ঢাকার নদীগুলো রক্ষায় নতুন মহাপরিকল্পনা
logo
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঢাকার নদীগুলো রক্ষায় নতুন মহাপরিকল্পনা

নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ২৮, ২০২১ ৬:৪২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ঢাকার আশেপাশে প্রায় ২২০ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, বালু ও ধলেশ্বরী নদী পাঁচটি রক্ষায় নতুন পরিকল্পনা হাতে নিচ্ছে সরকার

রাজধানীর আশেপাশে প্রায় ২২০ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, বালু ও ধলেশ্বরী নদী পাঁচটি রক্ষায় নতুন পরিকল্পনা করছে সরকার।

নদীগুলো পরিষ্কার ও দখলের হাত থেকে রক্ষা করতে ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। নদী রক্ষায় ২০০৯ সালের হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এই পরিকল্পনাকে অগ্রাধিকার দিতে চাইছে সরকার।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় (পিএমও), অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং বিশ্বব্যাংক পরিকল্পনাটি তৈরি করতে একসঙ্গে কাজ শুরু করেছে।

বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে আমব্রেলা ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউআইপি) মূলত যমুনা নদীর উজানের উৎস থেকে শুষ্ক মৌসুমে ঢাকার নদীতে পানির নাব্য নিশ্চিত করার জন্য মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে আগ্রহী।

এছাড়া, নদীর তীর থেকে দূষিত শিল্প কারখানা অপসারণ, একটি সার্কুলার ওয়াকওয়ে ও রেলপথ নির্মাণ এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য গাছ লাগানোর পরিকল্পনাও নিয়েছে সরকার।

পরিকল্পনার কাঠামো অনুযায়ী, শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখতে যমুনা নদী থেকে ১৪১ ঘন মিটার পানি ঢাকার পাঁচটি নদীতে নিয়ে আসা হবে।

ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনই নদীগুলোতে মিশে যাওয়া খালগুলো পরিষ্কার রাখার কাজ করবে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নদী অববাহিকায় ড্রেজিং এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে।

পিএমওর সঙ্গে বিআইডব্লিউটিএ, দুই সিটি কর্পোরেশন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ বেশকিছু সরকারি সংস্থা এই পরিকল্পনা তৈরিতে সমন্বয় করছে।

প্রকল্পটিকে ইনভেস্টমেন্ট প্রোজেক্ট ফাইন্যান্সিংয়ের (আইপিএফ) আইডিএ শর্তের মাধ্যমে সহায়তা করা হবে। এ জন্য ৬৩৫ মিলিয়ন ডলার (৫ হাজার ৪৪৮ কোটি ৫৮ লাখ ৩৮ হাজার ৪৫০ টাকা) বিনিয়োগ করা হবে।

আশা করা হচ্ছে, প্রকল্পটি জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন এবং প্রশমন উভয়ক্ষেত্রেই অবদান রাখবে। এছাড়া, পানি প্রবাহের পুনরুদ্ধার করে বন্যার ঝুঁকি কমাতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের স্থিতিস্থাপকতা বাড়াতে সাহায্য করবে।

মাস্টারপ্ল্যানের বর্তমান অবস্থা

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, পরিকল্পনাটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

তিনি বলেন, “ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে পরিকল্পনা সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। কাগজপত্র প্রক্রিয়াধীন। শিগগিরই এ বিষয়ে আরও সভা অনুষ্ঠিত হবে। তবে নির্দিষ্ট কোনো তারিখ এখনও ঠিক করা হয়নি।”

বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে যুক্ত ইআরডি’র এক কর্মকর্তা বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে স্থানীয় সরকার, নৌপরিবহন, পরিবেশ ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মতো সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাদের ঢাকার নদী ও তার আশেপাশে বিদ্যমান প্রকল্পগুলোর তথ্য পাঠাতে বলেছি।”

তিনি আরও বলেন, “আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই পরিকল্পনা নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হতে পারে।”

বাংলাদেশের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা

পরিকল্পনায় ঘনিষ্ঠভাবে সংশ্লিষ্ট ইআরডি কর্মকর্তারা বলছেন, পরিকল্পনাটি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। কারণ এটি অনেক বড় এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে করা হবে।

ইআরডি’র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “যদি এই পরিকল্পনাটি অনুমোদন করা হয়, তবে আমাদের নদী বিষয়ক বিদ্যমান মাস্টারপ্ল্যান আপডেট করতে হবে। কিছু প্রকল্পের রদবদল করা দরকার এবং এই মাস্টারপ্ল্যানের অধীনে সেগুলো যুক্ত করা হবে।”

এ বিষয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তা ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “প্রকল্পটি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে নদীর চারপাশের পরিবেশের উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটবে।”

আরো সংবাদ

দৈনিক বিবর্তন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।