প্রতিবেদন অংশে মোট নম্বরের দশ শতাংশ তো অন্তত আছেই। তাই প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সঠিকভাবে জেনেই পরীক্ষার হলে ঢোকা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। আর লিখলে ভালো নম্বর পাওয়া কোনো ব্যাপারই না। আবার ছোটখাটো ভুলের জন্য মোটা অঙ্ক খাতা থেকে সরে যাই যাই অবস্থা হয়। ব্যাপারটা প্রতিরোধ করার একমাত্র উপায়: প্রতিবেদন লেখার যথাযথ কাঠামো অনুসরণ করা। তাই প্রতিবেদন কি, প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও উদাহরণ, প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম নিয়েই আজকের এই পর্ব।
প্রতিবেদন কি
প্রতিবেদন শব্দটি ইংরেজি শব্দ “Report” থেকে এসেছে। এর অর্থ হলো সমাচার, বিবৃতি বা বিবরণী। নির্দিষ্ট কোন বিষয় সংশ্লিষ্ট যাবতীয় প্রয়োজনীয় তথ্য অনুসন্ধানের পর সেটিকে সুসংগঠিত করে বিবরণী আকারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করাই হল প্রতিবেদন। অর্থাৎ, যেকোন নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে তথ্য সমৃদ্ধ বিবরণীকেই সংক্ষেপে প্রতিবেদন বলা যেতে পারে। প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও উদাহরণ এই ব্লগের মূল আলোচ্চ্য বিষয়।
সংবাদ প্রতিবেদন কি
মূলত সংবাদপত্র বা সংবাদমাধ্যমে প্রকাশের উপযোগী তথ্য সমৃদ্ধ সহজ সরল ভাষায় সংবাদ পরিবেশন করাকে বলা হয় সংবাদ প্রতিবেদন। এখানে সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে সহজ-সরল ও প্রাঞ্জল ভাষায় সঠিক তথ্য দিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে পাঠক-কে একটি সুস্পষ্ট ধারনা দিতে হয়।
সাধারণত নাগরিক জীবনের বিভিন্ন সমস্যা, কোথাও ঘটে যাওয়া জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো ঘটনা, দুর্ঘটনা, বিষয় বা প্রসঙ্গ সম্পর্কে তথ্যমূলক বিবৃতি লিখন সংবাদ প্রতিবেদন -এর অন্তর্ভুক্ত। এক্ষেত্রে আমাদের কোনো পত্রিকার সাংবাদিক অর্থাৎ নিজস্ব সংবাদদাতা/ স্টাফ রিপোর্টার/ নিজস্ব প্রতিবেদক বা কোনো জেলা/ থানা প্রতিনিধি হিসেবে সংবাদপত্রে প্রকাশ উপযোগী করে এ ধরনের প্রতিবেদন লিখতে হয়। সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নমুনা রয়েছে এই ব্লগের পরের অংশে।
প্রতিবেদন লেখার নিয়ম: প্রেক্ষাপট
প্রতিবেদনের নির্দিষ্ট শ্রেণিবিভাগ নেই। বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে প্রতিবেদন নানা রকম হতে পারে। নবম-দশম শ্রেণিতে প্রতিবেদনকে প্রধানত তিনটি ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যথা : সংবাদ প্রতিবেদন, তদন্ত প্রতিবেদন ও সাধারণ প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন। প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম, সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম ও তদন্ত প্রতিবেদন লেখার নিয়মের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে।
সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নিয়ম
- প্রথম অংশ: দুই লাইনের মধ্যে একটি দৃষ্টিনন্দন শিরোনাম দেয়া উচিত।
- দ্বিতীয় অংশ: এরপরের অংশে বিস্তারিত বর্ণনা লিখতে হয়। সংবাদ প্রতিবেদন লেখার সুবিধা হলো এতে শুধু শিরোনাম লিখেই সরাসরি মূল লেখায় চলে যাওয়া যায়। এ ধরনের প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে সম্পাদকের নিকট আনুষ্ঠানিক পত্র কিংবা খাম আঁকার প্রয়োজন নেই। প্রশ্নে সংবাদপত্র বা প্রতিবেদকের নাম থাকলে সেটা অনুসরণ করতে হবে। আর তা না থাকলে কাল্পনিক নাম ব্যবহার করা যেতে পারে।
সংবাদ প্রতিবেদন লেখার নমুনা
সংবাদ প্রতিবেদনের নমুনা হিসেবে বিদ্যালয়ের নবীন বরণ ও বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সম্পর্কে সংবাদ প্রতিবেদন নিম্নে দেওয়া হলো:
বিদ্যালয়ের নবীন বরণ ও বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সম্পর্কে সংবাদ প্রতিবেদন
“ক” বিদ্যালয়ে নবীন বরণ ও বিদায়-সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত আসিফ খান, ঢাকা, ১৬ অগাস্ট, ২০২২ ॥ ঢাকা জেলার “ক” বালুটিলা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গত ১৪ অগাস্ট ২০২২ রবিবার বিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের জন্য নবীনবরণ এবং এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি উদয় কুমার। তিনি বলেন, এই এলাকার ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষিত করে তােলার জন্য বিদ্যালয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। নবীন শিক্ষার্থীদের তিনি মনােযােগ দিয়ে পড়াশােনা করার আহ্বান জানান এবং ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সফলতা কামনা করেন। এ বছর বিদ্যালয়টির মানবিক শাখা থেকে ত্রিশ জন, বিজ্ঞান শাখা থেকে ষাট জন এবং ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে পঁচিশ জনসহ সর্বমােট একশ পনেরাে জন পরীক্ষার্থী আগামী ২রা সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। “ক” উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অজয় ত্রিপুরা এই নবীনবরণ ও বিদায়-সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে অন্যান্য ব্যক্তির মধ্যে বক্তৃতা করেন বিশিষ্ট সমাজকর্মী ললিত সরকার, “ক” প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহিতুল আলম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে অনেক শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষার্থীদের মনােজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে এ দিনের সাড়ম্বর আয়ােজন সমাপ্ত হয়। প্রতিবেদনের শিরোনাম : “ক” বিদ্যালয়ে নবীন বরণ ও বিদায়-সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত তৈরির তারিখ: ১৬ অগাস্ট, ২০২২ প্রতিবেদন তৈরির সময়: সন্ধ্যা ৭টা |
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম:
কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান তাঁর প্রতিষ্ঠানে জাতীয় দিবস পালন বা স্কুলের কোন সমস্যার বিবরণ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ করে থাকেন। এজন্য তিনি একজন শিক্ষার্থীকে প্রতিবেদনটি লেখার দায়িত্ব দিয়ে থাকেন, যে প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবেদনটি লিখে থাকে ।
যেমন, ধরো, তুমি ‘ক’ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিজয় দিবস উপলক্ষে তোমাদের বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করার অনুমতি চেয়ে প্রতিবেদন রচনা কর।
শুরুটা হয় এরকম:
*বরাবর,
প্রধান শিক্ষক,*
দিয়ে এ জাতীয় প্রতিবেদন শুরু করতে হয়। এরপর প্রসঙ্গ অনুযায়ী শিরোনাম লিখে বিষয়বস্তু ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করতে হবে। পত্র শেষে প্রধান শিক্ষক বরাবর একটা খাম দেওয়া যেতে পারে। না দিলেও সমস্যা হবে না। একটি কাঠামো মেনে লিখলে পুরোটা ব্যাপার সেজে থাকবে-
প্রশ্ন: তোমার বিদ্যালয়ে উদযাপিত ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ অনুষ্ঠানের ওপর একটি প্রতিবেদন তৈরি কর।
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৬
প্রধান শিক্ষক,
‘গ’ স্কুল, ঢাকা।
বিষয় : বিদ্যালয়ে আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ এর অনুষ্ঠানমালা সম্পর্কে প্রতিবেদন।
মহোদয়,
সম্প্রতি সমাপ্ত … (অনুষ্ঠানের বিবরণ, শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষা, অনুষ্ঠানসূচী সহ সারমর্ম উল্লেখ করে বেশ বিস্তারিতভাবেই প্রেক্ষাপট তুলে ধরতে হবে)
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা :
প্রতিবেদনের শিরোনাম : ‘গ’ স্কুলে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ উদযাপিত।
তৈরির তারিখ :
প্রতিবেদন তৈরির সময় :
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নমুনা
প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়ম অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্রতিবেদন রচনার একটি নমুনা:
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্রতিবেদন রচনা
১৬ জুলাই, ২০২২
বরাবর, প্রধান শিক্ষক, “ক” বিদ্যালয়, নেত্রকোনা। বিষয় : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন সম্পর্কিত প্রতিবেদন। সূত্র : আদেশ নং- অ, আ, ম, ম, ক. – ১৬/২২ জনাব, আপনার আদেশক্রমে বিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়ােজিত অনুষ্ঠানের একটি প্রতিবেদন আপনার সদয় অবগতির জন্য পেশ করছি। “ক” বিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন প্রতিবছরের ন্যায় এবারও “ক” বিদ্যালয়ে যথাযােগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত হয়েছে। বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্তরিক সহযােগিতা ও শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে দিবসটি স্বকীয় মহিমায় উজ্জ্বল হয়ে উঠে। ভাের ৬টায় প্রধান শিক্ষকের নেতৃত্বে প্রভাতফেরির মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা খুব ভােরে ঘুম থেকে উঠে বিদ্যালয়ে এসে হাজির হয়। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকমণ্ডলী উপস্থিত হওয়ার পর নগ্ন পায়ে শােভাযাত্রা শুরু হয়। এ সময় সবার বুকেই কালাে ব্যাজ শােভা পাচ্ছিল। বিদ্যালয়ে স্থাপিত শহিদ মিনারের উদ্দেশে যাত্রাকালে সকলের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়- ‘আমার ভায়ের রক্তে রাঙানাে একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি?’ এ সময় এক ভাবগম্ভীর পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রভাতফেরিটি শহিদ মিনারের পাদদেশে উপনীত হলে সর্বপ্রথম বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, এরপর শিক্ষকমণ্ডলী এবং সবশেষে শিক্ষার্থীরা একে একে বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। পরে শহিদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মােনাজাত করা হয়। মােনাজাত পরিচালনা করেন বিদ্যালয়ের ধর্মশিক্ষক জনাব আফজাল হােসেন। সকাল দশটায় বিদ্যালয় মিলনায়তনে একুশ উপলক্ষে আলােচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। আলােচনা সভায় বক্তারা বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনাই বাঙালি জাতীয়তাবাদের মূল উৎস। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের সূত্র ধরেই পরবর্তীতে বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন ও উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ঘটে। এরই ফলশ্রুতিতে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র লাভ করতে সক্ষম হই। প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যক্ষ আবদুল মজিদ বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারিকে আমরা কেবল ভাষার অধিকার রক্ষার লড়াই ভাবলে ভুল করব। একুশ মানে মাথা নত না করা। একুশ হলো শোষকের বিরুদ্ধে শােষিতের, অসুন্দরের বিরুদ্ধে সুন্দরের ও অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলাের চিরন্তন সংগ্রামের স্মারক। সভাপতির বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক বলেন, ভাষাশহিদরা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। এই দিনে আমাদের সব রকম অন্যায়, অত্যাচার শোষণ ও নিষ্পেষণের বিরুদ্ধে মাথা উচু করে দাঁড়ানাের শপথ নিতে হবে। আলােচনা পর্ব শেষে শুরু হয় এক মনােজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। একুশের গান, কবিতা আবৃত্তি, বিতর্ক প্রতিযােগিতার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি উপভােগ্য হয়ে উঠে। সবশেষে ভাষা আন্দোলনের উপর মুনীর চৌধুরীর লেখা ‘কবর’ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাণবন্ত অভিনয় মুগ্ধ করে সবাইকে। এরপর প্রধান অতিথি কবিতা আবৃত্তি ও সুন্দর হস্তাক্ষর প্রতিযােগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের নৈপুণ্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন। একুশে ফেব্রুয়ারির দিনটি আমাদের জন্য বেদনাবিধুর হলেও দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে তা বিশেষ তাৎপর্যমণ্ডিত হয়ে উঠে। বিনীত প্রতিবেদক মানিক দশম শ্রেণি, মানবিক বিভাগ। “ক” বিদ্যালয়, নেত্রকোনা। প্রতিবেদনের শিরোনাম : “ক” বিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন তৈরির তারিখ: ১৬ জুলাই, ২০২২ প্রতিবেদন তৈরির সময়: সন্ধ্যা ৭টা |
তদন্ত প্রতিবেদন লেখার নিয়ম:
সাধারন প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবেদন লেখার নিয়মের সাথে তদন্ত প্রতিবেদন লেখার খানিকটা মিল রয়েছে। তবে সংবাদ প্রতিবেদনের সাথে এটা মিলবে না। এতে লেখকের ব্যক্তিগত মতামতের সম্পর্কে লিখতে হয়। দায়িত্ব প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করতে হয়।
প্রতিবেদনের শুরুতে ঘটনা ব্যাখ্যা করার পর ঘটনার পুুনরাবৃত্তি প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে প্রতিবেদককে জানাতে হয়।
একটি কাঠামো লক্ষ্য করে দেখলে পুরোটা বিষয় আরো পরিষ্কার হবে।
প্রশ্ন: তোমার এলাকায় লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট সম্পর্কে একটি সংবাদ প্রতিবেদন রচনা কর।
বিদ্যুৎ বিভ্রাট : প্রয়োজন আশু প্রতিকার
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা : লোডশেডিং ঢাকা শহরের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা…(তিন থেকে চার লাইন)
ঢাকা শহরে বিদ্যুৎ সার্বক্ষণিক প্রয়োজনীয়… (ব্যাখ্যা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে কমপক্ষে দশ লাইন তো লেখাই উচিত)
*শেষ প্যারা দুই থেকে তিন লাইনে হবে যেখানে কিনা পুরোটা বিষয়ের সারমর্ম থাকবে।*
প্রতিবেদকের নাম ও ঠিকানা : ‘খ’
৩/৩ মতিঝিল, ঢাকা।
প্রতিবেদনের শিরোনাম : বিদ্যুৎ বিভ্রাট : প্রয়োজন আশু প্রতিকার
তৈরির সময় : সন্ধ্যা ৭:০০ টা
তৈরির তারিখ : জানুয়ারি ০১, ২০১৫
আবার,
মনে করো, মহাসড়কের কোন একটি স্থানে বার বার সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ঘটে থাকে। কারণ উদঘাটনের জন্য একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত কর।
তারিখ : আগস্ট ০১, ২০১৫
জেলা প্রশাসক
যশোর
বিষয় : সড়ক দুর্ঘটনা সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রণয়ন।
মহোদয়
আপনার পত্র …………তদন্ত প্রতিবেদনটি পেশ করা হলো। (দুই থেকে তিন লাইন)
‘ঘ’ বারী
৩/৩ উত্তর যাত্রাবাড়ি
ঢাকা।
সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু আর কত !!
- কাঠামো অবলম্বন করে এবং শেষের দিকে প্রতিকার পয়েন্ট করে লিখতে হবে*
প্রতিবেদকের নাম :
প্রতিবেদকের ঠিকানা : ৩/৩ উত্তর যাত্রাবাড়ি
ঢাকা।
প্রতিবেদনের শিরোনাম : সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু আর কত !!
তৈরির সময় : সন্ধ্যা ৭ টা
তৈরির তারিখ : আগস্ট ০১, ২০১৫
এসব নিয়ম মেনে, একটু বুদ্ধি করে এবং সময় স্বল্পতার কথা বিবেচনা করে যদি প্রতিবেদন লেখা যায়, তবে পরীক্ষক খুশি হয়ে শতভাগ নম্বর দিতেও দ্বিধাবোধ না করাটাই স্বাভাবিক।
ছাত্র সমাজের উন্নতির পরিপূরক হিসেবে কম্পিউটারের উপর প্রতিবেদন রচনা
ছাত্রজীবনে কম্পিউটারের গুরুত্ব
আসিফ খান, ঢাকা, ১৬ অগাস্ট, ২০২২ ॥ যুগে যুগে বিজ্ঞান মানুষের হাতে তুলে দিয়েছে অভাবনীয় সব আবিষ্কার। এইসব আবিষ্কার মানুষের জীবনযাত্রাকে ক্রমে সহজ থেকে সহজতর করে তুলেছে। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বিস্ময়কর এবং কার্যক্ষমতাসম্পন্ন আবিষ্কার হলো কম্পিউটার। আধুনিক কম্পিউটার একই সাথে তথ্য-উপাত্ত গ্রহণ, গণনা, বিশ্লেষণসহ সকল ধরণের কাজ করতে পারে। আধুনিক সভ্যতার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে ছাত্র সমাজের উন্নতির পরিপূরক হিসেবে কম্পিউটার শিক্ষা অপরিহার্য। কম্পিউটারের সঠিক এবং ইতিবাচক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হলে কম্পিউটার সম্পর্কিত জ্ঞান অপরিহার্য। মানুষ যতবেশি কম্পিউটার সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জন করবে, কম্পিউটারের অপব্যবহার ততো কমে আসবে। আর কম্পিউটারের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলেই দেশ ও জাতির অগ্রগতি ত্বরান্বিত হবে। কারণ কম্পিউটারের মতো এক অন্যতম প্রযুক্তি বিজ্ঞানকে বাদ দিয়ে আধুনিক সভ্যতা একবারেই অচল। |
এলাকার সড়কের দুরবস্থা সংক্রান্ত সংবাদ প্রতিবেদন
সড়কের বেহাল দশা: যাত্রীদের দুর্ভোগ
শিহাব আলম, চৌগাছা (যশোর), ১৬ অগাস্ট ২০২২ ॥ যশোরের চৌগাছা উপজেলার কুতুবপুর থেকে মাগুরার মনােহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ পর্যন্ত শহিদ মুক্তিযােদ্ধা একরামুল হক সড়কটি চলাচলের অযােগ্য হয়ে পড়েছে। প্রায় এক যুগ ধরে সড়কটির কোনাে সংস্কার কাজ হয়নি। সড়কের এ বেহাল দশায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগ পােহাচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, চৌদ্দ কিলােমিটার দীর্ঘ সড়কটির পুরােটাই বড়াে বড়াে গর্ত ও খানাখন্দে ভরা। কায়েমকোলা বাজার থেকে মােহাম্মদপুর ইউনিয়নের নগরপাড়া সেতু পর্যন্ত দুই কিলােমিটার অংশে দুই পাশের মাটি সরে গেছে। প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে যশোরের ঘোপ ও কুতুবপুর, মাগুরার মনােহরগঞ্জ ও শালিখা এবং খুলনার মনোহারি উপজেলার হাজার হাজার বাসিন্দা চলাচল করে। এছাড়া কমপক্ষে ত্রিশটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ পথে যাতায়াত করে থাকে। এলাকাবাসী জানান, সড়কটির তিন কিলােমিটার ঘোপ এবং বাকি নয় কিলােমিটার শালিখা উপজেলায় পড়েছে। বিগত ২০১৯ সালের বন্যায় সড়কটির সুরকির স্তর দেবে গিয়ে বালু বের হয়ে আসে এবং সৃষ্টি হয় খানাখন্দের। এরপর প্রতি বর্ষায় বৃষ্টিপাতে পানি ও কাদায় সড়কটি একাকার হয়ে যায়, যা এখন চলাচলের অযােগ্য হয়ে পড়েছে। গত বুধবার একটি পিকআপ ভ্যান মাছরাঙা গ্রামের কাছে রাস্তার গর্তে পড়ে যায়, এতে চালকসহ তিন জন যাত্রী আহত হন। শালিখা ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ মানুষ মনে করে, সড়কটি নিয়ে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ দীর্ঘদিনের। অথচ এর সমাধানে কর্তৃপক্ষের কোনাে নজর নেই। এটি মেরামতের জন্য স্থানীয় লােকজন সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে একাধিকবার আবেদন করলেও কোনাে প্রতিকার পায়নি। এলাকাবাসীর দাবি, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে জনদুর্ভোগ কমাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে। |
