করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে বন্ধ হয়ে যাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে করোনা বিষয়ে নিজের জন্য নিজেকে সচেতন থাকার তাগিদ দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনে বক্তব্যে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষকদের টিকা দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকদের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অন্য যারা কর্মরত এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের যেন টিকা দেওয়া হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্কুলের ছেলেমেয়েদের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা মেনেই টিকা দেয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি। যার জন্য কিছু ফাইজার টিকা ইতোমধ্যে এসে পৌঁছেছে, আরও পৌঁছাবে। অন্যান্য টিকাও আসছে।
তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি কখনো করোনা একেবারেই কমে যাচ্ছে আবার নতুনভাবে নতুন শক্তিতে এই ভাইরাস আসছে। তবে করোনা আমরা অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। দেখা যাচ্ছে টিকা দেওয়ার পরও অনেকে করোনা আক্রান্ত হন, তবে হয়তো তা মারাত্মক হয় না। এজন্য সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
তিনি বলেন, টিকার কোনো সমস্যা নেই। যেখান থেকে যতভাবে হোক আমরা টিকা নিয়ে আসছি। খুব তাড়াতাড়ি স্কুল কলেজ খুলে দেয়ার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। টিকাদানের ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, করোনা থেকে ভাল হওয়ার পরেও নানা জটিলতা রয়ে যায়। যাদের অন্যান্য রোগ আছে, তাদের ক্ষেত্রে করোনা ঝুঁকি বাড়ায়। এ জন্য সবাইকে নিজের ভালো নিজেকে বুঝে চলতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার আমরা করে যাচ্ছি। আমাদের এই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় আমরা যেভাবে ব্যবস্থা নিয়েছি অনেক উন্নত দেশও সেভাবে পারেনি। আমাদের প্রচেষ্টা সবসময় আছে। আমরা শুরু থেকেই সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনার প্রকোপ এখন কমেছে। কিন্তু সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। এখন ডেঙ্গুর প্রকোপও বাড়ছে। এজন্য তিনি সবাইকে ঘর বাড়ি ও আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দেন।
সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হাসিবুর রহমান ছিলেন কর্মীবান্ধব, মানুষের জন্য কাজ করার আন্তরিকতা তার ছিল। তার এই অকাল মৃত্যু দেশের জন্য ক্ষতি। এই সংসদে বেশ কয়েকজন সদস্যকে হারাতে হয়েছে। বারবার শোক প্রস্তাব নিতে হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনা মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। অনেকে আপনজনের মরদেহ দাফন করেনি, ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতা-কর্মীরা লাফ দাফন করেছে। মানুষের ঘরে অক্সিজেন সরবরাহ করা, খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ তারা করেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি মাসে যাতে এক কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়া যায় সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এ পর্যন্ত (৩০ আগস্ট) এক কোটি ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ১৮ জনকে প্রথম ডোজ এবং ৭৮ লাখ ৪০ হাজার ১৬৯ জনকে দ্বিতীয় ডোজসহ দুই কোটি ৬১ লাখ ২৯ হাজার ১৮৭ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। মজুদ রয়েছে এক কোটি ১৮ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৩ ডোজ। টিকা সংগ্রহ করা এবং সবাইকে বিনামূল্যে টিকা প্রদানের কাজ চলমান রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিমাসে যাতে এক কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিনোফার্মের শিডিউল অনুযায়ী অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে দুই কোটি করে ডিসেম্বরের মধ্যে ছয় কোটি টিকা পাওয়া যাবে।