চাকরির মেয়াদ শেষ হলেও জালিয়াতি করে টিকে আছে চাকরি
logo
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চাকরির মেয়াদ শেষ হলেও জালিয়াতি করে টিকে আছে চাকরি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ২২, ২০২১ ১০:২৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

print news

বরগুনার তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদে গ্রামপুলিশ(দফাদার) মো. জয়নাল হাওলাদারের ভোটার আইডি কার্ডে বয়স ৬০ বছর পার হলেও ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে চাকরি টিকিয়ে রাখতে ভয়ংকর জালিয়াতি করেছেন তিনি। ভোটার আইডি কার্ডে তার চাকরির বয়স পার হলেও জালিয়াতির মাধ্যেমে জন্মনিবন্ধন ও ফটোকপির দোকান থেকে ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করে করে চাকরি করে যাচ্ছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলা নিবার্চন অফিস সূত্রে জানা যায়, গ্রাম পুলিশ মো. জয়নাল হাওলাদারের প্রকৃত জন্ম তারিখ ০২-০৯-১৯৬১ ও ভোটার তালিকায় দেয়া তার আডি নং ( ভোটার নং ০৪০৬৪৪০০০৩০৩ ও এন আইডি নং ১৯৬১০৪১০৯৩৯৭৪৮৬০৩ )। সে অনুযায়ী  আজ ২২ নভেম্বর পর্যন্ত তার বয়স ৬০ বছর ২ মাস ২০ দিন চলছে। তিনি নিবার্চন কমিশনে কোনো ধরণের বয়স সংশোধনের জন্য আবেদন করে নাই বলে জানা যায়।

NID info

অরিজিনাল আইডি কার্ড এর নমুনা কপি যার জন্ম তারিখ ( ১৯৬১-০৯-০২)

জানা যায়, মো.জয়নাল হাওলাদার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের  ৩ নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ(চৌকিদার) পদে যোগদান করেন। পর্যায়ক্রমে তিনি গ্রাম পুলিশ (দফাদার) পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। এরপরে তার বয়স অনুযাযী তার চাকরির শেষ কার্যদিবস ছিল ২০২১ সালের অক্টোবর মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত। তবে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে চাকরি টিকিয়ে রাখতে তিনি ভয়ংকর জালিয়াতি করেন। এ জন্য গত ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ২৩ তারিখ তিনি ইউনিয়ন পরিষদের একটি জন্মনিবন্ধন করেন ১৯৮৪ সালের ১০ এপ্রিল দিয়ে জন্মনিবন্ধন করেন যার নিবন্ধন নং ১৯৮৪০৪১৯২৯১১০০২৩৬ ও ১৯৮২  সালের ১৮ জানুয়ারি তারিখ দিয়ে স্থানীয় ফটোকপির দোকান থেকে ভোটার আইডি কার্ড তৈরি করেন যার আইডি নং ০৪১০৯৩৯৪৫৭৯৭৭। তবে এই ভোটার আইডি নাম্বারটি নিবার্চন অফিসের মাধ্যমে জানতে চাইলে সেখানে মুনসুর নামের এক ব্যক্তি নাম আসেন। তিনিও ঐ  ৮ নং ওয়ার্ডে গ্রাম পুলিশ (চৌকিদার) ছিলেন কিন্তু প্রায় এক মাস আগে মারা যায়। তবে গোপন সূত্রে জানা যায় এই জন্মনিবন্ধনটি ও ভোটার আইডি কার্ডটি  তিনি ভয়ংকর জালজালিয়াতী করে প্রকৃত বয়স গোপন রেখেছেন। এখানেও তৈরি করা জন্মনিবন্ধনটি ও ভোটার আইডি কার্ডের বয়সের ব্যবধান রয়েছে। তবে কোনটি দিয়ে তিনি এখনও দিব্যি চাকরি করে যাচ্ছেন তা জানেন না সরকারী অফিসের কেউ। তবে সরকারী অফিসর একটি সূত্র জানায় যেহেতু তার প্রকৃত বয়স ৬০ বছর ২ মাস ২০ দিন চলছে। সেক্ষেত্রে তিনি ভুয়া জন্মনিবন্ধন ও ভোটার আইডি কার্ডের  যে কোনো একটি দিয়ে চাকরি করছেন। একই সঙ্গে সরকারি বেতন ভাতাসহ অন্যান্য সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছেন। এদিকে প্রকৃত বয়স গোপন রাখার বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে বির্তকের সূষ্টি হয়। সুষ্ঠ তদন্ত করে ব্যবস্থার দাবি এলাকাবাসীর।

ভূয়া আইডি কার্ড

বানানো আইডি কার্ড (ফটোকপি) জন্মতারিখ (১৮ জানু ১৯৮২)

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঐ ইউনিয়নের কয়েকজন ইউপি সদস্য জানান, এই জয়নাল ভূয়া কাগজপত্র তৈরি করে চাকরি টিকিয়ে রাখছেন এটা নিশ্চিত। তবে কি ক্ষমতা বলে এখনো চাকরিতে বহাল আছে তা জানি না। উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা নজর দিলেই হয়।

ভূয়া জন্ম নিবন্ধন

বনানো জন্ম নিবন্ধন (ফটোকপি) জন্মতারিখ ( ১০ এপ্রিল ১৯৮৪)

অভিযুক্ত গ্রাম পুলিশ (দফাদার) মো. জয়নাল হাওলাদারকে মুঠোফোনে ফোন দিলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে গিয়ে ফোনটির লাইন কেটে দেয়।

১

বানানো আইডি কার্ড নাম্বার এর তথ্য  ( জন্মতারিখ  ১৯৭৫ – ০২ – ০৩ )

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. দুলাল ফরাজীকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে ফোন দিলে তাকে পাওয়া যায়নি।

তালতলী উপজেলা নিবার্হী অফিসার মো. কাওছার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, দফদার জয়নাল বয়স প্রমানের জন্য ভোটার আইডি বা জন্ম সনদ কোনটি জমা আছে সেটি খতিয়ে দেখা হবে।

দৈনিক বিবর্তন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
  আগষ্ট