[একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জীববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্র বইয়ের চতুর্থ অধ্যায়ে ওপেন হার্ট সার্জারির কথা উল্লেখ আছে]
শল্য চিকিৎসক যখন রোগীর বুক কেটে উন্মুক্ত করে হৃপিণ্ডে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করেন তখন সে প্রক্রিয়াকে ওপেন হার্ট সার্জারি বলে। এটি একটি বড় শল্য চিকিৎসামূলক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে হৃপিণ্ডসংক্রান্ত অনেক জটিল সমস্যা, হার্টের ব্লকসহ নানা সমস্যা থেকে রোগমুক্তির উদ্দেশ্যে করা হয়। অন্য সব চিকিৎসার পরও যদি হৃপিণ্ডে বড় ধরনের সমস্যা থাকে, তাহলে ওপেন হার্ট সার্জারি ছাড়া উপায় থাকে না।
একজন কার্ডিওভাস্কুলার শল্য চিকিৎসকের অধীনে একটি শল্য চিকিৎসক দল ওপেন হার্ট সার্জারির মতো জটিল অস্ত্রোপচার পরিচালনা করেন।
সার্জারির শুরুতে চিকিৎসকের নির্দেশে সাধারণ অ্যানেসথেসিয়া কিংবা স্নায়ুবন্ধক অ্যানেসথেসিয়া প্রয়োগ করা হয়। সার্জারি শুরু হয় বুক কেটে বড়সড় গর্ত সৃষ্টির মাধ্যমে। তা না হলে রোগীর ভেতরটা ভালোমতো দেখা যায় না। অন-পাম্প সার্জারি হলে ওষুধ প্রয়োগে হৃৎস্পন্দন বন্ধ করে দিয়ে ফুসফুস মেশিনের সাহায্যে পাম্প করে সারা দেহে রক্তের সরবরাহ অব্যাহত রাখা হয়।
সার্জারি শেষে মেশিন খুলে নেওয়া হয়।১৯৫৩ সালে ডাক্তার জন হেয়শাম গিব্বন ফিলাডেলফিয়ার জেফারসন মেডিক্যাল স্কুলে সর্বপ্রথম সফল এক্সট্রাকোরপরিয়াল সার্কুলেশন অপারেশন সম্পন্ন করেন। ১৯৫৪ সালে ডাক্তার লিল্লেহাই নিয়ন্ত্রিত ক্রস প্রচলন কৌশল ব্যবহার করে অনেকগুলো অস্ত্রোপচারে সফল হোন। ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৬০ সালে ডাক্তার নাযিহ যুহদি ওকলাহোমা শহরের মার্সি হাসপাতালে টেরি জিন তুষার নামের সাত বছর বয়সী এক বাচ্চার শরীরে সর্বপ্রথম হেমুডিলেশন মেশিন ব্যবহার করে সফল ওপেন হার্ট সার্জারি করেন।
৩ ডিসেম্বর ১৯৬৭ সালে ক্রিস্টিন বার্নার্ড শুম্বায় সর্বপ্রথম কেপটাউনের গ্রুউট সছুউর হাসপাতালে ওপেন হার্ট সার্জারির মাধ্যমে একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের শরীরে হৃপিণ্ড স্থানান্তর করেন।ওপেন হার্ট সার্জারি প্রধানত অন-পাম্প সার্জারি, অফ-পাম্প সার্জারি বা বিটিং হার্ট এবং রোবট-সহযোগী সার্জারি—এই তিন উপায়ে করা হয়। তবে বর্তমানে আধুনিক চিকিৎসার কল্যাণে ওপেন হার্ট সার্জারি ছাড়াই বুকে একটি ছোট ছিদ্র করেই সফলভাবে অস্ত্রোপচার সম্ভব হচ্ছে।
দৈনিক বিবর্তন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।