পটুয়াখালীর কলাপাড়ার চাকামাইয়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে দুই চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত রনি হাওলাদার (৩৫), হারুন মীর (৪০) ও ঘোড়া মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবর রহমান হাওলাদারকে (৫০) উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে চাকাইয়া ইউনিয়নের বেতমোর মাধ্যমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন বাজারে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনী প্রচারণা শেষে ঘোড়া প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবর রহমান হাওলাদার তাঁর সমর্থকদের নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় বেতমোর বাজারে পৌঁছালে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হুমায়ুন কবির কেরামতের সমর্থকের সঙ্গে তাঁরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবর রহমান হাওলাদার, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হুমায়ুন কবির কেরামত, তাঁর ছেলে হাসিবুল ইসলাম, নৌকা সমর্থিত হাসান গাজী, গোলাম মোস্তফা, স্বতন্ত্র প্রার্থীর ভাইয়ের ছেলে রনি হাওলাদার ও হারুন মীরসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। বর্তমানে হাসান গাজী কলাপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন।
এদিকে শনিবার দুপুরে টিয়াখালী ইউনিয়নের টিয়াখালী গ্রামে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হাসান সুজন মোল্লার নির্বাচনী প্রচারণায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মশিউর রহমান শিমুর কর্মীরা হামলা চালান। এ সময় স্থানীয় জনগণ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা প্রতিহত করলে উভয় প্রার্থীর সাতজন কর্মী আহত হয়। ভাঙচুর করা হয় চারটি মোটরসাইকেল। এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদুল হাসান সুজন মোল্লার ভাই জামাল মোল্লাসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
চাকামইয়া ইউপির নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হুমায়ুন কবির কেরামত বলেন, ‘সন্ধ্যার পর বেতমোর স্কুল মাঠে আমার নির্বাচনী উঠান বৈঠক ছিল। বৈঠক শেষে ঘোড়া মার্কার প্রার্থী বিএনপির নেতা মজিবুর রহমান আমার সমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমি এবং আমার ছেলেসহ বেশ কিছু সমর্থক আহত হয়েছি।’
অন্যদিকে ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মজিবর রহমান হাওলাদারের ভাই বজলুর রহমান বলেন, ‘আমরা নির্বাচনী কার্যক্রম শেষে মোটরসাইকেলে বাড়িতে ফিরছিলাম। পথে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হুমায়ুন কবির কেরামতের ছেলে হাসিবুল ইসলামের নেতৃত্বে আমাদের ওপর হামলা করা হয়। এতে প্রার্থী মজিবর রহমান হাওলাদার, আমার ভাতিজা রনি হাওলাদার ও কর্মীরা গুরুতর আহত হন।’
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. অনুপ কুমার সরকার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আহতদের মধ্যে রনি হাওলাদার এবং হারুন মীরের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।’
কলাপাড়া থানার ওসি মো. জসিম বলেন, ‘যেখানেই সমস্যার খবর পেয়েছি, সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ পাঠিয়েছি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’