নারীদের নিয়মিত ও সময়মতো পিরিয়ড (মাসিক) হওয়াটাই স্বাভাবিক। অনিয়মিত মাসিক নারী স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়। অনিয়মিত মাসিক বা একেবারেই পিরিয়ড বন্ধ হওয়া মূলত পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের (POS) জন্য হয়ে থাকে।
তবে আরও অনেক কারণ আছে, যার জন্য পিরিয়ড নিয়মিত হয় না। এই সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
অনিয়মিত মাসিক কী?
প্রতি চন্দ্রমাস পর পর হরমোনের প্রভাবে পরিণত মেয়েদের জরায়ু চক্রাকারে যে পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় এবং রক্ত ও জরায়ু নিঃসৃত অংশ যোনিপথে বের হয়ে আসে তাকেই ঋতুচক্র বলে।
মাসিক চলাকালীন পেটব্যথা, পিঠব্যথা, বমি বমি ভাব হতে পারে। আর যাদের এই মাসিক ঋতুচক্র প্রতি মাসে হয় না অথবা দুই মাস আবার কখনও চার মাস পর পর হয়, তখন তাকে অনিয়মিত পিরিয়ড বলে। অনিয়মিত পিরিয়ড নারীদের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে।
মাসিক অনিয়মিত কেন হয়?
অনিয়মিত পিরিয়ড বা একেবারেই পিরিয়ড বন্ধ হওয়া পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের (POS) জন্য হয়ে থাকে। তবে আরও অনেক কারণ আছে, যার জন্য পিরিয়ড নিয়মিত হয় না। যেমন- অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করা, ক্যাফেইন জাতীয় খাবার গ্রহণ যেমন অতিরিক্ত কফি পান করা, স্ট্রেস নেওয়া, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করা, অপরিচ্ছন্ন থাকা, মদ্যপান বা ধূমপান করা ইত্যাদি।
টিনেজার ও মধ্যবয়সী নারীদের মধ্যে অনিয়মিত পিরিয়ডের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এর পেছনের কারণটি হলো হরমোন। আর লম্বা সময় স্ট্রেসে থাকলে অনেকেরই মাসিক দেরিতে হতে পারে।
এ ছাড়া একজন নারী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন, কিন্তু তা জানতেন না। এর পর নিজে থেকেই তার মিসক্যারিজ বা গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। এ ঘটনায় সাধারণ পিরিয়ডের তুলনায় কিছু দিন পর বেশি রক্তপাত হতে পারে, যাকে অনেকেই দেরিতে মাসিক হওয়া বলে ধরে নেন।
ওজন কম হলে সময়মতো পিরিয়ড নাও হতে পারে। এমনকি কিছু দিন বন্ধও থাকতে পারে। জরায়ুতে টিউমার ধরনের এক ধরনের বৃদ্ধি হলো ফাইব্রয়েডস। এগুলো পিরিয়ডের স্বাভাবিক চক্রকে বাধা দিতে পারে।
জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করা। যেমন- পিল, প্যাঁচ, ইনজেকশন, আইইউডি। এগুলো ব্যবহার করলে পিরিয়ড দেরিতে হওয়া বা পরিবর্তন হওয়াটা স্বাভাবিক।
মনোনিউক্লিওসিস, ঠাণ্ডা, সর্দি, গলার ইনফেকশন- এ ধরনের সমস্যায় পিরিয়ড দেরিতে হতে পারে। তবে বড় কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন থাইরয়েডের সমস্যা বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের কারণেও পিরিয়ড দেরিতে হতে দেখা যায়।
কী করবেন?
নিয়মিত মাসিক হলে শরীরের হরমোনাল ব্যালেন্স ঠিক থাকে। তবে অনিয়মিত পিরিয়ড বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই এ বিষয়ে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
লেখক: গাইনি কনসালট্যান্ট,সেন্ট্রাল হাসপাতাল লিমিটেড।