খালেদার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে আর করণীয় কিছু নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
logo
ঢাকা, রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে আর করণীয় কিছু নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
অক্টোবর ৩, ২০২৩ ৮:৫০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে আর করণীয় কিছু নেই বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আর করার কিছু নেই।

সোমবার (২ অক্টোবর) সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে তার ছোট ভাই একটি আবেদন করেছিলেন। চিঠি পাওয়ার পরই আইনি জটিলতা থাকায় আবেদনটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যে মতামত এসেছে তা বোধহয় তাদের পক্ষে আসেনি। এবং অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয় বলে আইন মন্ত্রণালয় থেকে আমাদেরকে জানিয়েছে। কাজেই এখন আমাদের আর কোনো করণীয় নেই বলে আমি মনে করছি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি প্রধানের পাঁচ বছরের সাজা হয়। সেদিন থেকে কারাবন্দি হন তিনি। পরে হাইকোর্টে সাজা বেড়ে ১০ বছর হয়। এরপর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আরও সাত বছরের সাজা হয়।

২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে সরকার খালেদা জিয়ার দণ্ড ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে। এরপর প্রতি ছয় মাস পরপর তার মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার। সবশেষ ১২ সেপ্টেম্বর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়।

কারাগার থেকে গুলশানের বাসা ফিরোজার ওঠার পর বেশ কয়েকবার অসুস্থ হন বিএনপি প্রধান। কয়েকবার তাকে হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়।

৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা ও লিভারসিরোসিসে ভুগছেন। এছাড়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতাও রয়েছে তার। এরই মধ্যে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।

সর্বশেষ প্রায় দুই মাস আগে অসুস্থ হলে বিএনপি প্রধানকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে সিসিইউতেও নেওয়া হয়। এখনো হাসপাতালেই আছেন তিনি।

শারীরিক অবস্থায় বেশি খারাপ উল্লেখ করে খালেদা জিয়াকে বিদেশ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়। গত ২৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ভাই আবেদন করলে সেটি পরে মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়টি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই দুই দলের নেতাদের মধ্যে বিতর্ক চলছে। সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দিতে পারে বলে গুঞ্জন চলছিল। এসব গুঞ্জনের মধ্যেই গতকাল আইন মন্ত্রণালয় তাদের মতামত জানিয়ে দেয়। সেখানে তারা খালেদার আবেদনে সাড়া দেয়নি।

সোমবার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খালেদার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আর কিছু করার নেই।

আইনের প্রেক্ষিতে নয়, রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকার খালেদা জিয়াকে বিদেশে যেতে অনুমতি দেয়নি বলে বিএনপি আইন বিষয়ক সম্পাদক যে মন্তব্য করেছেন তার প্রেক্ষিতে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট এটা তো রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে আসে না। একটি যদি অঘটন ঘটে তার বিচার হয়। আমাদের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। সেখানেও আমাদের কোনো কর্তৃত্ব নেই। আইন মন্ত্রণালয় যা মতামত দিয়েছে আপনাদের তা জানিয়ে দিয়েছি। এর বাইরে আমাদের করার কিছু নেই।’

সরকারের সিদ্ধান্ত কি খালেদা জিয়ার পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ওনারা যদি জানতে চান আমরা অবশ্যই জানিয়ে দেবো। তবে এরই মধ্যে উনি জেনে গেছেন। তাদের কোনো কিছু জানার থাকলে, কথা বলতে পারেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত যেটা সেটা পরিবর্তন হওয়ার সুযোগ এই মুহূর্তে আমাদের কাছে নেই।

ভিসানীতি নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ভিসানীতি নিয়ে সরকার কোনো তালিকা পায়নি।

এ সময় সমাবেশ করার জন্য বিএনপিকে আইন মেনে চলার পরামর্শ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

দৈনিক বিবর্তন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।