ফ্রিল্যান্সিং কি এবং কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইনে উপার্জন করবেন?
logo
ঢাকা, বুধবার, ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফ্রিল্যান্সিং কি এবং কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং করে অনলাইনে উপার্জন করবেন?

বনি আমিন
জুলাই ২৫, ২০২১ ১২:০২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ফ্রিল্যান্সিং কি ? ফ্রিল্যান্সিং শব্দটির ব্যাপক অর্থ থাকলেও আমাদের দেশে অনলাইনে বিভিন্ন প্রজেক্টে কাজ করে উপার্জন করাকেই ফ্রিল্যান্সিং বলে।

বর্তমান সময়ে আমাদের দেশে তরুণদের কাছে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়ের একটি হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। যদিও আমাদের দেশে এখনও এ বিষয়টি নতুন, কিন্তু এরই মধ্যে অনেকে ফ্রিল্যান্সিং এর মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্যকে সম্পূর্ণরূপে পরিবর্তন করতে সক্ষম হয়েছেন। পড়ালেখা শেষে বা পড়ালেখার সাথে সাথে ফ্রিল্যান্সিং এ গড়ে নিতে পারেন আপনার ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার। ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে মাল্টি বিলিয়ন ডলারের একটা বিশাল বাজার। উন্নত দেশগুলো কাজের মূল্য কমানোর জন্য আউটসোর্সিং করে থাকে। আমাদের পার্শবর্তী দেশ ভারত এবং পাকিস্তান সেই সুযোগটিকে খুবই ভালভাবে কাজে লাগিয়েছে। আমরাও যদি ফ্রিল্যান্সিং এর বিশাল বাজারের সামান্য অংশ কাজে লাগাতে পারি তাহলে এটি হতে পারে আমাদের অর্থনীতি মজবুত করার শক্ত হাতিয়ার।

গতানুগতিক চাকুরীর বাইরে নিজের ইচ্ছামত কাজ করার স্বাধীনতা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং। ইন্টারনেটের কল্যানে এখন আপনি খুব সহজেই একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন। এখানে একদিকে যেরকম রয়েছে যখন ইচ্ছা তখন কাজ করার স্বাধীনতা, তেমনি রয়েছে বিভিন্নধরনের কাজ বাছাই করার স্বাধীনতা। আয়ের দিক থেকেও অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং এ রয়েছে অভাবনীয় সম্ভাবনা। এখানে প্রতি মূহুর্তে নতুন নতুন কাজ আসছে। প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েবসাইট, গেম, 3D এনিমেশন, প্রোজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, সফ্টওয়্যার বাগ টেস্টিং, ডাটা এন্ট্রি – এর যেকোন এক বা একাধিক ক্ষেত্রে আপনি সফলভাবে নিজেকে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে তৈরি করে নিতে পারেন। তবে প্রথমদিকে আপনাকে একটু ধ্যর্য এবং কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে নিজেকে প্রস্তুত করে নিতে হবে। এই প্রতিবেদনটি তাই এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে আপনি একজন নতুন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে সফলভাবে প্রকাশ করতে পারেন।

