাস্তা টিকবে নতুবা নয়।

হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, সেতুগুলো কারা তৈরি করেছে, তার কোনো নথি নেই তাদের কাছে। আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে ব্রিজগুলো মানুষের প্রয়োজনে আসবে, সেভাবেই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

দৈনিক বিবর্তন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।