বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে শূন্যরেখার কাছাকাছি বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভেতরে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর দুটি গোলা এসে পড়ার ঘটনায় দেশটির ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মো-কে ডাকা হবে। এ ঘটনায় কড়া প্রতিবাদ জানানো হবে।
শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ভেতরে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর দুটি গোলা এসে পড়ার ঘটনায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার সীমান্তের ঘটনায় বাংলাদেশে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে আগামীকাল রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) তলব করা হবে। এ ঘটনায় তাদের কড়া প্রতিবাদ জানানো হবে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যুদ্ধবিমান থেকে শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে শূন্যরেখার কাছাকাছি বাংলাদেশ সীমান্তে এসে দুটি গোলা পড়ে।
বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. তারিকুল ইসলাম জানান, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের কাছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দুটি যুদ্ধবিমান এবং দুটি ফাইটিং হেলিকপ্টার টহল দেয়। যুদ্ধবিমান থেকে প্রায় ৮-১০টি গোলা ছোড়া হয় আর হেলিকপ্টার থেকেও ৩০-৩৫টি গুলি করা হয়। এ সময় বাংলাদেশের সীমানা পিলার ৪০-এর ১২০ মিটার অভ্যন্তরে যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা এসে পড়ে।
এর আগে, গত রবি ও বৃহস্পতিবার মিয়ানমার থেকে মর্টার শেল এসে পড়ে বাংলাদেশে। ওই ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মো-কে ডেকে নোট ভার্বালের মাধ্যমে কড়া প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ অবস্থা বিবেচনায় প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ। দেশটির আর একজন নাগরিকও যেন বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে, সেজন্য বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
শাহরিয়ার আলম বলেছিলেন, গত দুই-তিন দিন ওখানকার (মিয়ানমারের) অভ্যন্তরীণ অবস্থার হয়ত অবনতি হয়েছে। এটা মিয়ানমারের মেটার অব কনসার্ন। কিন্তু আমরা যেটা বলছি, এতে যেন বাংলাদেশের বর্ডারে কোনো ইমপ্যাক্ট না পড়ে। আমাদের অনেকে ভয় করছেন, ওখানে যে পরিমাণ রোহিঙ্গা রয়েছে তারা আবার না বাংলাদেশে চলে আসেন। আমরা এ বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি।
রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশ প্রস্তুত জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেছিলেন, বিজিবিকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় থাকতে, যেন একজন মিয়ানমারের নাগরিকও আর বাংলাদেশে ঢুকতে না পারেন। আমাদের সংস্থাগুলো বেটার প্রিপেয়ার্ড। আমরা আগের চেয়ে অনেক বেটার প্রিপেয়ার্ড। ভালোভাবে প্রস্তুত আমরা। আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত আছে। যার ভিত্তিতে আমাদের এজেন্সি, বর্ডার গার্ড, অন্যান্য বাহিনী যারা আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে আছে, তারা এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করবে।