ইন্টারনেটে অনেকগুলো জনপ্রিয় ওয়েবসাইট রয়েছে যারা ফ্রিল্যান্সিং সার্ভিস দেয় যাদেরকে বলা হয় ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস। এগুলো থেকে যেকোন একটিতে রেজিস্ট্রিশনের মাধ্যমে আপনি শুরু করতে পারেন। এসব ওয়েবসাইটে যারা কাজ জমা দেয় তাদেরকে বলা হয় Buyer বা Client এবং যারা এই কাজগুলো সম্পন্ন করে তাদেরকে বলা হয় freelancer বা Service Provider. একটি কাজের জন্য অসংখ্য ফ্রিল্যান্সরা Bid বা আবেদন করে এবং ওই কাজটি কত টাকায় সম্পন্ন করতে পারবে তা উল্লেখ করে। এদের মধ্য থেকে ক্লায়েন্ট যাকে ইচ্ছা তাকে নির্বাচন করতে পারে। সাধারণত পূর্ব কাজের অভিজ্ঞতা, টাকার পরিমাণ এবং বিড করার সময় ফ্রিল্যান্সরের মন্তব্য ফ্রিল্যান্সর নির্বাচন করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফ্রিল্যান্সর নির্বাচন করার পর ক্লায়েন্ট কাজের সম্পূর্ণ টাকা ওই সাইটগুলোতে জমা করে দেয়। এর মাধ্যমে কাজ শেষ হবার পর সাথে সাথে টাকা পাবার নিশ্চয়তা থাকে। পুরো সার্ভিসের জন্য ফ্রিল্যান্সরকে কাজের একটা নির্দিষ্ট অংশ ওই সাইটকে ফি বা কমিশন হিসেবে দিতে হয়। এই পরিমাণ ওয়েবসাইট এবং সার্ভিসভেদে ভিন্ন ভিন্ন (১০% থেকে ২০%)। কয়েকটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট হচ্ছে:

ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য যা প্রয়োজনঃ

  • ইংলিশে দক্ষতাঃ যেহেতু ফ্রিল্যান্সিং কাজের অধিকাংশ ক্লায়েন্টই বিদেশি। তাই সঠিকভাবে যোগাযোগের জন্য ভালো ইংলিশ জানা বাধ্যতামূলক।
  • ইন্টারনেটসহ ল্যাপটপ বা পিসি
  • কাজের দক্ষতাঃ আপনি যে ধরনের কাজ করতে চান, যেমন আর্টিকেল রাইটিং, ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি কাজের ভালো দক্ষতা প্রয়োজন। ফ্রিল্যান্সিং এ এখন অনেক প্রতিযোগীতা হওয়ায় ভালো দক্ষতার কোন বিকল্প নেই।
  • ধৈর্য্যঃ যে কোন ভালো কাজের মতো ফ্রিল্যান্সিং এ সাফল্যের জন্যও ধৈর্য্য এর দরকার আছে। শুরুর দিকে কাজ পাওয়ার ক্ষেত্রে একটু সময় লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে ধৈর্য্য ধরে চেষ্টা করে যাওয়ার কোন বিকল্প নেই।

কি ধরনের কাজ আপনি করবেন?

ফ্রিল্যান্সিং কাজের অনেক ক্ষেত্র আছে। আপনি আপনার পছন্দ, দক্ষতা এবং সুযোগ অনুযায়ী আপনার কাজের ক্ষেত্র বেছে নিবেন। তাই আমি আপনাকে স্পেশাল কোন ক্ষেত্র সাজেস্ট করাটা ভুল হবে।

তারপরেও আপনার বোঝার জন্য বলি।

আপনি যদি ক্রিয়েটিভ মনের মানুষ হয়ে থাকেন তাহলে আপনি ডিজাইন টাইপের কাজ করতে পারেন। এটা হতে পারে লোগো ডিজাইন, বিজনেস কার্ড ডিজাইন, ওয়েবসাইট ডিজাইন, অ্যাড ডিজাইন ইত্যাদি।

আপনি যদি ইংলিশ লেখায় দক্ষ হয়ে থাকেন তাহলে রাইটিং টাইপের কাজ করতে পারেন। এটা হতে পারে আর্টিকেল রাইটিং, ব্লগ রাইটিং, ওয়েবসাইট কন্টেন্ট রাইটিং ইত্যাদি।

আপনি যদি প্রোগ্রামিং পছন্দ করেন তাহলে পিএইচপি, জাভাস্ক্রিপ্ট, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি কাজ করতে পারেন।

আপনি যদি মানুষের সাথে কমিউনিকেশন করতে ভালো পারেন তাহলে মার্কেটিং বা কাস্টোমার সার্ভিস টাইপের কাজ করতে পারেন।

আর আপনার যদি বিশেষ কোন যোগ্যতা না থাকে তাহলে ডাটা এন্ট্রি বা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ টাইপের কাজ করতে পারেন। কিছু কাজের উদাহরণ হলো ইন্টারনেট থেকে খুঁজে খুঁজে কোন কিছুর লিস্ট করা, অডিও শুনে সেটা টাইপ করা, সোস্যাল মিডিয়ায় কোন কিছু পোস্ট করা ইত্যাদি।

কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন?

ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য আপনাকে নিচের ধাপগুলো অনুসরন করতে হবে।

 

ধাপ-১
=====

প্রথমে কোন ক্যাটাগরির কাজ করতে চান সেইটা ঠিক করুন। কাজের চাহিদা, রেট ইত্যাদি জানার জন্য উপরেল্লিখিত পদ্ধতি অনুসরন করুন।

 

ধাপ-২
=====

নিজেকে সেই কাজের জন্য প্রস্তুত করুন। ইন্টারনেট ঘেটে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল দেখে কাজ ভালোভাবে শিখে নিন।

পরিচিত কেউ সে ব্যাপারে এক্সপার্ট হলে তার সাহায্য নিন।

ফ্রিল্যান্সিং এ এখন অনেক প্রতিযোগীতা হওয়ায় ভালোভাবে দক্ষ হওয়ার কোন বিকল্প নেই।

 

ধাপ-৩
=====

আপনার কাজের একটি পোর্টফোলিও তৈরি করুন।

আপনি ডিজাইনার হলে বেশ কিছু সুন্দর ডিজাইন করে একটি ফ্রি ব্লগ তৈরি করে সেখানে আপ্লোড করুন।

রাইটার হলে কয়েকটি ভালোমানের আর্টিকেল লিখে পোস্ট করুন।

মোটকথা আপনার কাজের কিছু নমুনা ক্লায়েন্টকে দেখানোর জন্য প্রস্তুত করুন।

কারন আপনার যতোই দক্ষতা থাকুক না কেন, আপনি আপনার কাজের উদাহরণ না দেখালে কেউ বুঝবে না।

ভালো একটি পোর্টফোলিও আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা অনেকগুনে বাড়িয়ে দিবে।

ধাপ-৪
====

যে কোন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।

ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস হচ্ছে ওয়েবসাইট যেখানে ক্লায়েন্টরা জব পোস্ট করে।

সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস হচ্ছে https://www.upwork.com

এখানে অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পরে প্রোফাইলে সব তথ্য ঠিকভাবে পূরন করুন। কোন তথ্যই ফাঁকা রাখবেন না।

আপনার প্রোফাইলে সব তথ্য দিয়ে সেটাকে আকর্ষনীয় এবং বিশ্বাসযোগ্য করলে ক্লায়েন্টরা আপনাকে সহজে ট্রাস্ট করবে।

তবে মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত কোন কিছু দিবেন না।

অনলাইনে বিশ্বাস হচ্ছে সব কিছুর মূল্ভিত্তি। আপনার অতিরঞ্জিত বা মিথ্যা তথ্যের কারনে ট্রাস্ট হারালে সেটা ফেরত পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে।

ধাপ-৫
====

এবার আপনার পছন্দের ক্যাটাগরি ঘুরে ঘুরে আপনার পছন্দের জব খুঁজে বের করুন এবং প্রপোজাল সাবমিট করুন।

প্রথমদিকে টাকার পরিমান না চিন্তা করে কাজ এবং রেটিং কে গুরুত্ব দিন।

প্রয়োজনে একটা কাজ ক্লায়েন্টের বাজেটের অর্ধেক টাকায় করে দেওয়ার প্রস্তাব দিন।

কাজ ভালোভাবে শেষ করলে ক্লায়েন্ট আপনাকে ভালো রেটিং দিবে। এইটা আপনার ক্যারিয়ারে অনেক ইম্পরট্যান্ট একটা জিনিস।

