ঢাকা: জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাখান করে সঠিক ব্যয় বিশ্লেষণে নতুন ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। রোববার (৭ আগস্ট) সকালে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।
সংগঠনটি বলছে, একচেটিয়াভাবে বর্ধিত তেলের মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে যাত্রী কল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন যখন মাঠে আন্দোলনরত, ঠিক তখনই জ্বালানির মূল্য প্রত্যাহারের দাবি না তুলে বাস মালিকেরা সরকারের সঙ্গে মিলেমিশে বাস ভাড়া বাড়াতে ব্যস্ত। আন্তর্জাতিক ক্রেতা-ভোক্তা আইন লংঘন করে যাত্রী প্রতিনিধি ছাড়া বিআরটিএ ও পরিবহন মালিক সমিতি কর্তৃক ঘোষিত বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাহার করে সঠিক ব্যয় বিশ্লেষণ করে নতুনভাবে বাস ভাড়া নির্ধারণের দাবী জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
মহাসচিব মোজাম্মেল হক বলেন, গেল নভেম্বরে জ্বালানি তেলের মূল্য লিটার প্রতি ১৫ টাকা বৃদ্ধির সময়ে বাস ভাড়া ৩৫ শতাংশ হারে বাড়ানো হয়। এর ৯ মাসের মাথায় আবারও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সঠিক ব্যয় বিশ্লেষণ ব্যাতিরেখে এক লাফে বাস ভাড়া আবারো ২২ শতাংশ হারে বাড়ানো হয়। প্রতিটি পুরোনো লক্কড়-ঝক্কড় বাসকে শো-রুম থেকে নামানো নতুন বাসের দাম, ব্যাংক সুদ ও অন্যান্য নতুন বাসের সুযোগ-সুবিধার হিসাব ধরে ব্যয় বিশ্লেষণ করা হলেও সিটি সার্ভিসে ৯৮ শতাংশ বাস-মিনিবাস চলাচলের অযোগ্য। আন্তঃজেলা দুরপাল্লায় ৪৮ শতাংশ বাস ২০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছে। এসব বাস অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পুরোনো এসব বাসের যাত্রী সেবার মান তলানীতে গিয়ে ঠেকেছে। গতকালের বাস ভাড়া বৃদ্ধির সভায় এসব বাসকে চকচকা নতুন বাস হিসেবে ব্যয় বিশ্লেষণ করায় যাত্রীস্বার্থ চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তিনি নতুন বাস এবং পুরাতন বাস আলাদা আলাদা ব্যয় বিশ্লেষণ ও আলাদা আলাদা ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানান।
তিনি আরও বলেন, সরকার বাস মালিকদের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করলেও কোনো বাসে সরকার নির্ধারিত ভাড়া কার্যকর নেই। সরকার নির্ধারিত ভাড়ার বেশ কয়েকগুণ বর্ধিত ভাড়া বাসে বাসে আদায় হলেও সরকার কার্যত এসব বাসের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারে না। সিটি সার্ভিসে সরকার কিলোমিটার প্রতি ভাড়া নির্ধারণ করলেও বাসে বাসে ওয়েবিলে যাত্রীর মাথা গুণে গুণে ভাড়া আদায় করা হয়। ঢাকা মহানগরীর কথিত সিটিং সার্ভিসে স্বল্প দুরুত্বে যাতায়াত করলেও সর্বশেষ গন্তব্য পর্যন্ত ভাড়া পরিশোধ করতে হয়। ইদ ও পূজা-পার্বণে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্যে দিশেহারা হয়ে পড়েন যাত্রী সাধারণ। এহেন পরিস্থিতি তুলে ধরে দেশের ১৬ কোটি যাত্রী সাধারণের দূর্ভোগের কথা বলতে যাত্রী কল্যাণ সমিতি বাস ভাড়া নির্ধারণের সভায় প্রতিনিধিত্ব করতে বার বার আবেদন নিবেদন করলেও সরকার বাস মালিকদের বিশেষ সুবিধা দিতে যাত্রী প্রতিনিধি ছাড়া বার বার বাস ভাড়া নির্ধারণ করে থাকেন। অনতিবিলম্বে বর্ধিত বাস ভাড়া প্রত্যাহার করে সঠিক ব্যয় বিশ্লেষণপূর্বক নতুন ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানান তিনি।