বরগুনার তালতলীতে তেতুলবাড়িয়া এলাকায় জোয়ারের তোড়ে বাঁধ ভেঙে ৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। রান্নাঘরে পানি প্রবেশ করায় এসব এলাকার কয়েকশত পরিবারে রান্নাবান্না বন্ধ রয়েছে ।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) বেলা ১১ টার দিকে পায়রা নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে তেঁতুলবাড়ী এলাকার নদীর ১০০ মিটার পাউবোর বেড়িবাঁধ ভেঙে ঐসব গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে কমপক্ষে ৫০টি মাছের ঘের ও ৮টি গ্রামের কয়েক শত বাড়ি প্লাবিত হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তেতুলবাড়িয়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অস্থায়ী রিং বেড়িবাঁধ পূর্নিমার জোয়ারের প্রবল স্রোতের ধাক্কায় নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। এতে একটি পয়েন্ট দিয়ে ঔ এলাকার ৮ টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এদিকে বাঁধের ভাঙা অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করায় শতশত মানু্ষ জীবন রক্ষায় বেড়িবাঁধের ওপর অবস্থান নিয়েছে। এসময় জোয়ারের পানির তোড়ে ভেসে গেছে নদীর তীরের একাধিক স্থাপনা ও বসত ঘর। এছাড়াও কৃষির ব্যাপক ক্ষতিসহ আমনের বীজতলা তিন-চার ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
সরেজমিনে বেলা দুইটার দিকে দেখা গেছে, ঔ এলাকায় পাউবোর ১০০ মিটার বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে তেতুলাবাড়িয়া, নলবুনিয়া, আগাপাড়া, জয়ালভাংগা , ও বড় আংকুজানপাড়াসহ প্রায় ৮টি গ্রামে পানি থইথই করছে। ইতিমধ্যে অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়ন কেন্দ্র আশ্রয় নিয়েছে। তলিয়ে গেছে কয়েকটি চিংড়ি ঘের। ডুবে গেছে ধান ও সবজির খেত। প্লাবিত হওয়া এলাকার মানুষের রান্নাবান্না হয়নি আজকের। এই ভাঙ্গা বাঁধ এভাবে থাকলে দিনে রাতে দুইবার পানিতে তলিয়ে থাকতে হবে এই আট গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের। তাই দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
তেতুলবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রানি বেগম জানান, বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় আমার বাড়িঘর সব তলিয়ে গেছে এখন বেড়িবাধের উপর আশ্রয় নিয়েছি। আর যাওয়ার যায়গা নেই। তিনি আরও বলেন এই পায়রা নদীর পাড়েই থাকি সেই জন্মের শুরু থেকে। তবে এখনো স্থানীয় বেড়িবাধ দেখিনি। তাছাড়া টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।
বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত আরেক ব্যক্তি আলমগীর আক্ষেপ নিয়ে তিনি জানান, তার ঘের ভেসে কমপক্ষে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া প্রতিবছরই বাঁধ ভেঙে এমন ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তিনি।
স্থানয়ী রফিক মিয়া বলেন, রিং বেড়িবাধ হওয়ার সামান্য জোয়ারের তোরে আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়েছে। সেজন্যই আজ হঠাৎ অমাবস্যার জোয়ারের তোড়ে বাধটি ধসে গিয়েছে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সাদিক তানভীর বলেন, বাধ ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে সাথে সাথেই বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা করেছি। তাদের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত সংস্কারের জন্য বালির জিও ব্যাগ পাঠানো হচ্ছে পানির তোড় সামলাতে। তিনি আরও বলেন ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে উপজেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করা হবে।