আপনার প্রোফাইলে শেষ করা প্রোজেক্টের সংখ্যা বাড়লে এবং ভালো রেটিং থাকলে আপনার কাজ পাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়বে।

বোনাস ধাপ
========

আপনার পরিচিত কেউ যদি Upwork এ কাজ করে তাহলে তাকে অনুরোধ করে তার কাছ থেকে একটি অল্প বাজেটের কাজ নিন।

কাজ শেষ করে সে রেটিং দিলে আপনার প্রোফাইলে একটা কমপ্লিট প্রোজেক্ট এবং রেটিং যোগ হবে।

এটা আপনাকে পরবর্তী প্রোজেক্ট পেতে সাহায্য করবে।

 

মার্কেটপ্লেস সমূহ

 

ফ্রিল্যান্সার

www.freelancer.com ফ্রীল্যান্সিং এর জন্য ভাল একটি মার্কেটপ্লেস । অনেক বাংলাদেশী ফ্রীল্যান্সাররা এখানে দীর্ঘদিন থেকে সফলতার সাথে কাজ করছে। এই মার্কেটপ্লেসটি বাংলাদেশেও তাদের কার্যক্রম প্রসারের অংশ হিসেবে www.freelancer.com.bd চালু করে। এখানে ফিল্যান্সিং করার পাশাপাশি বিভিন্ন কন্টেস্টে অনংগ্রহন করেও টাকা উপার্জন করা যায়। ইতিমধ্যে অনেক বাংলাদেশী ফ্রীল্যান্সার বিভিন্ন কন্টেস্টে বিজয়ী হয়ে ভাল মাানের প্রাইজমানি লাভ করেছে।

 

আপওয়ার্ক 

www.upwork.com ফ্রীল্যান্সিং এর জন্য জনপ্রিয় একটি মার্কেটপ্লেস । ২০০৩ সালে চালু হওয়া এই ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেসটি এতদিন পর্যন্ত ওডেস্ক Odesk.com নামে পরিচিত ছিল। ২০০৫ সালে অন্য অরেকটি জনপ্রিয় ফ্রীল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস ইল্যান্স Elance.com এর সাথে একত্রিত হয়ে আপওয়ার্ক নাম ধারণ করে। এখানে একজন ফ্রিল্যান্সার নির্ধারিত মূল্যে বা ঘন্টা হিসেবে করতে পারে। ক্লায়েন্ট আপনাকে সম্পূর্ণ প্রজেক্টের জন্য বা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য (কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস এর জন্য) নিয়োগ করতে পারে। রেজিষ্ট্রেশন করার সময় প্রতি ঘন্টায় আপনার কাজের মূল্য উল্লেখ করে দিতে হবে। কাজ শেষে আপনি যত ঘন্টা কাজ করেছেন ঠিক ততটুকু পরিমাণ টাকা ক্লায়েন্ট আপনাকে প্রদান করবে। কাজ করার মূহুর্তে আপনার ব্যয়কৃত সময় নির্ধারণ করার জন্য আপনাকে একটি সফ্টওয়্যার চালু রাখতে হবে, যা একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর আপনার ডেস্কটপের স্ক্রিসশট এবং অন্যান্য তথ্য ক্লায়েন্টের কাছে পাঠাবে। ফলে ওই সময় আপনি কাজ করছেন কিনা ক্লায়েন্ট সহজেই নির্ধারণ করতে পারবে। তবে অন্য সাইটগুলোর মত এখানেও অনেক কাজ পাওয়া যায় যেখানে সম্পূর্ণ প্রজেক্টের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করা হয়। এই সাইটে প্রতি কাজের জন্য ১০% টাকা কমিশন হিসেবে প্রদান করতে হয়। যেহেতু বেশিরভাগ কাজ ঘন্টা হিসেবে প্রদান করা হয় তাই অন্য সাইটগুলোর তুলনায় এই সাইট থেকে অনেক বেশি পরিমাণে আয় করা সম্ভব।

