বরগুনার তালতলী উপজেলার ১১৩ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৯৬টিতেই শহীদ মিনার নেই। মাত্র ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রয়েছে শহীদ মিনার। এই ৯৬ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী মিনার নির্মাণ করে শহীদ দিবস পালন করে আসছে। যেসব প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী শহীদ মিনার থাকলেও ভাষা দিবস আসলেই ওই শহীদ মিনারগুলো ঘষা মাঝা করা হয়। ভাষা দিবস শেষ হয়ে গেলে থাকে অযন্তে আর অবহেলায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, তালতলী উপজেলায় ৭৮ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৫ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১৩ টি দাখিল মাদ্রাসা ও ২ টি কলেজে রয়েছে । ১০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা মিলিয়ে ৬ টি ও একটি কলেজে শহীদ মিনার রয়েছে। এ উপজেলার বাকি ৯৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন শহীদ মিনার নেই। শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে শহীদ প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এছাড়া যেগুলো রয়েছে সেগুলো অযত্নে আর অবহেলায় পড়ে আছে। এগুলো সংস্কারের কোন উদ্যোগ নেই। প্রতি বছর শহীদ দিবসের দু’এক দিন পূর্বে তালতলী কলেজ ও সরকারি স্কুলে শহীদ মিনারসহ অন্যান্য শহীদ মিনার ঘষা মাজা করা হয়। দিবস শেষ হয়ে গেলে কেউ ওই মিনারের আর খবর রাখে না। সচেতন মহল বলছে ভাষ আন্দোলনের এতো বছর পরে তালতলীতে ৯৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই এটা খুব দুঃখজনক ঘটনা। দ্রুত এই সব প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপনের দাবি করছি।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জেভি মনসাতলী প্রাথমিক বিদ্যালয়,পচাঁকোড়ালিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, লাউপাড়া সাগর সৈকত মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কড়াইবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসাসহ অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই।
লাউপাড়া সাগর সৈকত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের স্কুলে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়নি এখনো। তাই অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ফুল দিতে হয়। এ উপজেলার একাধিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা হলে তারাও একই কথা বলেন। দ্রুত স্থায়ী ভাবে শহীদ মিনার স্থাপনের দাবি করেন তারা।
পচাকোড়ালিয়া বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.আনিসুজ্জামান বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে শিক্ষার্থীরা আন্তজার্তিক মাতৃভাষা দিবস পালন করি।
তালতলী প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি হাফিজ আল মামুন বলেন,ভাষা আন্দোলনের এতো বছরেও কোন অজ্ঞাত কারণে এইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার হয়নি তা জানি না। তবে এটা জাতির জন্য খুব লজ্জার বিষয়। দ্রুত এই সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা হোক।
তালতলী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, বলেন উপজেলায় যে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ না আগামী এক বছরের মধ্যে স্থানীয় উদ্যোগে প্রতিষ্ঠান গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণ করা ।
তালতলী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. লুৎফুর কবির বলেন যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার নেই। সেই সকল বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের প্রক্রিয়া চলছে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কাওসার হোসেনকে তার সরকারি নাম্বারে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেন নি।