বরগুনার তালতলীতে কালবৈশাখী ঝড়ে ৬৪ নং পশ্চিম লালুপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম । দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের দাবি করেছে শিক্ষার্থীরা।
গতকাল শনিবার(২১ মে) রাত ১০ টার দিকে কালবৈশাখী ঝড়ে বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ লন্ডভন্ড হয়ে যায়। এতে বিদ্যালয়টি গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নষ্ট হয়ে গেছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সকাল থেকে সারা দিন কড়া রোদ ছিলো। বিকেল হতে না হতেই রোদের মধ্যেই আকাশে মেঘে ভরে যায়। সন্ধা হতেই হঠাৎ শনশনে শব্দে রূপ নেয় কালবৈশাখীতে। মাত্র কয়েক মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়ে যায় পশ্চিম লালুপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়াও ভেঙ্গে পড়ে বহু গাছপালা ও কাঁচা বাড়িঘর। স্থানীয়রা আরও বলেন চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এই স্কুলটি ভোটার কেন্দ্র হিসেবে তালিকা ভুক্ত রয়েছে। তবে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বিপাকে পড়তে হবে ভোট গ্রহনে।
স্কুলের প্রধানশিক্ষক মতিউর রহমান বলেন, রাতের কালবৈশাখী ঝড়ে স্কুলটি পুরোপুরি ভেঙ্গে যায়। সকালে এসে দেখি স্কুলটি স্থানে নেই। উড়িয়ে অন্য স্থনে নিয়ে গেছে ঝড়ে। স্কুলের চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চ সব খোলা আকাশের নিচে পড়ে রয়েছে। স্কুলের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নষ্ট হয়ে গেছে।
আনুমানিক কয়েক লাখ টাকার মত ক্ষতি হয়েছে। স্কুলটিতে আমিসহ ২ জন শিক্ষক কর্মরত আছি । শিক্ষার্থী রয়েছে প্রায় ২৫০ জন। এমন অবস্থায় স্কুলের কোন অর্থ নাই। কি দিয়ে পুনরায় মেরামত করবেন তা বুঝতে পারছেন না। সরকারের নির্দেশে দুই বছরের বেশি সময় করোনার কারণে বন্ধ রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে এখনপাঠদান স্বাভাবিক রাখার মতো কোনো ব্যবস্থা নেই। বাধ্য হয়ে পাঠদান বন্ধ রাখতে হয়েছে। দুইএকদিন পর থেকে খোলা আকশের নিচে বসে পাঠদান করাবো। তিনি আরও বলেন, ঝড়ে বিদ্যালয়ের উড়ে যাওয়ার পরই আমরা বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা মেরামতের দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা আশঙ্কা করছেন, বর্ষা মৌসুম হওয়ায় যে কোনো সময় বৃষ্টি আসতে পারে। এই শঙ্কা মনে নিয়েই এভাবে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করা খুবই কষ্টকর হবে। এটা তাড়াতাড়ি ঠিক না করলে আমরা ক্লাসই করতে পারব না।
অভিভাবক হাসান বলেন, এই বিদ্যালয়ে এলাকার ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া করে। কিন্ত ঝড়ে স্কুল ভেঙে গেছে। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ অস্বচ্ছল বলে অল্প সময়ের মধ্যে বিদ্যালয় মেরামতের টাকাও জোগাড় করা সম্ভব নয়। তাই যারা সমাজে স্বচ্ছল মানুষ রয়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। এছাড়াও সরকারী ভাবে সহযোগিতা করলে দ্রুত স্কুলটি নির্মাণ করা যাবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিউল আলম বলেন, রাতের কালবৈশাখী ঝড়ে স্কুলটি পুরোপুরি ভেঙ্গে গেছে। পরবর্তী ব্যবস্থার জন্য কার্যক্রম চলতেছে। যাতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান বেশি দিন বন্ধ না থাকে। তিনি আরও বলেন, ঐ স্কুলের নামে একটি ভবনের নির্মাণ কাজ চলছে। তিন থেকে চার মাসের ভিতরে চালু হবে। ঐ নির্মানাধীন ভবণে ভোট গ্রহন করা যাবে।
তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সাদিক তানভীর বলেন, বিষয়টি শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে ফেরাতে ও ভোগান্তি কমাতে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কক্ষ মেরামতের ব্যবস্থা করা হবে।