জানেন কি, আপনার ফুসফুস দিনে ১৭ হাজার থেকে ৩০ হাজার বার শ্বাসক্রিয়া করে? এবার নিন একটি গভীর শ্বাস আর জেনে নিন শ্বসনতন্ত্রের কাজকর্ম।
মায়ের গর্ভ থেকে বেরিয়ে শ্বাস নিয়ে শুরু হয় জীবন। শ্বাসক্রিয়া আমাদের স্বাভাবিক ক্রিয়া। ফুসফুস বাতাস থেকে নেয় অক্সিজেন আর ছেড়ে দেয় কার্বন ডাই-অক্সাইড। এভাবে আমরা বাঁচি।
শ্বাস নিলাম
প্রথম পর্যায় হলো শ্বাস গ্রহণ বা প্রশ্বাস। নাক আর মুখ দিয়ে বাতাস ঢুকে গলার পেছন দিয়ে শ্বাসনালি হয়ে চলে যায় ফুসফুসে। সেখান থেকে অক্সিজেন যায় রক্তস্রোতে। কী করে ফুসফুস থেকে অক্সিজেন যায় রক্তে?
ফুসফুস চমৎকার এক দেহযন্ত্র। অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে একে দেখা যায় এক বিশাল স্পঞ্জের মতো। ক্লোম নালি (ব্রঙ্কাই) শাখায়িত হয় ক্লোম নালিকায় (ব্রঙ্কিওল)। এই নালিকার শেষে আছে বায়ুকোষ বা এলভিওলাই। মানুষের শরীরে থাকে ৬০০ মিলিয়ন এলভিওলাই। এর শরীর ঘিরে আছে খুব ক্ষুদ্র কৌশিকা বা কেপিলারি।
অক্সিজেন এই এলভিওলাই থেকে চলে আসে কৌশিকায়। এরপর রক্তস্রোতে মেশে। তারপর রক্তের অক্সিজেন আর অন্যান্য উপকরণ যায় দেহের প্রতিটি কোষে।
শ্বাস ছেড়ে দিই
- এটি নিশ্বাস। দ্বিতীয় পর্যায় হলো শ্বাস বর্জন বা শ্বাস ত্যাগ।
- শ্বাস ছাড়ার সময় দেহের যে বর্জ্য তৈরি হয়, কার্বন ডাই-অক্সাইড তাকে ছেড়ে দেয়।
- রক্ত থেকে এই গ্যাস যায় কৌশিকায়। এরপর এলভিওলাই হয়ে ফুসফুস হয়ে বাইরে।
ফুসফুসের স্বাস্থ্য
ফুসফুস মুখোমুখি হয় বায়ুদূষণের। বায়ুদূষণ হয় সিগারেটের ধোঁয়া, মল, লোম, ভাইরাস, জীবাণু ইত্যাদির মাধ্যমে।
সুরক্ষার জন্য ফুসফুসের আছে নিজের সুরক্ষাব্যবস্থা। এর দেয়ালে আছে সূক্ষ্ম রোম (সিলিয়া)। এগুলো নাক দিয়ে যে দূষিত বস্তু ঢোকে, তাদের ফিল্টার করে। শ্লেষ্মাও আটকে দেয় অনেক
দূষিত পদার্থ।
ফুসফুস সুস্থ রাখার ৮টি উপায়
- ধূমপান করা যাবে না
- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং প্রচুর পানি পান করা
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
- বারবার হাত ধোয়া
- প্রতিবছর ফ্লু শট নেওয়া
- যত দূর সম্ভব অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মুখোমুখি না হওয়া
- বায়ুপথ দূষিত করে এমন দূষক, যেমন সিগারেটের ধোঁয়া, রাসায়নিক বস্তু, ছত্রাক, মোল্ড, ধুলাবালি ইত্যাদি থেকে দূরে থাকা
- বায়ুদূষণ বন্ধ করা। না পারলে বায়ুদূষণ থেকে রক্ষা পেতে মাস্ক ব্যবহার করা।
লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