তাজমহল কি হিন্দু মন্দির!
logo
ঢাকা, বুধবার, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তাজমহল কি হিন্দু মন্দির!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আগস্ট ১২, ২০২২ ৫:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ইউনেস্কোর তালিকায় বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী এই স্থানটি ১৬৩২ থেকে ১৬৫৩ অর্থাৎ তৈরি করতে সময় লেগেছিল ২০ বছর। তবে রাজকীয় এই সৌধের ভেতর জট বাঁধা আছে বেশ কিছু প্রশ্ন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উঠেছে বেশ কিছু অভিযোগ, তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন, বিতর্ক। যার শেষ পরিণতি মামলা, যা জমা পড়েছে ভারতের উত্তর প্রদেশে।

মামলা করার কারণ তাজমহল এর ভেতরে ২২টি তালাবদ্ধ ঘরে আছে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি। তবে কি সম্রাট শাহজাহানের প্রেমের প্রতীক এই সৌধ, প্রাচীন কোন শিব মন্দির? সেই রহস্যের জট খুলতে এলাহাবাদ হাইকোটে পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল।

১২১২ সালে রাজা পরমর্দি দেব ‘তেজো মহালয়’ নামের একটি শিব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যার ওপর নির্মিত হয়েছে তাজমহল। এলাহাবাদ হাইকোর্টের লখনৌ বেঞ্চে বিজেপির মিডিয়া ইনচার্জ রজনীশ সিং এমনটা উল্লেখ করে একটি আবেদন দাখিল করেন। এবং এর সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াকে দায়িত্ব দেয়ার জন্যও আবেদন করেন। তবে তার সেই আবেদন খারিজ করে দেয়া হয়।

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে তিনি স্পষ্ট বলেন, তাজমহলের ভেতরের ২০টি ঘরে ঢুকতে দেয়ার অনুমতি দেয়া হোক। সেখানে অবশ্যই হিন্দু দেবদেবী ও ভাস্কর্য তালাবদ্ধ করে রাখা আছে। ২০১৭ সালে বিজেপির তৎকালীন রাজ্যসভার সাংসদ বিনয় কাটিয়ার দাবি করেছিলেন যে তাজমহল আসলে ‘ তেজো মহালয়’ নামে একটি শিব মন্দির ছিল, যা আসলে একজন হিন্দু শাসক তৈরি করেছিলেন।

এদিকে ভারতের জয়পুরের রাজপরিবারের সদস্য দিয়া কুমারী দাবি করেছিলেন তার পূর্বপুরুষদের জমিতে নির্মিত হয়েছে তাজমহল। তবে বিতর্ক আবারও মাথাচাড়া দেয় ১৯৮৯ সালে পিএন ওক-এর লেখা ‘ট্রু স্টোরি অব তাজ’ বইটি নিয়ে।

যেখানেও এতসব অভিযোগের পক্ষেই লেখা হয়েছিল। বইটিতে স্পষ্ট উল্লেখ্য তাজমহল আসলে ‘তেজো মহালয়’-এর ওপরই নির্মিত। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে এর আগে সুরক্ষিত তাজমহলের অংশে কোনো খননকাজ হয়েছিল কি না, এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন নির্দেশ দিয়েছিল। তবে এই বিতর্কের সমর্থনে বর্তমানে কোনো প্রমাণ না মিললেও এখনো আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন কেউ কেউ।

এ ছাড়া সর্বমহল থেকে অনেকে ঐতিহাসিকবিদ তাজমহলের ভেতরের ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিয়েছেন। কারো মতে, লোহার জাল দিয়ে দুটি সিঁড়ি তৈরি করা আছে, যা যমুনার পাশ দিয়ে বেজমেন্ট যাওয়ার জন্য তৈরি করা হয়।

এবা কোচ নামের একজন শীর্ষ বিজ্ঞানী তাজমহলের কক্ষের ওপরও গবেষণা চালিয়েছেন। ভেতরে সাতটি বড় কক্ষের সামনে আছে কারুকার্য খচিত খিলানা বা তোরণ, যার ভেতর দিয়ে যমুনা দেখা যায়। এবং সম্রাট শাহজাহান অনেক সময় যমুনা নদী দিয়ে নৌকায় তাজমহলের আসতেন। সিঁড়িবাঁধা ঘাট থেকে তাজমহলে ঢুকতেন তিনি।

তবে এতসব কৌতূহল, প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে মোটেও উৎসুক নন ভারতের হাইকোর্টের বিচারকরা। তাজমহলের তালাবদ্ধ সেই ঘরগুলোতে সত্যিই কোনো রহস্য লুকিয়ে আছে, তা মানতে নারাজ বিচারকরা।

দৈনিক বিবর্তন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।