পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই প্রধান ইমরান খান আগামী ২-৩ দিনের মধ্যে আবারও রাজনৈতিক অঙ্গনে ফিরছেন বলে জানিয়েছেন পিটিআই নেতা হাম্মাদ আজহার। সরকার বিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে লাহোরের শওকত খানম হাসপাতালে ভর্তি আছেন ইমরান খান।
বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদের উদ্দেশ্যে লংমার্চ নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদে হামলার শিকার হন সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রী। হত্যার উদ্দেশ্য তাকে বহনকারী কনটেইনারে গুলি ছোড়া হয়। সে ঘটনায় পায়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এরপর থেকে লাহোরের শওকত খানম হাসপাতালে ভর্তি আছেন পিটিআই চেয়ারম্যান। তবে তিনি বেশিদিন হাসপাতালে থাকবেন না এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন তাদের দলের নেতা হাম্মাদ আজহার।
ইমরানের ফেরার ব্যাপারে পিটিআই নেতা আজহার শওকত খানম হাসপাতালে সংবাদকর্মীদের বলেছেন, ইমরান খান ২-৩ দিনের মধ্যে ফিরে আসছেন।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, পিটিআই নেতা আজহার জানিয়েছেন, ইমরানকে হত্যার উদ্দেশ্যে চালানো হামলার বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ অব্যাহত রাখবেন তারা।
এদিকে হামলায় আহত ইমরান খান তাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন তিনজনের দিকে। ওই তিনজনের মধ্যে পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ অন্যতম।
তবে ইমরানের গুপ্তহত্যার চেষ্টায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন তিনি। এমনকি হামলায় জড়িত প্রমাণ হলে রাজনীতি ছাড়ারও ঘোষণা দিয়েছেন শেহবাজ। রোববার (৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বিরোধী নেতা ইমরান খানের হত্যা প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এ ব্যাপারে শনিবার শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘এই ঘটনায় আমার জড়িত থাকার বিষয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া গেলে আমার (প্রধানমন্ত্রীর) পদে থাকারই কোনো অধিকার নেই’। ইমরান খান যে তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন সে বিষয়ে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি বলেও জানান তিনি।
পাকিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাহোরে সাংবাদিকদের শেহবাজ বলেন, ‘যদি এটা (ইমরানের ওপর হামলার প্রমাণ) পাওয়া যায় তাহলে আমি চিরতরে রাজনীতি ছেড়ে দেব।’
শরিফ বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান ‘মিথ্যা ও সস্তা ষড়যন্ত্র’ করে দেশের ক্ষতি করছেন। তিনি সুপ্রিম কোর্টকে ‘গুরুতর’ এই অভিযোগের তদন্তের জন্য একটি পূর্ণ-আদালত কমিশন গঠনের আহ্বান জানান।
শেহবাজ শরিফ বলেন, ‘আমি পাকিস্তানের মাননীয় প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়ালকে একটি পূর্ণ-আদালত কমিশন গঠন করার জন্য অনুরোধ করছি। কারণ একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের পরই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল ফয়সাল হামলায় জড়িত বলে ইমরাননের পক্ষ থেকে যে অভিযোগ সামনে আনা হয় তা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেয় দেশটির সেনাবাহিনী।