 

পিপল পার আওয়ার 

পিপল পার আওয়ার বা “পিপিএইচ” (PeoplePerHour.com) হচ্ছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস। প্রচলিত অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেগুলো ভিন্ন ভিন্ন কাজ আউটসোর্স বা ফ্রীল্যান্সিং করবার জন্য সুযোগ দিয়ে থাকে তাদের মতোই একটি স্কিল বিক্রি করবার মার্কেটপ্লেস।

পিপিএইচ একটি অনলাইন ফ্রীল্যান্স মার্কেট প্লেস,আট দশটি মার্কেট প্লেসের মতো এখানেও কাজের আদান প্রদান হয়,তবে মৌলিক কাঠামো এক হলেও বেশ কিছু ফিচার আছে পিপিএইচের যা কিনা অন্য মার্কেটপ্লেসের থেকে ভিন্ন,একটু আলাদা আর আকর্ষনীয়।

আরেক ভাষায় পিপিএইচ হচ্ছে একটি ক্রাউডসোর্সিং প্লাটফর্ম অর্থাৎ প্রফেশনাল অফিসের সরনাপন্ন না হয়ে যদি কোনো ব্যাবসায়ী বা ক্রেতা সুনির্দিষ্ট কোনো সার্ভিস বা কাজ অনলাইন কমিউনিটি,এই ক্ষেত্রে ফ্রীল্যান্সার বা আউটসোর্সারদের কাছ থেকে নিলাম করে কিনে নেয় তবে তাকে ক্রাউডসোর্স বলা যেতে পারে, যার প্রকৃষ্ট উদাহরন পিপিএইচ।

এখানে কন্ট্রাক্টর তথা কাজ যিনি দিতে চাইছেন বায়ার হিসেবে সেই জব পোস্ট করতে পারেন অনায়াসেই, আবার যিনি কারিগর তথা কাজ আউটসোর্স করবেন তিনিও পারেন সেলার হিসেবে তার দক্ষতা বিক্রি করতে। একই সাথে একজন কাজ কিনতে পারবেন,আবার তা বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন করতে পারবেন,যেখান থেকে হাজার হাজার বায়ার বা ক্লায়েন্ট পছন্দসই কাজ বেছে নিতে সক্ষম হবেন।

অনলাইন মার্কেটপ্লেসের সংখ্যা দিনে দিনে বেড়ে চলেছে, তবে বিশ্বব্যাপি সমাদ্রিত হতে বেশ কিছু বৈশিষ্ঠের প্রয়োজন হয় প্রতিটি মার্কেটপ্লেসের, যেমন, গ্রহনযোগ্যতা, কাজের সুযোগ, প্রতিযোগিতামূলক ভারসাম্য, অর্থকরি উত্তলনের সুব্যাবস্থা ইত্যাদি।

পিপিএইচ খুব বেশিদিন হয় নি তাদের যাত্রা শুরু করেছে, ২০০৭ এ জিনিওস ত্রিসিভালু ও সিমস কিতারেস সম্মিলিতভাবে চালু করে ওয়েব-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি। শাখা রয়েছে লন্ডন আর নিউইয়র্ক শহরে।এই মুহুর্তে পিপিএইচে অ্যাক্টিভ ইউজারের সংখ্যা রয়েছে প্রায় আড়াই লক্ষ, তন্মধ্যে এক লাখ আশি হাজার ফ্রীল্যান্সার এবং সত্তর হাজার ক্লায়েন্ট বা বায়ার।বেশিরভাগ ক্লায়েন্ট বা বায়ারেরা ফুল টাইম প্রফেশনাল কোম্পানির বদলে প্রাধান্য দিয়ে থাকে ক্ষুদ্র উদ্যোগে গড়ে ওঠা একক ফ্রীল্যান্সারদের। আর এই কারনেই পিপিএইচে কোম্পানি বহির্ভুত স্বাধীন ফ্রীল্যান্সারের চাহিদা প্রচুর।

