সাপের অনন্য এই ভালোবাসার দৃশ্য সচরাচর চোখে পড়ে না। বিরল এ দৃশ্যের দেখা মিলেছে ঠাকুরগাঁও রাণীংশকৈল উপজেলার সুন্দরপুর এলাকায়। দুটি সাপের মিলনই মানুষের কাছে ‘শঙ্খ লাগা’ নামে পরিচিত।
শনিবার (০৭ আগস্ট) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত ওই এলাকায় ধান ক্ষেতে দুটি দাঁড়াশ (স্থানীয় ভাষায় দারাজ) সাপের শঙ্খ লাগা দৃশ্য দেখতে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা।
সুন্দরপুর এলাকার বাসিন্দা স্থানীয় সংবাদকর্মী হুমায়ুন কবির জানান, সাপের ওই মিলন সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা স্থায়ী ছিল। দাঁড়াশ প্রজাতির সাপ দুটি লম্বায় ছিল ৪ থেকে ৫ ফুট। শঙ্খ লাগা অবস্থায় তাদেরকে নিজেদের পেঁচিয়ে অনেক উচিয়ে লাফালাফি, মারামারি ও একে অপরকে কামড় দিতে দেখা যায়।
ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আব্দুল গাফফার জানান, সাপের শঙ্খ লাগা একটি সাধারণ ঘটনা ও প্রাকৃতিক বিষয়। মানুষ বা অন্য প্রাণীর যেমন যৌন মিলন হয়, সাপও ঠিক তেমনিভাবে প্রজননের জন্য মিলন ঘটনায়।
তিনি বলেন, সাপের নির্দিষ্ট সময় থাকে। তখন তাদের প্রজনন সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, মিলনে উদ্দীপ্ত করে এবং প্রেম বা ভালো লাগার বিষয়টি প্রাধান্য পায়। খাদ্য, নিরাপত্তা, তাপমাত্রা এবং সঙ্গীর সহজলভ্যতা- এসবের ওপর সাপের মিলন নির্ভর করে। সাধারণত বর্ষাকাল এ জন্য অনেকটা উপযুক্ত সময়। তাই এই সময়েই সাপের শঙ্খ বা মিলন বেশি হয়ে থাকে।
আব্দুল গাফফার আরও জানান, প্রজননের ঋতু ছাড়াও অন্য সময়ে তিন বা তার বেশি সাপের শঙ্খ লাগে এবং সবচেয়ে লক্ষণীয়, দুটি পুরুষ সাপেও শঙ্খ লাগে। আসলে নিছক খেলার ছলে কিংবা পৌরুষ জাহির করার জন্যও মারামারি বা শঙ্খ লাগে।
তিনি বলেন, সাপ মিলনের আগে বা মিলনের সময় প্রজনন ভাব ও অনুরাগের বহিঃ প্রকাশ ঘটায় লাফালাফি, একে অপরকে জড়াজড়ি, মারামারি, কামড়াকামড়ি করে। এতে অনেক সময়ে দেহ কেটে-ছিড়ে যায়।