ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় দুই রাজ্য আসাম এবং মেঘালয়ে গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণের কারণে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় দুই রাজ্যে এখন পর্যন্ত অন্তত ৬২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
এই দুই রাজ্যে সোমবার (২০ জুন) আরও ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাষ দিয়ে অরেঞ্জ সতর্কতা জারি করেছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি)।
রোববার (১৯ জুন) দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আসামের বন্যা পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর আকার ধারণ করেছে এবং নতুন করে অনেক এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আসামের ৩২টি জেলার ৪ হাজার ২৯১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
গত ছয় দিন ধরে আসামের বিভিন্ন প্রান্তে ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। রাজ্যের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, রাতভর টানা বৃষ্টির কারণে রাজ্যের রাজধানী গুয়াহাটির অনেক এলাকা ডুবে গেছে। ব্রহ্মপুত্রের পানির প্রবাহ বন্ধ করতে স্থানীয় প্রশাসন গুয়াহাটির ভারলু সেতুর সব স্লুইস গেট বন্ধ করে দিয়েছে।
এদিকে, আসামের প্রতিবেশী রাজ্য মেঘালয়েও বন্যায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ভূমিধসের কারণে এই রাজ্যের দু’টি মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। রাজ্যের প্রায় ৫ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
বন্যায় মেঘালয়ের পূর্ব জৈন্তিয়া পাহাড়ের মহাসড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা বন্যায় সড়কটি পরিদর্শনে গিয়ে বলেছেন, আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এই রাস্তায় ভারী যানবাহনের চলাচল শুরু হবে। তবে হালকা যানবাহনের জন্য বিকল্প পথ রয়েছে।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেছেন, বন্যায় আটকা পড়া লোকজনকে সহায়তায় সরকারি সব সংস্থা কাজ করছে। চলতি সপ্তাহে মেঘালয়ে বন্যায় কমপক্ষে ১৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন এই মুখ্যমন্ত্রী।
গত শুক্রবার থেকে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে ভারতের আরেক রাজ্য ত্রিপুরায়ও বন্যা দেখা দিয়েছে। বন্যায় এই রাজ্যে ইতোমধ্যে ১০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ভূমিধসের কারণে রাজ্যের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। রাজ্য সরকার বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে সেখানে জরুরি সহায়তা পৌঁছানোর জন্য ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।