কলেজের নবীন বরণ অনুষ্ঠান সম্পর্কে প্রতিবেদন
১৬ জুলাই, ২০২২
বরাবর, প্রধান শিক্ষক, “ক” কলেজ, ঢাকা। বিষয়: কলেজের নবীন বরণ অনুষ্ঠান উদযাপন সম্পর্কিত প্রতিবেদন। সূত্র : আদেশ নং- অ, আ, ম, ম, ক. – ১৬/২২ জনাব, আপনার আদেশক্রমে বিদ্যালয়ে কলেজের নবীন বরণ অনুষ্ঠান উদযাপন সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদন আপনার সদয় অবগতির জন্য পেশ করছি। “ক” কলেজের নবীন বরণ অনুষ্ঠিত ঢাকার অদূরে “ক” কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের উৎসাহ উদ্দীপনা আর নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে নবীন বরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার কলেজ ক্যাম্পাসে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আরিফুর রহমানের সভাপতিত্বে এক অনুষ্ঠানে নবাগত শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেয় কলেজ প্রশাসন। অনুষ্ঠানের প্রথমে অতিথিরা নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। বক্তারা কলেজের গৌরবের উজ্জ্বল ইতিহাস শিক্ষার্থীদের সামনে তুলে দেন। তারা বলেন, এখানে যারা ভর্তির সুযোগ পেয়েছে তারা নিঃসন্দেহে মেধাবীদের মধ্যে অন্যতম। শুধু ভালো শিক্ষার্থী হলেই চলবে না, সকলকে দেশপ্রেমিক হতে হবে, ভালো মানুষ হতে হবে। সন্ত্রাসের মাধ্যমে আজকে আমাদের মেধাবী সন্তানদের নষ্ট করে দেওয়া হচ্ছে। কোনো রকম নেশার সঙ্গে নিজেকে না জড়ানোর আহ্বান জানান বক্তারা। একইসাথে সকলকে দুর্নীতিমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সোনার বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, জাতিকে দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে নতুন প্রজন্মকে কাজে লাগাতে হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাভার পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম মানিক মোল্লা, বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন শিক্ষানুরাগী মো. আলী হোসেন প্রমুখ। বিনীত প্রতিবেদক পার্থ দ্বাদশ শ্রেণি, বিজ্ঞান বিভাগ। “ক” কলেজ, ঢাকা। প্রতিবেদনের শিরোনাম : “ক” কলেজের নবীন বরণ অনুষ্ঠিত তৈরির তারিখ: ১৬ অগাস্ট, ২০২২ প্রতিবেদন তৈরির সময়: সন্ধ্যা ৭টা |
সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদন রচনা
লালবাজারে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫ : আহত ২০
রংপুর প্রতিনিধি: গতকাল ৫ সেপ্টেম্বর রংপুর জেলার লালবাজার এলাকায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছে। জানা যায়, রংপুর জেলা শহর থেকে পাঁচ কি.মি. দূরে লালবাজার নামক স্থানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। রড বােঝাই একটি ট্রাক ৩০ কি.মি. বেগে রংপুরের দিকে যাচ্ছিল। লালবাজারের কাছাকাছি এলে হঠাৎই তিনটা গরু নিয়ে কয়েকজন স্থানীয় লােক রাস্তা পার হতে উদ্যত হয়। তাদেরকে বাঁচাতে গিয়ে ট্রাকটি বেশ জোরে ব্রেক কষে থেমে যায়। একটা গরু ট্রাকের সাথে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যায় এবং কিছুক্ষণ পর মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে মারা যায়। কিন্তু পেছনে আসছিল একটি যাত্রীবাহী বাস। ঘটনার আকস্মিকতায় চালক তাৎক্ষণিকভাবে ব্রেক কষতে না পারায় বাসের সামনের অংশ রডের সাথে গেঁথে যায়। ফলে ড্রাইভারসহ সামনের অংশে বসে থাকা ৮ জন যাত্রী গেঁথে