বাংলাদেশে কোন ব্যবসা করতে চাইলে, বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে ব্যবসার অনুমতি পত্র নিতে হয় এই অনুমতি পত্রটিকেই ট্রেড লাইসেন্স বলে৷
আপনার যদি কোন ছোট কিংবা বড়, নতুন বা পুরাতন ব্যবসা থাকে তাহলে, যতদিন পর্যন্ত ব্যবসা’র জন্য ট্রেড লাইসেন্স না করবেন, ততদিন পর্যন্ত স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারের কাছে আপনার ব্যবসা অবৈধ এবং এজন্য আপনার জেল-জরিমানাও হতে পারে৷ তাই, ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম জেনে আজই আবেদন করুন।
ট্রেড লাইসেন্স আবেদন করার যোগ্যতা
- ট্রেড লাইসেন্স লাইসেন্স আবেদন করার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকতে হবে৷
- নারী কিংবা পুরুষ উভয়ই ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবে।
- ট্রেড লাইসেন্স পেতে সর্বনিম্ন ১৮ বছর বয়স হতে হবে।
ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম | How to get Trade License
স্থানীয় সরকারের নিকট থেকে ট্রেড লাইসেন্স করতে হয়৷ ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য নিম্নোক্ত নিয়ম অনুসরণ করুন:
- স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে আবেদন ফরম নিন
- আবেদন ফরম এর সাথে সকল কাগজপত্র জমা দিন
- লাইসেন্স প্রদানকারী অফিস থেকে কাগজপত্র গুলো যাচাই-বাছাই করা হবে
- স্থানীয় সরকারের কাছ থেকে সুপারভাইজার আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে যাবেন।
- সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নির্ধারিত ফি দেওয়ার পরে তারা আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে দিবে৷
আপনার ব্যবসা যদি সিটি কর্পোরেশন এলাকায় হয়ে থাকে তাহলে অনলাইন থেকেই ট্রেড লাইসেন্স ফরম ডাউনলোড করে ঘরে বসে পূরণ করে নিয়ে যেতে পারেন।
যেসব অফিসে ট্রেড লাইসেন্স আবেদন করা যায়:
- উপজেলা কিংবা জেলা পরিষদ
- সিটি কর্পোরেশন
- পৌরসভা
- ইউনিয়ন পরিষদ
- অনলাইন (ই-ট্রেড লাইসেন্স)
আপনি যে জায়গায় ব্যবসা শুরু করতে চান, সেই জায়গাটি যে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার আওতাধীন, সেখানে যোগাযোগ করে ট্রেড লাইসেন্স করতে হবে।
ট্রেড লাইসেন্স করার প্রয়োজনীয় কাগজ
৩ ধরনের ট্রেড লাইসেন্স আছে, যথা:
- সাধারণ ট্রেড লাইসেন্স
- ফ্যাক্টরি বা শিল্প প্রতিষ্ঠান এর জন্য ট্রেড লাইসেন্স
- ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন
এই ৩ ধরনের ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য কাগজ পত্র ভিন্ন ধরনের হয়৷
সাধারন ব্যবসা’র ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র
১. জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি
২. তিন কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি
৩. অগ্নিনির্বাপণ প্রস্তুতি সংক্রান্ত প্রত্যয়ন পত্র
৪. মেমোরান্ডাম অব আর্টিকেল অথবা সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন (কোম্পানির ব্যবসার ক্ষেত্রে)
৫. নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে পার্টনারশিপ এর অঙ্গিকার নমা জমা দিতে হবে (ব্যবসা যদি যৌথভাবে পরিচালিত হয়)
৬. ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর স্থান নিজের হলে কর্পোরেশন এর হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ
৭. ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর স্থান ভাড়ায় হলে ভাড়ার চুক্তিপত্র ও রশিদ এর ফটোকপি
ফ্যাক্টরি’র ট্রেড লাইসেন্স করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ
ফ্যাক্টরির ট্রেড লাইসেন্স করতে হলে আপনাকে সাধারন ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য যেসব কাগজ জমা দিতে হয় সেগুলো জমা দিতে হবে৷ তার পাশাপাশি ফ্যাক্টরির জন্য এক্সট্রা কিছু কাগজ জমা দিতে হয়৷
আপনি যে বিষয়ের উপর ব্যবসা করতে চান সে বিষয়ের উপর আপনার কিছু কাগজ জমা দিতে হবে। যেমন অস্ত্রের ব্যবসা করতে হলে অস্ত্রের লাইসেন্স থাকতে হবে৷ হসপিটাল দিতে গেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এর অনুমোদন নিতে হবে।
ই-ট্রেড লাইসেন্স করার নিয়ম
এখন অনলাইনেও ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করা যায়, যাকে ই-ট্রেড লাইসেন্স বলে৷ অনলাইনেদেশের সকল স্থান থেকে ট্রেড লাইসেন্স সার্ভিস শুরু হয়নি। শুধু ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকার ব্যবসায়ীরা অনলাইনে ট্রেড লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ই-ট্রেড লাইসেন্স করতে চাইলে প্রথমে ই ট্রেড লাইসেন্স ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে লগইন করুন।
লগইন করার পর নতুন আবেদন অপশন দেখতে পারবেন। নতুন আবেদন লিঙ্কে ক্লিক করার পর আপনার ব্যবসায়ের তথ্য দিয়ে আবেদনটি জমা দিন।
পরবর্তীতে ঘরে বসেই ওয়েবসাইটে লগইন করে ট্রেড লাইসেন্স আবেদনের অবস্থা চেক ও নবায়ন করতে পারবেন।
ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করার নিয়ম
- পুরাতন ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে যেতে হবে
- ট্রেড লাইসেন্স এর ট্যাক্স জমা দিয়ে নবায়নকৃত ট্রেড লাইসেন্স বুঝে নিন
যে অফিস থেকে ট্রেড লাইসেন্স করেছেন সাধারণত সেই অফিস থেকেই ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে হয়। ট্রেড লাইসেন্স প্রতি বছর নবায়ন করতে হয়৷
ট্রেড লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে | Trade license Fee
স্থান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এর ভিন্নতার উপর ট্রেড লাইসেন্স এর ফি ২০০ টাকা থেকে ২৬০০০ টাকা হয়ে থাকে।