ডোনাল্ড ট্রাম্প কখন কী করেন তা আন্দাজ করা কঠিন! তারচেয়েও কঠিন তিনি কখন কী বলেন, তা বোঝা। যে মানুষটি মাত্র একদিন আগেই পার্লামেন্ট ভবনে হামলা চালানো সমর্থকদের ‘দেশপ্রেমিক’ বলছিলেন, এখন তারাই হয়ে গেছেন ‘জঘন্য আক্রমণকারী’। তারচেয়েও অবাক করা বিষয়, গত দু’মাস ধরে যে ট্রাম্প নির্বাচনের ফলাফল মানেননি, সেই মানুষটাই এখন বলছেন, তার একমাত্র লক্ষ্য শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।
গত বুধবার কংগ্রেসের অধিবেশনে জো বাইডেনকে জয়ী হিসেবে ঘোষণার আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মধ্যেই হঠাৎ সেখানে হামলা চালান ট্রাম্প সমর্থকরা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। হামলাকারীদের ঠেকাতে গিয়ে আহত হয়েছেন ক্যাপিটলের বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা।
তবে ঘটনার পরপরই হামলাকারীদের ‘দেশপ্রেমিক’ উল্লেখ করে এক ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন, ‘তোমাদের ভালোবাসি।’ এরপর ফেসবুক ও টুইটার তার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়।
ট্রাম্পকে মানসিকভাবে অসুস্থ উল্লেখ করে তাকে এখনই গদিছাড়া করে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে দায়িত্ব নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ডেমোক্র্যাটরা। এমনকি এ বিষয়ে খোদ ট্রাম্পের মন্ত্রিসভাতেই আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
চারদিক থেকে এমন চাপে পড়ে অবেশেষে পুরোপুরি সুর বদলে ফেললেন যুক্তরাষ্ট্রের বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। ১২ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর টুইটার অ্যাকাউন্ট ফিরে পেতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আবারও সরব হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে নতুন ভিডিওতে তিনি যা বলেছেন, যেভাবে বলেছেন, তা আশা করেননি অনেকেই।
ভিডিওবার্তায় নিজের সমর্থকদের হাতে পার্লামেন্ট ভবন আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাকে ‘জঘন্য আক্রমণ’ বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, কংগ্রেস একটি নতুন প্রশাসনের অনুমোদন দিয়েছে, যা আগামী ২০ জানুয়ারি অভিষিক্ত হবে। এখন আমার লক্ষ্য ক্ষমতার মসৃণ, সুশৃঙ্খল ও নির্বিঘ্ন হস্তান্তর নিশ্চিত করা। এখন ক্ষত নিরাময় এবং পুনর্মিলনের সময়।
গত নভেম্বরের নির্বাচনের পর এটাই প্রথমবার প্রকাশ্যে ক্ষমতা ছাড়ার ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প। অবশ্য ভক্তদের কিছুটা আশার বাণীও শুনিয়েছেন তিনি। বলেছেন, তার সঙ্গে এই যাত্রা সবে শুরু হয়েছে, এখনও অনেকটা পথ বাকি।