যায় রডের সাথে । মারাত্মকভাবে আহত হয় ২০ জন যাত্রী। অন্যেরা কোনােরকমে বাস থেকে বেরিয়ে চিঙ্কার শুরু করলে আশেপাশের ও বাজারের লােকজন এগিয়ে আসে। আর্তচিৎকারে বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। ৪/৫ জন সাহসী লােক রডে গেঁথে থাকা পুরুষ ও মহিলাদের বের করে আনে। দুটো গাড়ি থামিয়ে তাদেরকে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে তুলে দেওয়া হয়। এ সময় ৫ জন মারা যায়। বাজারের ক্লিনিকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা দুটো অ্যামবুলেন্স ক্ষুব্দ জনতা জোর করে নিয়ে আসে। মারাত্মক আহতদের হাতে তুলে দিয়ে রংপুর পাঠানাে হয়। বাকিরা ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চলে যায়। জনতা ট্রাক ভাংচুর করে, রড নামিয়ে ফেলে দেয় রাস্তার নিচে। রডের কোনােটিরই অগ্রভাগে লাল কাপড় বাধা ছিল, একেবারে খােলা ছিল। এই ভয়াবহ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জন্য মূলত অসচেতনতাই দায়ী। |
বিদায় অনুষ্ঠানের প্রতিবেদন
১৬ জুলাই, ২০২২
বরাবর, প্রধান শিক্ষক, “ক” বিদ্যালয়, নেত্রকোনা। বিষয় : বিদায় অনুষ্ঠান উদযাপন সম্পর্কিত প্রতিবেদন। সূত্র : আদেশ নং- অ, আ, ম, ম, ক. – ১৬/২২ জনাব, আপনার আদেশক্রমে বিদ্যালয়ে বিদায় অনুষ্ঠান উদযাপন উপলক্ষে আয়ােজিত অনুষ্ঠানের একটি প্রতিবেদন আপনার সদয় অবগতির জন্য পেশ করছি। ক” বিদ্যালয়ে বিদায় অনুষ্ঠান উদযাপন মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভায় অবস্থিত সিদ্দিকা বেগম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠান শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা ১১টায় বিদ্যালয় চত্বরে এ বিদায় অনুষ্ঠান ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুল হক পাটোয়ারী। সিনিয়র শিক্ষক রফিকুল ইসলামের পরিচালনায় বিদায়ানুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন- ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান। বক্তব্য রাখেন- ম্যানেজিং কমিটির সদস্য গোলাম হোসেন, আলমগীর সরকার, আলাউদ্দিন, জেসমিন আক্তার, হাজী শহিদ উল্লাহ, বাতেন মোল্লা, সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা কামাল উদ্দিন, মনির হোসেন, আবু নাসের, মফিজুল ইসলাম, রোকেয়া আক্তার, পার্বতী রাণী দাস, সাবিনা ইয়াছমিন, সালাউদ্দিনম প্রমুখ। বিদায়ী ছাত্রীদের মধ্যে থেকে বক্তব্য দেয় মরিয়ম আক্তার ও অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০ম শ্রেনীর ছাত্রী সাদিয়া আফরিন ইভা। বক্তব্য শেষে বিদায়ী ছাত্রীদের সফলতা কামনা করে মিলাদ ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান বলেছেন, আজকের শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যত। আগামী দিনে তোমাদেরকেই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে হবে। দেশে সু-শাসন প্রতিষ্টায় তোমাদেরই যোগ্য নাগরিক হিসেবে তৈরি হতে হবে। তবেই দেশ দূর্নীতি ও সন্ত্রাস মুক্ত হবে।বর্তমান সরকার শিক্ষা বান্ধব সরকার। শিক্ষা ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের অবহেলিত এলাকায় স্কুল প্রতিষ্ঠা করে হতদরিদ্র পরিবারের মেয়েদের পড়ালেখার সুযোগ সৃষ্টি করে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। যার সুফল দেশের স্কুল কলেজের ছেলে-মেয়েরা ভোগ করে আসছে। বিনীত প্রতিবেদক সারাহ দশম শ্রেণি, মানবিক বিভাগ। “ক” বিদ্যালয়, নেত্রকোনা। প্রতিবেদনের শিরোনাম : “ক” বিদ্যালয়ে বিদায় অনুষ্ঠান উদযাপন তৈরির তারিখ: ১৬ জুলাই, ২০২২ প্রতিবেদন তৈরির সময়: সন্ধ্যা ৭টা |
সড়ক দুর্ঘটনার কারণ ও প্রতিকার প্রতিবেদন
সড়কের বেহাল দশা: যাত্রীদের দুর্ভোগ
