দেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যেই আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়েছে। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছে ৪২ জন।
সোমবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে সারাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ২৩৩ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ২১৩ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ২০ জন। এ নিয়ে চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সংখ্যা দাঁড়াল ১০ হাজার ৯০ জনে। তবে তাদের মধ্য থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে আট হাজার ৮৯৫ জন রোগী।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নতুন ২৩৩ জনসহ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৫০ জনে। ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছে ১ হাজার ৪ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১৪৬ জন।
গত জানুয়ারিতে ৩২ জনের দেহে ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বছর শুরু হয়। জুনে এটা ১৭২ জনে ওঠে। জুলাই মাসে সেটিই হয়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ২৮৬ জন। তাতে সব মিলিয়ে এ বছরের প্রথম সাত মাসে ডেঙ্গুতে মোট শনাক্ত দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৫৮ জন। জুলাই থেকেই পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে। আগস্টে এসে চিত্রটি উদ্বেগজনক হয়ে পড়ে। আগস্টের চার সপ্তাহে ডেঙ্গু রোগী দাঁড়িয়েছে সাত হাজার ৪৩২ জন।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে চলতি বছর ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বছরের প্রথম সাত মাসে ১২ জনের মৃত্যু হলেও পরের মাসের মাত্র ২৯ দিনে ৩০ জনের মৃত্যু হয়।
এর আগে ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করে। সেই বছর এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। মারা যায় ১৪৮ জন। ডেঙ্গুতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় ২০০২ সালে, সেবার ৫৮ জনের মৃত্যুর সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ ছাড়া ২০০১ সালে ৪৪ জন মারা যায়। ২০১৯ সালে ডেঙ্গু ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করলেও করোনা মহামারি মধ্যে ২০২০ সালে ডেঙ্গু তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে এবার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী।