১৯তম ওভারের প্রথম বল, শিরোপা জিততে ৪ রান প্রয়োজন গুজরাট টাইটানসের। ওবেদ ম্যাকয়ের করা বলটিকে গুজরাটের শুবমান গিল সজোরে পুল করলেন, বল উড়ে গিয়ে ঠাঁই পেল সীমানার ওপারে।
গুজরাটের অবিশ্বাস্য অভিষেক মৌসুমের ইতিটা তো এমন রাজসিক ভঙ্গিতেই হওয়া উচিত ছিল, ছক্কা মেরে শিরোপা নিশ্চিত করে যেন সেই দাবিটাই মেটালেন গিল। আর তাতেই রাজস্থান রয়্যালসের দ্বিতীয় শিরোপার অপেক্ষা বাড়িয়ে আইপিএল জিতে নিয়েছে হার্দিক পান্ডিয়ার গুজরাট। ১১ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখেই তারা পৌঁছে গেছে জয়ের বন্দরে।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে গুজরাটের বোলাররাই ম্যাচটি রাজস্থানের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন, ব্যাটারদের কাজ ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার। কারণ দোর্দণ্ড প্রতাপে এবারের আসরের ফাইনালে উঠে আসা গুজরাটের সামনে রাজস্থানের ১৩০ রানের লক্ষ্য যে একেবারেই মামুলি।
তবে অতীত ইতিহাস কিছুটা আশা দিচ্ছিল রাজস্থানকে। কারণ আইপিএলের ফাইনালে এর আগে চারবার আগে ব্যাটিং করা দল ১৫০ বা তার কম রান করেছিল, কোনোবারই রান তাড়া করতে নামা দল সেই লক্ষ্য টপকাতে পারেনি। ২০১৯ সালে রোহিত শর্মার মুম্বাই ইন্ডিয়ানস তো ১২৯ রান করেও রাইজিং পুনে সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে ১ রানে জিতে গিয়েছিল।
তবে রাজস্থান তেমন কিছু করে দেখাতে পারেনি, বলা ভালো গুজরাট করতে দেয়নি। বল হাতে গুজরাট অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া ৪ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৭ রান দিয়ে তুলে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। জস বাটলার, সঞ্জু স্যামসন, শিমরন হেটমায়ারকে ফিরিয়ে রাজস্থানের ব্যাটিং লাইনআপের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছিলেন।
তার সঙ্গে সাই কিশোর, মোহাম্মদ শামি, রশিদ খানরাও রাজস্থানের টুঁটি চেপে ধরেছিল। শেষ পর্যন্ত বাটলারের (৩৫ বলে ৩৯) আর যশস্বী জয়সোয়ালের (১৬ বলে ২২) ইনিংসে ভর করে স্কোরবোর্ডে ১৩০ রান তুলতে সক্ষম হয় তারা।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুতে হোঁচট খেয়েছিল গুজরাট। ৭ বলে ৫ রান করে প্রসিধ কৃষ্ণের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। তবে অপর ওপেনার গিল (৪৩ বলে ৪৫*) এবং যথাক্রমে চার ও পাঁচে নামা অধিনায়ক পান্ডিয়া (৩০ বলে ৩৪) ও ডেভিড ‘কিলার’ মিলারের (১৯ বলে ৩৪*) ঝড়ো ইনিংসগুলোয় চড়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।
রাজস্থানকে হারিয়ে দলটির রেকর্ডেই ভাগ বসিয়েছে গুজরাট। অভিষেক আসরেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কৃতিত্ব এতদিন শুধু রাজস্থানেরই ছিল, ২০০৮ সালে আইপিএলের প্রথম আসরেই সবাইকে চমকে দিয়ে শিরোপা জিতে নিয়েছিল প্রয়াত শেন ওয়ার্নের রাজস্থান।