হাসিব কামাল, মিরপুর (ঢাকা), ১৬ অগাস্ট ২০২২ ॥ সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট বাংলাদেশের পরিবহন সেক্টরে সীমাহীন অব্যবস্থারই চিত্র। পত্রিকার পাতা ও টিভির পর্দায় আমরা প্রতিনিয়ত দেখি সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র। যন্ত্রদানবের তাণ্ডবতায় প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে শিশু, ছাত্র, যুবক, বৃদ্ধ ও নানা বয়স ও শ্রেণির লোকের। হৃদয় কেঁপে ওঠে যখন দেখি একই পরিবারের পাঁচ-ছয়জন একই সঙ্গে নিহত হয়। যানজট তো প্রতিনিয়ত প্রতি মুহূর্তে নাগরিক জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় সময় কাটাতে হয়। কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়। শারীরিক-মানসিক প্রতিকূলতায় মানুষের কষ্টের সীমা ছাড়িয়ে যায়, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ওপর নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হয়। ট্রাফিক দুর্ঘটনা ও যানজট হ্রাস করার জন্য পুলিশ, বিআরটিএ এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রচেষ্টাও আমরা লক্ষ করি। পুলিশ তো প্রায় দিনরাত ২৪ ঘণ্টা অমানবিক পরিশ্রম করেও মানুষকে স্বস্তি দিতে পারছে না। মাঝেমধ্যে ট্রাফিক সপ্তাহ, ট্রাফিক শৃঙ্খলা পক্ষ, অবৈধ ও ফিটনেসবিহীন যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান ইত্যাদি পদক্ষেপ নিচ্ছে। কিন্তু ফলাফল শূন্য। মহানগর, শহর ও মহাসড়কে যানজটের চিত্র নিত্যদিনের। পুলিশ ও বিভিন্ন সংস্থার এত উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা সত্ত্বেও কেন অবস্থার কোনো উন্নতি হচ্ছে না? যানজট কমছে না, দুর্ঘটনাও কমছে না, মৃত্যুর মিছিলে নিহতদের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এর উত্তর একটাই। কেউ প্রকৃত সমস্যা চিহ্নিত করে, সমস্যার কারণগুলো বন্ধ করার জন্য কোনো স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা নিচ্ছে না। শুধু অ্যাডহক ও ক্ষণকালের জন্য কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে। ওই সব পদক্ষেপ আনুষ্ঠানিকতা, লৌকিকতা ও প্রচারণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে। এলাকাবাসীর দাবি, গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করে জনদুর্ভোগ কমাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে। |
মাদকাসক্তি ও তার প্রতিকার প্রতিবেদন
মাদকের ভয়াল থাবা
হাসিব কামাল, মিরপুর (ঢাকা), ১৬ অগাস্ট ২০২২ ॥ বর্তমানে সমাজ ও দেশের জন্য মাদকাসক্তি মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদকের নীল নেশা আজ তার বিশাল থাবা বিস্তার করে চলেছে এ দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। এ মরণনেশা থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করা না গেলে এ হতভাগ্য জাতির পুনরুত্থানের স্বপ্ন অচিরেই ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্মের উল্লেখযোগ্য অংশ আজ এক সর্বনাশা মরণনেশার শিকার। সাম্প্রতিককালে আন্তর্জাতিক ড্রাগ ব্যবসায়ীরা নানা ধরণের মাদকের ব্যবসা ফেঁদেছে। এসব মাদকের ব্যবহার পদ্ধতিও নানারকমের। ধূমপানের পদ্ধতি, নাকে শোকার পদ্ধতি, ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ত্বকের নিচে গ্রহণের পদ্ধতি এবং সরাসরি রক্তপ্রবাহে অনুপ্রবেশকরণ পদ্ধতি। গবেষণালব্ধ অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, বহুবিধ কারণে মানুষ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। যেমন- অবাঞ্ছিত আনন্দ লাভেরর বাসনা, নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের প্রয়াস, মাদকের কুফল সম্পর্কে