বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে দুর্নীতি করতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিএনপি মনে করেছিল পদ্মা সেতু করতে পারবে না। কিন্তু আমরা করে দেখিয়েছি। শেখ মুজিবের মেয়ে দুর্নীতি করতে পারে না।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ উদ্বোধনের পর ফরিদপুরের ভাঙ্গার ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়ার পর দুর্নীতির ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে অর্থায়ন গুটিয়ে নেয় বিশ্বব্যাংক। পরে নিজেদের অর্থায়নেই অন্যতম বড় মেগা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে সরকার।
পদ্মা সেতু থেকে বিশ্বব্যাংক সরে যাওয়ার ঘটনায় ড. ইউনূসসহ বেশ কয়েকজন ষড়যন্ত্রে জড়িত বলে প্রধানমন্ত্রী বরাবরই অভিযোগ করে আসছেন।
ফরিদপুরের জনসভায় ড. ইউনূসের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, ব্যাংকের এমডি থাকতে দেইনি বলে সেই ক্ষোভে হিলারি ক্লিনটনকে বলে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিলেন। আমি চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম, বলেছি নিজেদের অর্থে করব, করেছি।
‘বিএনপি মনে করেছিল পদ্মা সেতু করতে পারবে না। কিন্তু আমরা করে দেখিয়েছি। শেখ মুজিবের মেয়ে দুর্নীতি করতে পারে না।-যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ পাশে থাকলে অসাধ্য সাধন করা যায়। পদ্মা সেতু করে দিয়ে সেটা আবারও প্রমাণ করলাম। জাতির পিতা বলেছিলেন, বাংলাদেশের মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। আসলেই পারেনি।
আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য সরকারগুলো দেশের উন্নয়ন করেনি দাবি করে সরকারপ্রধান বলেন, জিয়া-এরশাদ-খালেদা লুটপাট আর দুর্নীতিতে মত্ত ছিল। তাদের সময়ে কেউ ভোট দিতে পারেনি। তারা লুটপাট করে খেয়েছে। আমরা সরকারে এসে সব ধরনের সেবা নিশ্চিত করেছি। কমিউনিটি ক্লিনিক, স্কুল-কলেজ, রাস্তাঘাট করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, মিলিটারি ডিক্টেটরের আমলে কেউ ভোট দিতে পারতো না। কথাই তো আছে, ১০টা হোন্ডা ২০টা গুন্ডা ভোট ঠান্ডা।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ করার জন্য ২০০১ সালে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। কিন্তু বিএনপি ক্ষমতায় এসে বন্ধ করে দেয়। আসলে ধ্বংস করাই তাদের চরিত্র। দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে আবার উদ্যোগ নেই। অনেকে বলেছিল এটা সম্ভব না।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ।
এর আগে সাড়ে ১২টার দিকে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আংশিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। যাত্রী হিসেবে টিকিট কেটে ট্রেনে ওঠেন তিনি। এরপর নিজেই হুইসেল (বাঁশি) বাজান এবং সংকেত দেন ট্রেন ছাড়ার। মাওয়া থেকে ট্রেনে পদ্মা সেতু পার হয়ে ২টা ৪০ মিনিটে ভাঙ্গার জনসভায় যোগ দেন তিনি।
ভাঙ্গা থেকে বিকেল ৪টায় গোপালগঞ্জ যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সাড়ে ৫টায় টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। রাতে টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়িতে থাকবেন শেখ হাসিনা।