বরগুনার আমতলী উপজেলায় পরিবার গরিব হওয়ার অজুহাতে বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় তামান্না বেগম (১৭) নামে এক কলেজছাত্রী বিষ পান করে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার (১৮ জুন) সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
তামান্না আমতলী উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের উত্তর তক্তাবুনিয়া গ্রামের বাচ্চু মোল্লার একমাত্র মেয়ে।
জানা গেছে, আমতলীর আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের মেখলেছুর হাওলাদারের ছেলে সুজন হাওলাদারের সঙ্গে দেড় বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল ওই কলেজছাত্রীর। এরপর বিষয়টি দুই পরিবারের মধ্যে জানাজানি হলে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ের তারিখ ঠিক হয়। গত ১০ জুন তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। তবে মেয়ের পরিবার গরিব-দরিদ্র হওয়ায় হঠাৎ পাত্র সুজনের খালা বিয়েতে আপত্তি করেন। এ কারণে বিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর অভিমানে গত ১৩ জুন সকালে বিষ পান করে ওই কলেজছাত্রী। এরপর স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় একই দিন দুপুরে তাকে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে আজ শনিবার সকালে মারা যান তিনি।
তামান্নার বাবা বাচ্চু মোল্লা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার মেয়েকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে সব শেষ করে দিয়েছে সুজন। শুক্রবার আমার মেয়ের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সুজনের খালা মাহফুজা আমাদের গরিব বলে এবং মেয়ের মা বিদেশে থাকে, এই অজুহাত দেখিয়ে বিয়ে ভেঙে দেয়। অভিমানে আমার মেয়ে বিষপান করে।
অভিযুক্ত সুজনের খালা মাহফুজা বেগম জানান, ‘বিয়ার তারিখ অইছিল। মাইয়ার বাবা-মা গরিব তাই আমরা বিয়া করাতে রাজি ছিলাম না। মেয়ে কি কারণে বিষ খাইছে হেইয়া আমাগো জানা নাই’।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম মিজানুর রহমান বলেন, সুজন এবং তামান্নার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানতে পারি। তাদের বিয়ের কথাবার্তা চলছিল। এর মধ্যে বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় তামান্না বিষপান করে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে মারা যায়। সেখানে তার ময়না তদন্তও সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।