আমরা প্রায়সময়ই সহবাসের সুখের কথা বলি। কিন্তু সহবাসের পর ব্যথার অনুভবের কথা লজ্জায় বলতে চাইনা। ব্যথা কেনো হয় তারও কারণ জানি না অনেকে। আসুন জেনে নেই কোন কোন কারণে সহবাসের পর তলপেটে ব্যথা অনুভব হয়।আর তার প্রতিকার কি।
সহবাসের পর তলপেটে ব্যথা হতে পারে বিভিন্ন কারণে। এর মধ্যে কয়েকটি কারণ হল:
যোনিতে আঘাত: সহবাসের সময় যদি যোনিতে আঘাত লাগে, তাহলে তাতে ব্যথা হতে পারে। এই আঘাত হতে পারে যোনিদ্বারে, যোনিপথে, বা জরায়ুর মুখে।
যোনিতে সংক্রমণ: যোনিতে সংক্রমণ থাকলে তাতে ব্যথা হতে পারে। এই সংক্রমণ হতে পারে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, বা ছত্রাক দ্বারা।
ইউটেরাইন ফাইব্রয়েডস বা পলিপস: জরায়ুতে ফাইব্রয়েডস বা পলিপস থাকলে তাতে ব্যথা হতে পারে।
এন্ডোমেট্রিওসিস: এন্ডোমেট্রিওসিস হল একটি রোগ যেখানে জরায়ুর অভ্যন্তরের আবরণ অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও ছড়িয়ে পড়ে। এন্ডোমেট্রিওসিস হলে সহবাসের পর তলপেটে ব্যথা হতে পারে।
অ্যাডনেক্সাইটিস: অ্যাডনেক্সাইটিস হল একটি রোগ যেখানে ডিম্বাশয় বা ফ্যালোপিয়ান টিউব প্রদাহ হয়। অ্যাডনেক্সাইটিস হলে সহবাসের পর তলপেটে ব্যথা হতে পারে।
গর্ভপাতের পরে ব্যথা: গর্ভপাতের পরে তলপেটে ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যে কমে যায়।
সহবাসের পর তলপেটে ব্যথা হলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে:
ব্যথার তীব্রতা: ব্যথার তীব্রতা কতটুকু?
ব্যথার ধরন: ব্যথা কি তীক্ষ্ণ, ঝিঁঝিঁ ধরা, বা চাপ-মতো?
ব্যথা কোথায় অনুভূত হচ্ছে: ব্যথা কি তলপেটের মাঝখানে, বা একপাশে অনুভূত হচ্ছে?
ব্যথা কখন শুরু হয়: ব্যথা কি সহবাসের সময়, বা পরে শুরু হয়?
ব্যথা কতোক্ষণ স্থায়ী হয়: ব্যথা কি কয়েক মিনিটের মধ্যে কমে যায়, বা কয়েক ঘন্টা বা দিন স্থায়ী হয়?
এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে ব্যথার কারণ নির্ণয় করা সহজ হয়।
ব্যথা যদি তীব্র হয়, বা কয়েক দিনের মধ্যে কমে না যায়, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। ডাক্তার শারীরিক পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে ব্যথার কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসার পরামর্শ দেবেন।
ব্যথার কারণ অনুযায়ী চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে:
যোনিতে আঘাতের চিকিৎসা: যোনিতে আঘাতের চিকিৎসায় সাধারণত ব্যথানাশক ওষুধ এবং বরফ ব্যবহার করা হয়।
যোনিতে সংক্রমণের চিকিৎসা: যোনিতে সংক্রমণের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
ইউটেরাইন ফাইব্রয়েডস বা পলিপসের চিকিৎসা: ইউটেরাইন ফাইব্রয়েডস বা পলিপসের চিকিৎসায় সার্জারি, ঔষধ, বা লেজার থেরাপি ব্যবহার করা হয়।
এন্ডোমেট্রিওসিসের চিকিৎসা: এন্ডোমেট্রিওসিসের চিকিৎসায় ঔষধ, সার্জারি, বা হরমোন থেরাপি ব্যবহার করা হয়।
অ্যাডনেক্সাইটিসের চিকিৎসা: অ্যাডনেক্সাইটিসের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
গর্ভপাতের পরে ব্যথার চিকিৎসা: গর্ভপাতের পরে ব্যথার চিকিৎসায় সাধারণত ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
যদি ব্যথার কারণ যৌনবাহিত রোগ হয়, তাহলে যৌনসঙ্গীকেও পরীক্ষা ও চিকিৎসা করানো উচিত।