অজ্ঞতা, প্রতিকূল পারিপার্শ্বিক পরিবেশ, বন্ধু-বান্ধব ও সঙ্গীসাথিদের প্রভাব, পারিবারিক পরিমণ্ডলে মাদকের প্রভাব, কৈশাের ও যৌবনের বেপরােয়া মনােভাব, বেকারত্ব, হতাশা ও আর্থিক অনটন, মানসিক অশান্তি, মাদকের সহজলভ্যতা, নৈতিক শিক্ষার অভাব ইত্যাদি। তাছাড়া কৌতূহল মেটাতে ও কুসঙ্গে পড়ে যারা একবার বা দু’বার মাদক গ্রহণ করেছে, তারা আর এর সংস্রব থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। নৈরাজ্যের তীব্র যন্ত্রণায় দগ্ধীভূত হয়েও যুবসমাজ বেছে নেয় মাদকাসক্তি এর মাধ্যমে আত্মহননের পথ। মাদক সমস্যা মানুষের সৃষ্ট শারীরিক, মানসিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমস্যা। মানবসম্পদ উন্নয়নে এ সমস্যা এক বিরাট বাধা। মাদকের অপব্যবহারে ব্যক্তি তাে বটেই, পুরাে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্র নানাভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। মাদকাসক্তির ফলে জনশক্তি দুর্বল ও নির্জীব হয়ে পড়ছে। মাদকের নিষ্ঠুর ছােবলে অকালে ঝরে যাচ্ছে বহু তাজা প্রাণ এবং অঙ্কুরেই বিনষ্ট হচ্ছে বহু তরুণের সম্ভাবনাময় উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। মাদকাসক্তির করাল গ্রাস থেকে পৃথিবীর মানুষকে বাঁচানো জরুরি। এ অবস্থা থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করতে হবে। কঠোর ব্যবস্থার মাধমে বন্ধ করতে হবে মাদকদ্রব্যের চোরাচালান। সুস্থ, সুন্দর, আনন্দ-উচ্ছল সমাজজীবন গড়ে তােলার লক্ষ্যে মাদকদ্রব্য ব্যবহার রােধ করার বাস্তব ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। মনে রাখতে হবে, মাদকাসক্তির করাল গ্রাস থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করার দায়িত্ব দল-মত নির্বিশেষে সবার। |
রাস্তা সংস্কারের জন্য প্রতিবেদন
ভঙ্গুর রাস্তা, দুর্ভোগ নাগরিকের
হাসিব কামাল, মিরপুর (ঢাকা), ১৬ অগাস্ট ২০২২ ॥ কোম্পানীগঞ্জ-দাগনভূঁইয়া সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত যানবাহন চলাচলের অনুপযােগী হয়ে পড়েছে। অথচ এটি ফেনী এবং নােয়াখালী দুটো জেলার গুরুত্বপূর্ণ সংযােগ সড়ক। প্রায় পাঁচ লাখ লােকের যাতায়াতের একমাত্র সড়কটি গত বছর বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিদিন ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ দেশের দূরদূরান্ত থেকে যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে এই ভাঙা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করছে। ইতােমধ্যে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে এ সড়কে। কয়েকদিন আগে দুধমুখা পুল ও মুন্সীবাড়ির দরজায় দুটি গাড়ি দুর্ঘটনায়-কবলিত হয়ে পাঁচজন লােক মারা গেছে এবং আহত হয়েছে শতাধিক। বর্ষার সময় রাস্তাটি চলাচলের জন্য একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়ে। মাঝে মাঝে খোঁড়াখুঁড়ি করা হলেও কাজ তেমন হয় না। শীত মৌসুমে ধুলাবালির কারণেও রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। এ ধুলাবালির কারণে এলাকার পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষণের শিকার হচ্ছে। সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে, এ রাস্তা দিয়ে যারা নিয়মিত চলাচল করেন তাদের অনেকে এলার্জি, শ্বাসকষ্ট, চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন। আসন্ন বর্ষার আগে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি যদি সংস্কার না করা হয়, তবে যানচলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাবে। তাই কোম্পানীগঞ্জ-দাগনভূঁইয়া সড়কটি দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিপাত করা উচিত। |