বিশ্ব হার্ট দিবস বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর)। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য, ‘ইউজ হার্ট ফর এভরি হার্ট।’ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হবে।
চিকিৎসাশাস্ত্রের পরিভাষায় হৃদরোগকে বলা হয় মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন। হৃদরোগের কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলে থাকেন সচল থাকতে গোটা শরীরের মতো হৃদযন্ত্রেরও অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। আর করোনারি ধমনী হৃদযন্ত্রে ওই অক্সিজেন সরবরাহ করে।
কিন্তু অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অনিয়মিত জীবনযাপনে করোনারি ধমনীর ভেতরের দেয়ালে ফ্যাট জমে যায়। এর ফলে সময়ের সঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফুসফুসে রক্তের সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে কার্ডিয়াক ইস্কেমিয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়, যাতে হৃদযন্ত্রে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। বেশ কিছু সময় পর্যন্ত বুঝতে না পারলে বা চিকিৎসায় দেরি হলে হৃদযন্ত্রের কোষগুলোর একে একে মৃত্যু ঘটে। তাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন মানুষ।
অন্যদিকে পৃথিবীব্যাপী সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে হৃদরোগে, যার অন্যতম প্রধান কারণ তামাক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিবছর বিশ্বে ১৯ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত হৃদরোগে মারা যান। বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে মারা যায়, যার ২৪ শতাংশের জন্য দায়ী তামাক।
গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিজ স্টাডি (জিবিডি) ২০১৯ এর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের প্রধান চারটি কারণের একটি তামাক। বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৩৫.৩ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লাখ) তামাক ব্যবহার করছে যা হৃদরোগ পরিস্থিতিকে আরো উদ্বেগজনক করে তুলছে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশোধনীর মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। খসড়া সংশোধনীতে সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ রাখার বিধান বিলুপ্ত করা, বিক্রয়স্থলে তামাকজাত দ্রব্য বা প্যাকেট প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা, তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করাসহ সব ধরনের খুচরা বা খোলা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিষিদ্ধ করাসহ বেশ কিছু প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে খসড়াটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে অংশীজনের মতামত গ্রহণ করা হয়েছে।