 

ফাইবার 

ফাইভার (www.fiverr.com) হচ্ছে দ্রুত জনপ্রিয় হওয়া একটি আন্তর্জাতিক অনলাইন মার্কেটপ্লেস যেখানে ফ্রিল্যান্সাররা (সাধারণত সেলার হিসেবে অভিহিত) তাদের কর্মপরিধি ও দক্ষতা সাপেক্ষে বায়ারদের জন্য উপযোগি সার্ভিসের বিভিন্ন প্যাকেজ তৈরি করে তা বিক্রির জন্য পসরা সাজিয়ে বসেন। ফাইভারে এরকরম এক বা একাধিক প্যাকেজ মিলে তৈরি সার্ভিসগুলো গিগ নামে পরিচিত যার মূল্য ৫ ডলার থেকে শুরু করে ৫০০ ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। উল্লেখ্য, প্রতি ৫ ডলার মূল্যের গিগ বিক্রিতে ফাইভার সেলারকে ১ ডলার চার্জ করে; অর্থাৎ যেকোনো পরিমান সেলের ২০% কাটা গিয়ে ৮০% রেভিনিউ সেলারের অ্যাকাউন্টে জমা হয়। যাই হোক, বর্তমানে ফাইভারে বিভিন্ন সার্ভিসের উপর ৩০ লক্ষেরও অধিক গিগ অফার রয়েছে। Shai Wininger  এবং  Micha Kaufman কর্তৃক ২০০৯ সালে ফাইভার প্রতিষ্ঠিত হয়, যার হেডকোয়ার্টার ইসরাইলের তেল-আবিব এ অবস্থিত।

 

গুরু 

ফ্রিল্যান্সিং কিগুরু (www.guru.com) জনপ্রিয় একটি ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস যেখানে ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক্স ডিজাইন, এসইও, এফিলিয়েট মার্কেটিং, এন্ড্রয়েড এপস ডেভলাপমেন্ট, সফ্টওয়্যার ডেভলাপমেন্ট, আর্টিকেল রাইটিং সহ আরও অনেক ধরনের ফ্রিল্যান্স কাজ পাওয়া যায়।

 

 

 

 

নাইন্টিনাইন ডিজাইনস

99Designs একটি জনপ্রিয় ডিজাইন কম্পিটিশন বেইজড ফ্রীল্যান্সিং মার্কেটপ্লেইস যেখানে একজন ব্যাক্তি তার graphics design এর মননশীলতা কে কাজে লাগিয়ে একটি ভাল আয় করতে পারেন। এ সাইটটিতে কাজ পাবার জন্য কোন বিড করতে হয় না। সাধারণত এখানে লোগো, বিজনেস কার্ড তৈরীর উপর শতশত কাজ পাওয়া যায় এবং তার মুল্য ৳১০০ ৳২০০০ ৳৩০০০ ও হয়। কাজের বিবরণ ও আইডিয়া  দেয়া থাকে তাই সহজেই কাজটি করা যায়।

 

 

 

জুমল্যান্সার 

এই সাইটে শুধুমাত্র Joomla এর কাজ পাওয়া যায়। Joomla হচ্ছে একটি ওপেনসোর্স কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। যারা Joomla তে পারদর্শী তারা এই সাইটে বিড করে দেখতে পারেন। এখানে প্রায় ৫৫০০ ফ্রিল্যান্সার রেজিস্ট্রেশন করেছে আর প্রতিদিন প্রায় ১৫০ টি কাজ পাওয়া যায়। এই সাইটে কমিশন হিসেবে প্রতিটি কাজের ১০% টাকা কোডারকে পরিশোধ করতে হবে। এই সাইটেও আপনি গোল্ড মেম্বার হতে পারবেন। গোল্ড মেম্বার হতে হলে আপনাকে প্রতি মাসে ৫০ ডলার প্রদান করতে হবে।

দৈনিক বিবর্তন এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।